সতেজ থাকতে
যেহেতু আবহাওয়াকে আমরা ইচ্ছা করলেই পাল্টাতে পারি না, তাই আমাদের সব কিছু মেনে নিয়েই সতেজ ও কর্মৰম থাকতে হবে।গরমে ঘাম বেশি হয় বলে পানিশূন্যতা ঘটতে পারে।
এজন্য প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা ছাড়াও সমসত্ম খাবারের মধ্যে যাতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে সেদিকে লৰ্য রাখতে হবে। পানি দেহকে শীতল রাখা ছাড়াও দেহের কোষকে পরিশোধিত করবে। এ সময় তৃষ্ণায় উদ্রেক বেশি হয় বলে ডাব, কাগজী লেবু, তোকমা, ইসবগুল, তেতুল, কাঁচা আম, বেল এগুলো দিয়ে সরবত করে খাওয়া যেতে পারে। ইসবগুল ও তেঁতুলের সরবত খুবই সি্নগ্ধ ও শীতল। ইসবগুল অমস্ন, পাকস্থলীর প্রদাহ, রক্ত আমাশয়, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদিতে বেশ কার্যকর। আবার তেঁতুলের সরবত কোলেস্টরল ও ট্রাইগস্নাইসেরাইড কমানোর জন্য অব্যর্থ। ফলের রসের মধ্যে ডাবের পানিকে উত্তম বলা যায়। এটা দেহকে শীতল রাখে। প্রস্রাবে জ্বালাযন্ত্রণা ও প্রস্রাব কম হলে প্রতিদিন একটি ডাবের পানি খেলে উপকার হয়। এতে পটাশিয়াম বেশি থাকে এবং ক্যালরি কম থাকে।গরমের সময় দুপুর ও রাতের আহারে সালাদ বেশ তৃপ্তিদায়ক। দই, শশা, লেবু, টমেটো, গাজর, কাঁচা পেঁপে, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, পিঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে সালাদ করে মেয়নেদ মেখে ফ্রিজে রেখে দিলে পরে বের করে খেলে বেশ মুখরোচক হয়। সালাদে লবণ ও সামান্য চিনি দিলে এর ভিটামিন অৰুণ্ন থাকে। এছাড়া বিভিন্ন ফল মিশিয়েও সালাদ করা যায়।
মাছ-মাংসের চাইতে সবজি বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যোপযোগী। এ সময়ের সবজিতে পানির পরিমাণ বেশিই থাকে। যেমন_ ঝিঙা, চিচিঙ্গা, পটল, জালি, বড় শশা, বিভিন্ন ধরনের শাক ইত্যাদি। হাল্কা মশলা দিয়ে নিরামিষ বা সুক্তো করে খেলে বেশ হয়।
প্রতিদিনের আহারে রসালো ফল যে কোন একটি থাকলেই চলে। ছোট মাছের ঝোল, পাতলা ডাল, নরম খিচুড়ি অর্থাৎ খাবার অধিক তেল-মসলা সহযোগে গুরম্নপাকে নয়, হাল্কা মশলায় জলীয় খাবার হওয়া উচিত। সকালের নাসত্মায় মাঝে মাঝে চিড়া-কলা দই খেতে পারলে শরীর ঠা-া থাকবে। ডুবো তেল ভাজা যতদূর সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে। এছাড়া পোলাও, বিরিয়ানী, পরাটা, ভুনা মাংস, চর্বিযুক্ত মাংস যত কম খাওয়া যায় তত ভাল। এ সময় মাছই উত্তম।
মোট কথা, গ্রীষ্মের খাবার হবে ঠা-া, জলীয়, সহজপাচ্য ও হাল্কা মশলাযুক্ত। যাতে দেহ ও মন দুইই সতেজ থাকে। তবে খাবার অবশ্যই সব কয়টি উপাদানের সমন্বয়ে সুষম হতে হবে।
আখতারুন নাহার আলো
প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা
বারডেম
No comments