জয়ের পথে নেতানিয়াহুর জোট

ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট নেওয়া হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। নির্বাচন-পূর্ববর্তী জরিপ অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থী জোট লিকুদ-বেতেনু আবারও ক্ষমতায় ফিরবে।
সে ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে স্থবির হয়ে পড়া শান্তি আলোচনার ভবিষ্যৎ আরো শঙ্কায় পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নেতানিয়াহুর জোট ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও পশ্চিম তীরের অধিকৃত এলাকা থেকে ইহুদি বসতি প্রত্যাহারের ঘোর বিরোধী।
গতকাল স্থানীয় সময় ভোর সাতটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। টানা ১৫ ঘণ্টা চলার পর শেষ হয় রাত ১০টায়। দিনের শুরুতেই জেরুজালেমের একটি কেন্দ্রে স্ত্রী সারা ও দুই ছেলেসহ ভোট দেন নেতানিয়াহু। এবারের নির্বাচনের বিপুল সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। প্রায় ৭৮ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ইসরায়েলে ভোটার সংখ্যা ৫৬ লাখ ৫৬ হাজার ৭০৫ জন। নেসেট নামে পরিচিত পার্লামেন্টের ১২০টি আসনের জন্য ৩৪টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আজ বুধবার সকালের মধ্যেই নির্বাচনের প্রাথমিক ফল পাওয়া যাবে।
ইসরায়েলের ৬৪ বছরের ইতিহাসে কখনোই কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা (৬১ আসন) পায়নি। এবারো জোটের সংস্কৃতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে বলে মনে হচ্ছে না। সব হিসাব বলছে, লিকুদ-বেতেনু জোটই জিতবে। তবে মতামত জরিপগুলো আভাস দিয়েছে, গতবারের তুলনায় এবার নেতানিয়াহুর জোটের আসন অন্তত ১০টি কমবে। এবার তারা ৩২টি আসন পেতে পারে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে ডানপন্থী ছোটখাটো আরো কয়েকটি দলের সাহায্যের ওপর নির্ভর করতে হবে তাদের। জরিপ অনুযায়ী, নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে মধ্য বামপন্থী লেবার পার্টি, তারা পাবে ১৭টি আসন। এর আগে নির্বাচন হয়েছিল ২০০৯ সালে। সে অনুযায়ী এবার নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের অক্টোবরে। কিন্তু বার্ষিক বাজেট নিয়ে জোটসঙ্গীদের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে নেতানিয়াহু গত বছরের অক্টোবরে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর নেতানিয়াহুই ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে স্থিতিশীল জোট সরকার পরিচালনা করেন। তবে এবারের নির্বাচনও ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যকার স্থবির হয়ে পড়া শান্তি আলোচনার জন্য কোনো সুখবর বয়ে আনবে না বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। পরমাণু ইস্যুর কারণে ইরান প্রসঙ্গেও নেতানিয়াহুর অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। সূত্র : বিবিসি।

নির্বাচন প্রক্রিয়া
ইসরায়েল সরকার সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিচালিত হয়। চার বছর মেয়াদি নেসেট নির্বাচন করতে ভোটারা ব্যক্তি নয় দলকে ভোট দেন। প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে দল নির্ধারণ করে মেম্বার অব নেসেট। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ আসনে জয়ী দলের প্রধানকে সরকার গঠনের আহবান জানান। এ জন্য ২৮ দিনের সময় দেওয়া হয়। সরকার গঠনের পর নেসেটে আস্থা ভোটের আয়োজন করা হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেলে প্রতিষ্ঠিত হয় সরকার।

No comments

Powered by Blogger.