স্মার্টনেসের নাম ক্রেডিট কার্ড- রেজাউল করিম খোকন

যুগ পরিবর্তনের সাঙ্গে মানুষের আর্থিক লেনদেনের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে দ্রম্নত। আগে যেখানে বাজারে গিয়ে কেনাকাটার জন্য পকেট ভর্তি করে টাকা পয়সা নিয়ে যেত সবাই।
নগদ টাকা পকেটে কিংবা ভ্যানিটি ব্যাগে বয়ে বাজার করাটা ছিল নিতানত্মই ঝুঁকিবহুল। নগদ টাকা হারিয়ে যাওয়া কিংবা চুরি ছিনতাই হওয়ার আশঙ্কায় কাটাতে হতো সবাইকে। এখন সময় বদলে গেছে। কাগজের নোট নিয়ে ছুটাছুটি, নানা বিড়ম্বনা আর নিরাপত্তার ঝুঁকি এড়াতে আজকের আধুনিক মানুষ বেছে নিচ্ছেন বিকল্প পথ। আর এই বিকল্প উপায় বা পথটি হলো ক্রেডিট কার্ড। মানিব্যাগ কিংবা ভ্যানিটি ব্যাগে নগদ টাকা না থাকলেও এখন কোন সমস্যা নেই। নির্দিষ্ট বুথে কিংবা দোকানে রাখা মেশিনে ক্রেডিট কার্ড পাঞ্চ করে খুব সহজেই পেয়ে যেতে পারেন সঠিক সমাধান। এখন আমাদের আধুনিক নগর জীবনে আর্থিক লেদেনের ৰেত্রে বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড। দিনে দিনে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। কোন এক সময় অভিজাত এবং উচ্চ শ্রেণীর মানুষরাই কেবল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতেন। এখন এটা আর উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আজকাল আমাদের মধ্যে অনেকেই আর্থিক লেনদেনে ক্রেডিট কার্ড হরদম ব্যবহার করছেন। তবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সময় কিছু গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখা একানত্ম জরম্নরী। এবার আসুন জেনে নেয়া যাক, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কিছু নিয়মাবলি।
০ ক্রেডিট কার্ড নেয়ার সময় সেই কার্ডে ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ড কোম্পানির লোগোর সঙ্গে ভিসা বা মাস্টার কার্ড লোগো রয়েছে কিনা অবশ্যই দেখে নিন। আপনার ক্রেডিট কার্ড যদি ভিসা কার্ড অথবা মাস্টার কার্ড দ্বারা সাপোর্টেড হয়, তবে বিভিন্ন দেশে এই কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
০ ক্রেডিট কার্ড সাধারণত বিনামূল্যে দেয়া হয় না। স্ট্যান্ডার্ড বা প্রিমিয়াম_ কোন্ ধরনের কার্ড আপনি ব্যবহার করছেন, সেই অনুযায়ী আপনাকে একটা চার্জ দিতে হবে। ক্রেডিট কার্ডে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আপনি যদি টাকা ফেরত দেন তাহলে কোন সুদ প্রদান করতে হবে না। কিন্তু নির্ধারিত তারিখের পর যদি আপনি টাকা ফেরত দেন তাহলে নির্দিষ্ট হারে সুদ দিতে হবে।
০ প্রত্যেক সংস্থাই স্ট্যান্ডার্ড কার্ডের তুলনায় প্রিমিয়াম কার্ডের গ্রাহকদের অধিকতর সুযোগ সুবিধা দেয়। এ কারণেই প্রিমিয়াম কার্ডের ফি অবশ্যই বেশি।
০ ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি অনেক সময় গ্রাহকের জন্মতারিখ এবং শেষ ক্রেডিট কার্ডের মেয়াদ পূর্তির তারিখ পরীৰা-নিরীৰা ও যাচাই করে তারপর গ্রাহককে তার ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে তথ্য জানাতে পারে। সেজন্য অপরিচিত অন্য কাউকে এই তথ্য কোনভাবেই প্রদান করবেন না।
০ আপনার ক্রেডিট রেকর্ড এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কোম্পানি আপনার ক্রেডিটের সীমা অর্থাৎ লিমিট নির্ধারিত করে দেয়া হবে। সব সময়ে ঠিকঠাক মতো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পেমেন্ট করে দিলে পরবর্তীতে আপনার ক্রেডিটের সীমা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই উচ্চতর ক্রেডিট লিমিট সুবিধা পেতে চাইলে যথাসময়ে টাকা পরিশোধ করে দিন।
এছাড়াও আপনাকে মনে রাখতে হবে

০ ক্রেডিট কার্ড হারিয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সংশিস্নষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানানো জরম্নরী।
০ ফ্রি ক্রেডিট পিরিয়ড-এর মেয়াদ সাধারণত এক বছর হয়। এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য জেনে নিতে সচেষ্ট থাকা প্রয়োজন।
০ কোন দোকান থেকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে জিনিস কেনার পর সেলস ভাউচার বা চার্জ সিস্নপ পারচেজ এমাউন্ট দেখে নিশ্চিত হয়ে তবেই সই করম্নন। সেলস ভাউচার এবং এটিএম রসিদ মাসিক প্রতিবেদন মানে মামুলি স্টেটমেন্টের সঙ্গে মিলিয়ে নিন।
০ টেলিফোন, মোবাইল কিংবা ইন্টারনেট কখনও আপনার ক্রেডিট কার্ড পিন নম্বর দেবেন না। শুধুমাত্র কোন বিশ্বসত্ম সংস্থা থেকে আপনার কাছে ফোন করার পর আপনার নিজের প্রয়োজনে যদি আপনার পিন নম্বর চায় তখন পরিস্থিতি বুঝে সঠিক ও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধানত্ম নিন।
০ আপনার ক্রেডিট কার্ডটিকে সুরৰিত রাখুন। আগুনের তাপ থেকে এবং পানিতে ভিজে নষ্ট হওয়া থেকে যথাসম্ভব দূূরে রাখতে চেষ্টা করম্নন।
০ শিশুদের নাগাল থেকে দূরে রাখুন আপনার ক্রেডিট কার্ড।
০ একাধিক ক্রেডিট কার্ড থাকলে প্রতিটি ক্রেডিট লিমিট সম্পর্কে সব সময়ে সম্যক ধারণা রাখার চেষ্টা করম্নন।
০ লিমিট ক্রস অর্থাৎ ব্যালেন্সের সীমা অতিক্রানত্ম হয়ে যাবার পর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিব্রত হবেন না। এতে করে আপনার ইমেজ ৰুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

No comments

Powered by Blogger.