সংসদ গ্যালারি থেকে

 জমজমাট জাতীয় সংসদ। টানা চার দিন বিরোধী দলের উপস্থিতিতে পুরনো রূপ ফিরে এসেছে অধিবেশনে। নতুন সংসদ সদস্যরা প্রত্যৰ করছেন সিনিয়র নেতাদের মুখে নানা অসংসদীয় বক্তব্য, ইসু্য-নন ইসু্যতে বিরোধী দলের দফায় দফায় ওয়াকআউট।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কখনও রাগান্বিত, কখনও হাস্যরসাত্মক মনত্মব্য ছুড়ে অধিবেশন মাতিয়ে রাখতে বিন্দুমাত্র কসুর করছেন না স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ।ডিগবাজির রেকর্ড সংসদের প্রথম থেকে শেষ পর্যনত্ম সরকারী দলের নানা বিশেষণে ভূষিত হলেন বিএনপির সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। মঙ্গলবারই প্রথম ব্যারিস্টার মওদুদ সংসদে কথা বলেন এবং তাঁর নেতৃত্বে ওয়াকআউট করেন সংসদ থেকে বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তবে তাঁকে নানা ছবক দেন মহাজোটের নেতারা। আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান বলেন, ডিগবাজিতে জুড়ি নেই মওদুদের। আলস্নাহর কাছে প্রার্থনা করি, বিএনপিই যেন তাঁর শেষ ঠিকানা হয়। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর কাছে মনোনয়ন না পেয়ে গেলেন জিয়ার কাছে। জিয়া মারা গেলে যান এরশাদের কাছে। পতন হলে আবার যান খালেদা জিয়ার কাছে। শেষে কোথায় যাবেন আলস্নাহই জানেন। এ সময় সবাই হেসে ওঠেন। এ সময় নিশ্চুপ বসে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ।

কম হলেও সাউন্ড বেশি
মহাজোটের সংরৰিত আসনের মহিলা সদস্য রয়েছে ৩৭ জন। বিপরীতে বিএনপির মাত্র ৫ জন। কিন্তু ওই পাঁচ জনই পাঁচ শ'র সমান। চিৎকার, চেঁচামেচি, নানা বিশেষণে উত্তেজক বক্তব্যে প্রায়ই উত্তপ্ত করে তোলেন সংসদের বৈঠক। তাঁদের থামাতে গলদঘর্ম হতে হয় স্পীকারকে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বক্তব্যে রাখার সময় মহাজোটের এক মহিলা সংসদ সদস্য টিপ্পনী কাটলে স্পীকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, "মাননীয় স্পীকার, নারীরা কথা বললে ভয় হয়।" চুপ করে বসে থাকার পাত্র নন স্পীকার। তাৎৰণিক উত্তর, "মাননীয় সদস্য ডান পাশে বেশি থাকলেও আপনার পিছনে কম হলেও সাউন্ড অনেক বেশি। তাঁদের বক্তব্যে শুনলে মনে হয়, অচিরেই পুরম্নষ নির্যাতন আইন হওয়া দরকার।" স্পীকারের কথা শুনে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা হাসিতে ফেটে পড়েন।

ছেড়ে গেলেই ভুলে যান
পয়েন্ট অব অর্ডারে উত্তপ্ত বিতর্ক চলছিল। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পর ফোর পান আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান। দাঁড়িয়েই বিএনপির এই নেতার রাজনৈতিক জীবনের কড়া সমালোচনা করেন। বলেন, "মাননীয় স্পীকার, ব্যারিস্টার মওদুদকে সবাই চেনেন। মওদদ আহমদ সাহেব যাকে ছেড়ে আসেন, তাকে আর মনে রাখেন না, ভুলে যান। তিনি যখন যে দলে থাকেন সে দলের গুণগান গান। মওদুদ সাহেব যখন আওয়ামী লীগে ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। বিএনপিতে থাকতে জিয়াউর রহমানের গুণকীর্তন করতেন। আর যখন জাতীয় পার্টিতে ছিলেন তখন এরশাদের প্রশংসা করতেন। আলস্নাহ তাঁকে হেদায়েত করম্নন। তাঁকে যেন আর কারও প্রশংসা না করতে হয়।

বুড়োদের মাইনাস করবেন পিস্নজ
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা। ফোর পান চারদলীয় জোটের শরিক বিজেপির তরম্নণ সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। নির্বাচিত হওয়ার পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম বক্তব্য। দাঁড়িয়ে নিজেকে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি দাবি করেন। এ সময় স্পীকার তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, তরম্নণদের প্রতিনিধিত্ব করেন ভাল। কিন্তু আমাদের মতো বুড়োদের মাইনাস করে দেবেন না পিস্নজ! পার্থর বক্তব্য শেষ হলে স্পীকার আবারও টিপ্পনী কেটে বলেন, "মাননীয় সদস্য, দুষ্টলোকেরা বলে, আপনি নাকি সরকার ও বিরোধী দল উভয়ের আশীর্বাদ পান?

No comments

Powered by Blogger.