ডিসি হারুন জীবন বাজি রেখে রাজপথে বিশৃঙ্খলা রুখেছেন ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী- পদক পেলেন ৬৭ জন

 স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, ‘ডিসি হারুন নিজের জীবন বাজি রেখে স্বপ্রণোদিত হয়ে জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে রাজপথের বিশৃঙ্খলা রুখে দিয়েছিলেন।
সেদিন রাজপথে কোন ধরনের জনসমাবেশ করতে না দেয়ার নির্দেশ ছিল পুলিশের ওপর। কারণ সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছিল তারা। এই কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্যই তাঁকে পুলিশ পদক দেয়া হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশলাইনে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৩ উপলক্ষে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র সচিব সি কিউ কে মোসতাক আহমেদ, পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকারসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা। ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৩’ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬৭ পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্য ও কর্মকর্তাকে পদক প্রদান করেছেন।
২০১৩ সালে পুলিশ বিভাগে ডিসি হারুন অর রশিদকে পিপিএম (সেবা) পদক দেয়া হয়েছে। বর্তমানে হারুন উর রশিদ ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১১ সালের ৪ জুলাই বিরোধী দলের হরতাল চলাকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হারুন রশিদ বিরোধী দলের চীফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর হামলা চালায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান যে, ২০১১ সালের অবদানের জন্য ২০১৩ সালে কেন পদক দেয়া হচ্ছে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জবাবে বলেন, ২০১২ সালেও ডিসি হারুনের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম রয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ফাঁসির আসামি আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ব্যাপারে তিনি বলেন, বাচ্চু রাজাকার একটি দেশে পালিয়ে রয়েছেন বলে খবর রয়েছে। যেই দেশে পালিয়ে রয়েছে সেই দেশ থেকে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হবে। বাচ্চু রাজাকারকে গ্রেফতার করতে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সাহায্য নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের শান্তির জন্য মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সেটি যেন যত্রতত্র ব্যবহার করা না হয়। এ ব্যাপারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশনা দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ সদস্যদের থাকার জায়গার অভাব রয়েছে। নতুন থানাগুলোতে তাদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাদের বাসস্থান বাড়ানোর দিকেও সরকারের পদক্ষেপ রয়েছে। পুলিশ আইন সংস্কারের ব্যাপারেও কাজ এগিয়ে চলছে বলে জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশকে জনবান্ধব হতে হবে। অন্যের মানবাধিকার যারা লঙ্ঘন করে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধান ও সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধানের প্রতি পুলিশের আরও সজাগ হতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাইবার ক্রাইমসহ নতুন নতুন অপরাধের ব্যাপারে পুলিশের প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। পুলিশের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

পদক পেলেন যাঁরা ॥ অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এবার ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৩’ উপলক্ষে পদক পেয়েছেন ৬৭ জন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের পদক প্রদান করেছেন। এবার যাঁরা পদক পেয়েছেন তাঁরা হচ্ছেন, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (প্রশাসন) বিনয় কৃষ্ণ বালা, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ ইব্রাহীম ফাতমী, অতিরিক্ত ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) মিজানুর রহমান, পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (গোপনীয়) মাহফুজুর রহমান, খুলনা মহানগরের পুলিশ কমিশনার শফিকুর রহমান, ভোলার পুলিশ সুপার বশির আহমেদ, পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (প্রশাসন) রখফার সুলতানা খানম, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা ও মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া সার্কেলের এএসপি আলমগীর হোসেন।
বিপিএম (মরণোত্তর) পেয়েছেন কক্সবাজারের মৃত এসআই শ্রী পরেশ কুমার কারবারী। ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের কনস্টেবল লুৎফুর রহমান বিপিএম, এআইজি (সিআইডি) মোঃ মোখলেসুর রহমান বিপিএম (সেবা), ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোলা নজরুল ইসলাম বিপিএম (সেবা), পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বিপিএম (সেবা)।
পিপিএম পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ র‌্যাব-১১-এর মেজর খন্দকার গোলাম সারোয়ার, র‌্যাব-৩-এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর আহমেদ হোসেন মহিউদ্দিন, র‌্যাব-১০-এর স্কোয়াড্রন লিডার ইমন আহসান, র‌্যাব-৮-এর সিনিয়র এএসপি মোঃ আজাহার আলী শেখ, চট্টগ্রাম সিএমপির বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন, মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার ওসি মোঃ আশরাফ উল ইসলাম, ভোলা চরফ্যাশন থানার ওসি রিয়াজ হোসেন, মতিঝিল ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট মোঃ ইউসুফ আলী চৌধুরী, ডিএমপির শাহ আলী থানার এসআই মোঃ জাহিদুর রহমান খান, লালবাগ থানার এসআই মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ফেনী মডেল থানার এসআই মোঃ মাহবুবুর রহমান, বরিশালের এসআই নূরুল আলম তালুকদার, শরীয়তপুর নড়িয়া থানার এসআই মোঃ ফয়সাল হাওলাদার, ডিএমপির রমনা মডেল থানার এএসআই মোঃ হারুন অর রশীদ, কক্সবাজার পুলিশ লাইনসের এএসআই মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, হেড কনস্টেবল জাহাঙ্গীর হোসেন ১৪১ (আরআরএফ) ১৭৫ (খাগড়াছড়ি), হেড কনস্টেবল মহসীন সিপিসি-২ র‌্যাব-১১, হেড কনস্টেবল জুলফিকার আলী র‌্যাব-৩, ডিএমপি গুলশান থানার কনস্টেবল আমজাদ হোসেন, র‌্যাব সদর দফতরের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের সৈনিক মোঃ ইমরুল কায়েস
পিপিএম সেবা পেয়েছেন খুলনা র‌্যাব-৬-এর অধিনায়ক ডিআইজি মোঃ মনজুর কাদের খান, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিলি বিশ্বাস, র‌্যাব সদর দফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল মোঃ মজিবুর রহমান পিএসসি, ডিএমপির গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, উপ-পুলিশ কমিশনার (মতিঝিল জোন) মোঃ আনোয়ার হোসেন, ডিরেক্টর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ গোলাম রউফ খান পিপিএম, শেরপুর জেলার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, ডিএমপির উপ-কমিশনার (লালবাগ জোন) হারুন-অর-রশীদ, র‌্যাব-৮-এর লে. কমান্ডার মোহাম্মদ নুর-উজ-জামান, র‌্যাব-৮-এর মেজর রাশেদুল হক খান, র‌্যাব-৬-এর ঝিনাইদহ ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন আশরাফ আলী, ডিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার আবিদা সুলতানা, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান, ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মশিউর রহমান, ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আয়েশা সিদ্দিকা, ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আশিকুর রহমান, পুলিশ সদর দফতরের এএসপি মাহফুজুর রহমান আল মামুন, ডিবির সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেন, ডিবির সহকারী কমিশনার সাইফুল ইসলাম, ডিএমপির ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার মনজুর রহমান, ডিবির সহকারী কমিশনার মাহফুজুল ইসলাম, র‌্যাব-৫-এর লেফটেন্যান্ট বিএম নুর মোহাম্মদ, র‌্যাব-৮-এর লেফটেন্যান্ট সৈয়দ মোঃ সরফরাজ ওবায়েদ, সাভার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মনোয়ার হোসেন, ডিবির সহকারী কমিশনার ওবায়দুল হক, ডিবির সহকারী কমিশনার জাহিদুল হক, ডিএমপি সূত্রাপুর থানার ওসি (বদলিকৃত) নজরুল ইসলাম, ডিবির পরিদর্শক জিয়াউর রহমান, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম, ডিএমপি সূত্রাপুর থানার এসআই জালাল উদ্দিন ও কুষ্টিয়া মিরপুর থানার এসআই মোঃ শাহাব উদ্দিন।

No comments

Powered by Blogger.