বিএনপি কি এখনই আন্দোলনে নামবে, নির্দেশ দেবেন তারেক

 সরকারের বিরম্নদ্ধে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এখনই রাজপথে আন্দোলনে নামবে কিনা তা নির্ভর করছে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর।
লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের দিক নিদের্শনা নিয়ে এসেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর। চিকিৎসার জন্য তারেক লন্ডনে অবস্থান করলেও তাঁর নির্দেশ অনুযায়ীই চলছে বিএনপি। এদিকে সংসদ থেকে ওয়াক আউট করে সরকারের বিরম্নদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে রাজপথে নামুক বিএনপি সেটাই চায় শরীক দল জামায়াত। দশ মাস পর বিএনপি সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন ইসু্যতে সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেও আবার অধিবেশনে ফিরে যাচ্ছেন বিরোধী দলের সদস্যরা। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর দুই সদস্য ও বিজেপির এক সদস্য একইভাবে অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করে বেরিয়ে আসছেন। প্রতিদিনই সংসদ অধিবেশনে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
শরীক দল জামায়াতে ইসলামী চায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সংসদ অধিবেশন বয়কট করে সরকারের বিরম্নদ্ধে রাজপথের আন্দোলনে নেমে আসুক। কিন্তু কি করবে তা সব কিছুই নির্ভর করছে তারেক রহমানের ওপর। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর রবিবার দেশে ফিরে এসেছেন। তিনি কি বাতর্া নিয়ে এসেছেন তা চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে জানানোর পর দলের সিদ্ধানত্ম নেবেন তিনি। তবে চলতি মাসের শেষের দিকে বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানকে দেখতে যেতে পারেন বলে জানা গেছে।
বিপদে পড়ে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সহযোগিতা চাইলেন জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা না থাকা নিয়ে বিএনপির মধ্যে মতবিরোধ চলছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির একটি অংশ মনে করছে, সরকারের বিরম্নদ্ধে এখনও বড় ধরনের ইসু্য নেই, এ অবস্থায় জামায়াতের সঙ্গে আন্দোলনে না যাওয়াটাই ভাল। বিএনপির উগ্রপন্থী বলে পরিচিত একটি অংশ মনে করছে জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধী কিনা তা আমাদের বলার প্রয়োজন নেই, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আগেও বিএনপি আন্দোলন করেছে। তাছাড়া চারদলীয় ঐক্যজোটের শরীক দল হচ্ছে জামায়াত। এখন জামায়াতের বিপদের সময় তাদের পাশে থাকা উচিত। অন্যথায় বিএনপির বিপদের সময় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা থাকবে না। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে জামায়াতে ইসলামীর পাশে থাকলে কথা উঠবে যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগিতা করছে বিএনপি। এজন্য আপাতত জামায়াতের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়াটা ঠিক হবে না। কিন্তু সব কিছুই নির্ভর করছে সংসদের বিরোধী দলের নেতা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ওপর।
গত কয়েকদিন ধরে যুদ্ধাপরাধী বলে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী অঙ্গদল ছাত্রশিবিরের ক্যাডার গ্রেফতার হচ্ছে। এ অবস্থায় মহাবিপদে পড়েছে যুদ্ধাপরাধী বলে অভিযুক্ত জামায়াত-শিবিরের হোতারা। এজন্যই জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান ছুটে গেলেন প্রধান বিরোধী দলের নেতা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে। কিন্তু বছরের পর বছর রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোর, কুমিলস্না ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় শিবিরের ক্যাডাররা যেভাবে অপকর্ম করছে তাতে খোদ বেগম জিয়া ৰুব্ধ হয়েছেন। এই মুহূর্তে জামায়াত-শিবির সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তুলতে চায়। আন্দোলনের জন্য বিরোধী দলকে মাঠে নামাতে মরিয়া হয়ে উঠছে জামায়াত। বিএনপিকে সংসদ বর্জন করে রাজপথের আন্দোলনে নামাতে বিভিন্ন ইসু্য সৃষ্টি করছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতারা। এ অবস্থায় জামায়াতের পৰে রাখতে বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে ছুটে গেলেন মতিউর রহমান নিজামী। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আছে তা সরাসরি না বললেও বেগম খালেদা জিয়া জামায়াতের আমীরকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন বলে সংশিস্নষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর লন্ডনে জলবায়ু ও অন্য কয়েকটি সেমিনারে যোগ দিতে গেলেও মূল লৰ্য ছিল তারেক রহমানের সঙ্গে সাৰাত করা। গত ৬ ফেব্রম্নয়ারি মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর লন্ডনে যান। অন্যান্য কর্মসূচীর পাশাপাশি ঠিকই তারেক রহমানের সঙ্গে সাৰাত করে বাংলাদেশে বিএনপির বর্তমান অবস্থা ব্যাখ্যা করলেন তিনি। লন্ডনে বিএনপির এক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর। সেখানে প্রবাসী বিএনপির নেতাকর্মীরা বর্তমান মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বিরম্নদ্ধে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগগুলো তারেক রহমানের কাছে তুলে ধরেন তিনি। তখন তারেক রহমান বিএনপি ও অঙ্গ দল বিশেষ করে ছাত্রদলের ব্যাপারে বিভিন্ন কর্মপন্থার কথা বলেন, যা বর্তমানে দেশে এসে চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে তুলে ধরার পর, তারেকের নির্দেশ অনুযায়ীই দলের কর্মপন্থা ঠিক করা হবে। ওই নির্দেশ অনুযায়ী দল চলবে বলে সূত্র জানায়।

No comments

Powered by Blogger.