‘কোচিংই আমার পেশা, তাই...’

 কেচিংয়ে ফিরে আসার জন্য বোর্ডকর্র্তার পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। অনেক ভেবে-চিন্তে নিশ্চয়ই সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন? সুজন: তা তো বটেই। অনেক ভেবে-চিন্তেই সিদ্ধান্তটি নিয়েছি।
আসলে যখন আমাকে বোর্ডে ডাকা হলো তখন কোচিংয়ের কোন কাজ ছিল না। বলতে গেলে কোচিং থেকে একটু দূরেই ছিলাম। কিন্তু বোর্ডকর্তার পদে থাকলে যে আমি কোচিং করাতে পারব এ বিষয়টা সম্পর্কে আমার পরিষ্কার ধারণা ছিল না। যখন জানতে পারলাম বিষয়টা তখন আসলে এক রকম বাধ্য হয়েই বোর্ডের পদটা ছেড়ে দিতে হয়েছে। কারণ কোচিংটাই আমার প্রধান পেশা।
জনকণ্ঠ: আপাতত কোচিংকেই তাহলে ধ্যানজ্ঞান করতে চাচ্ছেন?
সুজন: যেহেতু এটা আমার পেশা এবং এখানেই আমার ক্যারিয়ার, তাই এটাকে তো প্রাধান্য দিতেই হবে। বোর্ড পরিচালকের পদ তো কোন পেশা নয়। ওটা সম্মানের একটা জায়গা। ওখানে সুযোগ পাওয়ার পর ইচ্ছা ছিল কাজ করে যাওয়ার। কিন্তু আমার পেশা ছেড়ে তো ওটা আমি করতে পারব না।
জনকণ্ঠ: বোর্ড পরিচালকের কাজ কেমন উপভোগ করলেন?
সুজন উপভোগ্য ছিল তবে কাজটা চ্যালেঞ্জিংও ছিল। কারণ একটা নতুন কমিটি হিসেবে আমরা দায়িত্ব নিয়েছিলাম। অনেক অসামপ্ত কাজ আমাদের করতে হয়েছে। তার ওপর ওয়েস্টইন্ডিজ সিরিজ ও বিপিএল সামনে ছিল। এছাড়া বিসিএল শুরু করাটাকেও আমরা প্রাধান্য দিয়েছিলাম। সব মিলিয়ে কাজগুলো চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে আমার কাছে খারাপ লাগেনি।
জনকণ্ঠ: আপনি খেলা ছাড়ার পর ধারাভাষ্যকার, জাতীয় দলের ম্যানেজার, জাতীয় দলের সহকারী কোচ, বোর্ডকর্তা অনেক পদেই কাজ করেছেন। যদি বলা হয়, কোন্টা সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য আপনার কাছে?
সুজন: সব ক্ষেত্রেই আলাদা আলাদা আনন্দ কাজ করেছে আমার মধ্যে। এবং আমি মনে কণ্ডি সবক্ষেত্রই আমার জন্য কম্ফোরটেবল। কারণ কাজগুলো সবই ক্রিকেটের। কিন্তু সব কিছুর পর ক্রিকেট কোচিংটাই যখন আমার প্যাশন, তাই এটাকেই প্রাধান্য দিতে চাই।
জনকণ্ঠ: বোর্ডকর্তার পদ ছাড়লেন। এখানে একটা বিতর্কও চলে আসতে পারে। শূধু অর্থের জন্যই বোর্ডকর্তার পদ ছাড়ছেন না তো?
সুজন: এখানে বিতর্কের তো কিছু নেই। কোচিংটাই আমার পেশা। বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই আমাকে কিছু না কিছু করতে হবে। এমন যদি হতো, আমি অন্য কোন চাকরি বা ব্যবসা করতাম তাহলে হয়ত বোর্ডে থাকলে কোন অসুবিধা হতো না। যেহেতু কোচিংটাই আমার পেশা তাই দ্বিতীয় কিছু ভাবিনি।
জনকণ্ঠ: আপনার মতো একজনের বোর্ডে থাকাও তো অনেকের মতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
সুজন: এটা আমিও ফিল করি। বোর্ডে থাকলে হয়ত আমার জায়গা থেকে ক্রিকেট উন্নয়নে কাজ করতে পারতাম।
কিন্তু আমাদের ক্রিকেট বোর্ডে থেকে কোচিং করানোর সুযোগটা নেই। অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে যদি বলি, ম্যাথু হেইডেন বোর্ডে থেকেও ক্রিকেট খেলেছেন। আমাদের দেশে সেই সুযোগটা নেই। কিন্তু আমাকে তো আগে আমার পরিবার নিয়ে বাঁচতে হবে।
জনকণ্ঠ: বিপিএলের মাঠের লড়াই শুরু হয়ে গেছে। মাঠের লড়াই কেমন উপভোগ্য মনে হচ্ছে?
সুজন: মাত্র ছয়টা খেলরা হয়েছে। এখনও অনেক খেলা বাকি। সব দলই কাছাকাছি মানের। আশা করি, খুব উপভোগ্য একটা লীগ হবে এবার।
জনকণ্ঠ: পাকিস্তানীরা খেলছে না। এতে বিপিএল কি কিছুটা হলেও রং হারাচ্ছে না?
সুজন: না, আমি সেটা মনে করি না। মাত্র লীগ শুরু হলো। এখনও অনেক বিদেশী প্লেয়ার আসা বাকি। তারা এলে দলগুলো আরও শক্তিশালী হবে। খেলা আরও ভাল জমবে। পাকিস্তানী ক্রিকেটারদের মধ্যে আফ্রিদি, ইমরান নাজির, আজমল, আকমল ব্রাদারের মতো কয়েকজনের কথা বাদ দিলে বাকিরা যে খুব বেশি সুপারস্টার ছিল তা কিন্তু নয়। ওরা এলে ভাল হতো। তবে না আসায় বিপিএল রং হারাবে এমনটা নয়।
জনকণ্ঠ: বিপিএল বাংলাদেশের সার্বিক ক্রিকেট উন্নয়নে কতটা অনুঘটক?
সুজন: বিপিএল তখনই বাংলাদেশের সার্বিক ক্রিকেট উন্নয়নে অনুঘটক হবে যখন বিপিএল থেকে উপার্জিত অর্থ ক্রিকেট উন্নয়নে সার্বিকভাবে ব্যয় হবে। বিপিএল থেকে অর্থ উপার্জন করে ব্যাংকে রেখে দিলে হবে না। এই টাকা ক্রিকেটর জন্যই ব্যয় করতে হবে। বিপিএল থেকে উপার্জিত অর্থ যখন ক্রিকেট উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে তখন বিপিএলকে অবশ্যই বাংলাদেশের সার্বিক ক্রিকেট উন্নয়নের অনুঘটক বলতে হবে।
জনকণ্ঠ: আপনার দল চিটাগাং কিংস নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কি?
সুজন: চিটাগাং কিংস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই দল গড়েছে। যদিও আমাদের শুরুটা হয়েছে হার দিয়ে। তবে আশা করি, আমরা ঘুরে দাঁড়াব এবং ভাল ক্রিকেট খেলব। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে আসলে ভবিষ্যত বাণী করা কঠিন। তারপরও আমার বিশ্বাস, আমরা ভাল কিছুই করব।

No comments

Powered by Blogger.