কাশ্মীরে পরমাণু যুদ্ধের প্রস্তুতি!

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধের ব্যাপারে জনসাধারণকে সতর্ক করেছে পুলিশ। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে মাটির নিচে সুরক্ষিত আশ্রয় (বাংকার) তৈরিসহ দুই সপ্তাহের খাদ্য মজুদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলাবিষয়ক বাহিনী (এসডিআরএফ) গত সোমবার এ সতর্কতা জারি করেছে। এসডিআরএফ পুলিশের একটি অংশ।
সম্প্রতি কাশ্মীরের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় ভারত ও পাকিস্তানের সেনা 'হত্যার' ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর পর এ সতর্কতা জারি করা হলো। তবে কাশ্মীর পুলিশের বেসামরিক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপমহাপরিচালক মুবারক গানাই দাবি করেছেন, বছরব্যাপী বেসামরিক নাগকিদের প্রতিরক্ষার ব্যাপারে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। 'এর সঙ্গে অন্য কোনো কিছুর সংশ্লিষ্টতা নেই।'
'পরমাণু, জীবাণু ও রাসায়নিক (এনবিসি) অস্ত্র থেকে সুরক্ষা' শীর্ষক সতর্কবার্তাটি গত সোমবার স্থানীয় ইংরেজি দৈনিক গ্রেটার কাশ্মীরে প্রকাশিত হয়েছে।
সতর্কতামূলক ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'যদি বিস্ফোরণ ঘটার পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে তার তরঙ্গ আপনার কাছে না পৌঁছে, তাহলে বিস্ফোরণস্থল থেকে আপনি অনেক দূরে আছেন।' পরমাণু অস্ত্রের হামলার 'প্রাথমিক ধাক্কা' সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, 'বিস্ফোরণে বহুবিধ ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।' এ থেকে সুরক্ষা পাওয়ার উপায় হিসেবে স্থানীয় অধিবাসীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, 'আপনারা মাটির নিচে এমন বাঙ্কার তৈরি করুন, যাতে পরিবারের সব সদস্য সেখানে ১৫ দিন থাকতে পারেন।' পচবে না এমন শুকনো খাবার মজুদ রাখতেও বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
গত ৬ জানুয়ারি থেকে ভারত ও পাকিস্তানকে বিভক্তকারী নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) অতিক্রম করে কয়েক দফা 'হামলা' ও গুলিবিনিময়ের অভিযোগ তোলে দুই দেশ। ভারত দাবি করে, তাদের দুই সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানের দাবি, তাদের তিন সেনা হত্যা করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে উভয় দেশের সেনাবাহিনীর সম্মতিতে পুনরায় এলওসিতে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছে।
জাতিসংঘে ভারত-পাকিস্তান বাহাস : উভয় দেশের নিয়ন্ত্রণাধীন কাশ্মীরে জাতিসংঘ মিশন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে ভারত ও পাকিস্তান। দুই দেশের মধ্যকার অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণ করতে উভয় দেশের কাশ্মীরে জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক দল (ইউএনএমওজিআইপি) রয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব জলিল আব্বাস জিলানি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, 'জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে ইউএনএমওজিআইপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।' তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় প্রতিনিধি হরদীপ সিং পুরি বলেন, জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দলের ভূমিকা দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া চুক্তির 'সীমা' ছাড়িয়ে গেছে। ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি অনুযায়ী, 'দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে' সব সমস্যার সমাধান করবে দুই দেশ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে গতকাল জাতিসংঘের শান্তি মিশনের ওপর খোলা বিতর্কে এসব কথা বলা হয়। সূত্র : এএফপি, ডন, হিন্দুস্তান টাইমস।

No comments

Powered by Blogger.