রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ বহাল রেখে বাহাত্তরে ফেরা যাবে না- নির্মূল কমিটি নেতারা বললেন আইনমন্ত্রী বক্তব্যে গোঁজামিল দিতে চাইছেন

 নির্মূল কমিটি নেতারা বলেছেন, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ঘাতকদের প্রতিষ্ঠিত করতে জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংবিধান সংশোধন করেছিলেন।
যার সুফল ভোগ করেছে বিএনপি, জামায়াতসহ স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। তাই '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। না ফিরলে জাতির অসত্মিত্ব থাকবে না। দেশ আবারও পিছিয়ে যাবে। কোনক্রমেই নিমর্ূল করা যাবে না মৌলবাদ। এ ব্যাপারে সরকারী ও বিরোধী দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংবিধান নিয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য গোঁজামিল দেয়ার চেষ্টা। তিনি এভাবে মৌলবাদীদের মন জয় করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিলস্নাহ বহাল রেখে '৭২-এর সংবিধানে ফেরা যাবে না। মুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমীদের দাবি পূরণ না হলে সরকারের পায়ের নিচে মাটি থাকবে না। তাই দ্রম্নত '৭২-এর সংবিধান কার্যকর করম্নন। নইলে আন্দোলন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত "৫ম ও ৮ম সংশোধনীর কলঙ্কমুক্ত-'৭২-এর সংবিধান চাই" শীর্ষক আলোচনাসভায় বিশিষ্টজনরা এসব কথা বলেন। সোমবার রাজধানীর বিলিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞ, বিচারপতি, মানবাধিকার নেত্রী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা।
তাঁরা বলেছেন, ধর্ম থেকে রাষ্ট্রকে পৃথক করার বিকল্প নেই। '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যেতে যারা বিরোধিতা করবে তাদের লাঠি দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে জামায়াত এখন বেপরোয়া। তারা আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে জামায়াতসহ ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তাঁরা।
সভাপতির বক্তব্যে বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেন, '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যেতে যারা বিরোধিতা করবে তাদের লাঠি দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। মানুষকে ধোঁকা দিতে অসৎ ব্যক্তিরা সংবিধানে ধর্মকে যুক্ত করেছে। ধর্মের লেবাসে তারা রাজনীতি চালাচ্ছে। নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায় না হলেও আমাদের '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম বলেন, সংবিধানে ধর্মকে যোগ করে মানুষকে ধোঁকা দেয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। '৭২-এর সংবিধানে না ফিরতে পারলে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থামবে না। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিলস্নাহ বহাল রেখে '৭২-এর সংবিধানে ফেরা যাবে না। তাহলে দেশ পিছিয়ে যাবে। মৌলবাদ নিমর্ূল হবে না। অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ৩৮ বছরে ১৪ বার সংবিধানের সংশোধনী আনা হয়েছে। তাহলে ৫ম ও ৮ম সংশোধনী নিয়ে এত বিতর্ক কেন? এই দু'টি সংশোধনী সংবিধানের মূল ভিত্তিকে দুর্বল করে দিয়েছিল। তিনি বলেন, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হলেও তাদের ১০ লাখ কর্মী সমর্থক বসে থাকবে না। বিষয়টি সরকারের চিনত্মায় রাখতে হবে। জামায়াতকে প্রতিরোধ করতে হলে তৃণমূল নিয়ে চিনত্মা করতে হবে। সরকারকে বাধ্য করতে হবে '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যেতে ও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে। সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, বাংলাদেশকে পাকিসত্মান বানাতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। আমরা ধর্মের নামে রাজনীতি চাই না। ধর্মের নামে রাজনীতির কারণে যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয়। সরকারীভাবে জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে হবে। '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া নিয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য গোঁজামিল। তিনি বলেন, মৌলবাদীদের সঙ্গে আপোস করে কাজ হবে না। আইনমন্ত্রী মোলস্নাদের তোয়াজ করে কাজ করতে পারবেন না। জামায়াত গোষ্ঠীর যে দাবি জানানোর কথা আইনমন্ত্রী আগ বাড়িয়ে তা বলছেন। সভায় বক্তব্য রাখেন পাকিসত্মান সুপ্রীমকোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মুজিবুর রহমান, এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.