বিমানবন্দরে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে হবে ॥ প্রধানমন্ত্রী- শাহজালালে আপগ্রেডেশন কাজের উদ্বোধন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভাবমূর্তি আরও বাড়াতে বিমানবন্দরে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সংশি¬ষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানবন্দরে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
’ তিনি মঙ্গলবার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের আপগ্রেডেশন কাজের উদ্বোধনকালে এ নির্দেশ দেন। খবর বাসসর।
বিমানবন্দরকে একটি দেশের আয়না হিসেবে অভিহিত করে শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশীরা এই আয়না দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে এবং বিমানবন্দরের মাধ্যমে এদেশ সম্পর্কে তাদের মনে সম্যক ধারণার সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, সার্বিক উন্নয়ন, সেবার মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। এই ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে এবং আরও বিনিয়োগ আসবে। পাশাপাশি পর্যটকের সংখ্যাও বাড়বে। ভৌগোলিক অবস্থানের সুবাদে বাংলাদেশের গুরুত্বের কথা উল্লে¬খ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এটি (ভৌগোলিক অবস্থান) যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ পূর্ব ও পশ্চিমের সেতুবন্ধনে পরিণত হবে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এই সুযোগের অবশ্যই সদ্ব্যবহার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যাত্রীদের জন্য সেবার মান বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বিশেষ বাহিনী গঠন এবং তাদের প্রশিক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিমানবন্দরগুলোতে পর্যাপ্ত ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা থাকলে দেশ বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে। এই খাতের ওপর নির্ভর করছে আমদানি-রফতানি ও পর্যটনসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন। টেক্সিওয়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিমানবন্দরের মান আরও বাড়বে উল্লেখ করে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন যে, ‘আমরা বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিরাপদ ও মানসম্পন্ন আকাশ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচী নিয়েছি। এর ফলে আকাশ পথে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে যাত্রী পরিবহনও বেড়েছে।
তিনি বলেন, বিগত ৪ বছরে আকাশপথে যাত্রী পরিবহন প্রায় ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে ৪৩ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছে। ২০১২ সালে বিমান যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫২ লাখ। এসব অর্জন আগামী বছরগুলোতে আঞ্চলিক ও বহির্বিশ্বে সিভিল এভিয়েশন খাতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মোহাম্মদ ফারুক খান, একই মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারপার্সন এয়ার ভাইস মার্শাল মাহমুদ হোসেন ও ডেনমার্কেন রাষ্ট্রদূত সভেন্ড ওলিং অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী সুইচ টিপে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন।
বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, এই প্রকল্পে ৫৩০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরটির আধুনিকায়ন ও নিরাপদ উড্ডয়ন ও অবতরণ ব্যবস্থা জোরদার করা। প্রকল্পের মোট অর্থের মধ্যে ৪৪৫ কোটি টাকা দেবে ডেনমার্ক সরকার। ২১ মাসে এর কাজ শেষ হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিমানবন্দরের ট্যাক্সিওয়ে ক্ষমতা বাড়বে এবং ট্যাক্সিওয়েটির ‘ক্যাটাগরি কোড লেটার’ ‘ই’ থেকে ‘ডি’তে উন্নীত হবে।

No comments

Powered by Blogger.