অভিযুক্ত র‌্যাব-সব সন্দেহের ঊর্ধ্বে থাকতে হবে

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি অনেকভাবেই হতে পারে। কোনো এলাকায় সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বৃদ্ধি, চাঁদাবাজি, মানুষের নিরাপত্তার অভাববোধ- এসব ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষ দাঁড়াবে কোথায়? সাধারণ মানুষ যেখানে আশ্রয় চাইবে, সেই আশ্রয়স্থলই যদি মানুষের নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়, তাহলে প্রতিকার কী?
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে তেমন ঘটনাই ঘটেছে। সেখানে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই র‌্যাব সদস্যকে পিটিয়েছে এলাকার মানুষ। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে র‌্যাবের মোটরসাইকেল।
র‌্যাব, পুলিশসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে এর আগেও অনেকবার প্রশ্ন উঠেছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত এসব বাহিনী আইনের সুযোগ নিয়ে অনেক কিছু করে থাকে- তেমন অভিযোগও আছে। পুলিশের বিরুদ্ধে তো এসব অভিযোগ হরহামেশাই শুনতে পাওয়া যায়। পুলিশ যেভাবে সাধারণের সঙ্গে মিশতে পারে বা যেভাবে সাধারণ মানুষকে নিয়ে পুলিশকে কাজ করতে হয়, অন্য কোনো বাহিনীকে সেভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হয় না।
র‌্যাব হচ্ছে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স। যে সময়ে র‌্যাবের জন্ম, তখন এই বাহিনী নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাব নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে। আগে যাঁরা র‌্যাবের বিরোধিতা করেছেন, তাঁরাই এখন র‌্যাবের পক্ষে যুক্তি দেখাতে কার্পণ্য করেন না। র‌্যাব নামের বাহিনী ছাড়া দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন কোন পর্যায়ে যেত, তা অনুমান করতে খুব একটা কষ্ট হয় না। তার পরও মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে র‌্যাব নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
র‌্যাবের মতো একটি অভিজাত বাহিনী কেন প্রশ্নবিদ্ধ হবে? তবে গুটিকয়েক সদস্যের কারণে গোটা বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ হলে সাধারণের চোখে সেটা বিসদৃশ লাগাটাই তো স্বাভাবিক, বিশেষ করে র‌্যাবের কাছ থেকে যখন মানুষের প্রত্যাশা অন্য রকম, তখন র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠলে তা মানুষকে নাড়া দেবেই।
মধ্যস্থতা বা মীমাংসার জন্য চাঁদা দাবি অবশ্যই অন্যায়। র‌্যাবের যে দুই সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, সে প্রসঙ্গে বলতে হয়, জমিজমার বিবাদ মীমাংসা কি তাঁদের এখতিয়ারে পড়ে? সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তদন্তের কথা। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতাও মিলেছে বলে জানা গেছে। আমরা আশা করব, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে অন্যরা এ ধরনের অপকর্ম থেকে বিরত থাকে।

No comments

Powered by Blogger.