আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

 বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি আর মানুষের মুখে মুখে সীমাবদ্ধ রইল না। ক্রমান্বয়ে পূর্ব বাংলার সব শহরে ভাষার দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ল। কিন্তু তখনকার সময়ে বেশিরভাগ পত্রিকাতেই ভাষা আন্দোলনের খবর খুঁজে পাওয়া যেত না।
পাকিস্তানী শাসকদের প্রচ- চাপের কারণে পত্রিকাগুলো আন্দোলনের খবর দায়সারাভাবে প্রকাশ করত। তবে কিছু কিছু খবরের কাগজ সেসব বাধা উপেৰা করে ভাষা আন্দোলনের খবরগুলো বেশ ভালভাবেই প্রচার করত। তৎকালীন মুসলিম লীগ সভাপতি মাওলানা আকরাম খাঁর মালিকানাধীন দৈনিক আজাদ একুশে ফেব্রম্নয়ারির গুলিবর্ষণের খবর সেদিনই সন্ধ্যায় বিশেষ জরম্নরী সংখ্যা বা টেলিগ্রামের মাধ্যমে প্রকাশ করে। প্রায় সপ্তাহব্যাপী দৈনিক আজাদের ভাষা আন্দোলন সংক্রানত্ম খবরের পরিবেশনা ছিল বেশ অনবদ্য। ভাষা আন্দোলনের আরও জোরালো সমর্থক ছিল মোহাম্মদ মোদাব্বেরের সম্পাদনায় প্রকাশিত দৈনিক মিলস্নাত। একুশের গুলিবর্ষণের খবর পত্রিকাটি ব্যানার হেডিং করেছিল। একই দিন মিলস্নাতের আরেকটি রিপোর্টের শিরোনাম ছিল 'রাতের অাঁধারে এত লাশ যায় কোথায়?' এভাবে পাকি শাসকদের প্রত্যৰ ও পরোৰ বাধা অতিক্রম করে পূর্ব বাংলার সাংবাদিক, সংবাদপত্র ও আমজনতার আন্দোলনের মাধ্যমেই বাঙালীর ভাষা আন্দোলন সফল হয়।
এসব ইতিহাসই নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য প্রতিবছর এই ফেব্রম্নয়ারিতে হয়ে থাকে নানা আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার বাংলা একাডেমীর মূল মঞ্চে রয়েছে 'একুশের প্রবন্ধ' শীর্ষক আলোচনাসভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. স্বরোচিষ সরকার। আর আলোচনায় অংশ নেবেন মফিদুল হক, শাহিনুর রহমান, আহমাদ মাযহার ও ফারজানা সিদ্দিকা।

No comments

Powered by Blogger.