মুজাহিদের জামিন আবেদন খারিজ- যুদ্ধাপরাধী বিচার

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। একই ট্রাইব্যুনালে আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের নতুন আরও তিন সাক্ষীর নাম অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেয়া


হয়েছে। এছাড়া মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের জেরা সম্পন্ন করেছে আসামি পক্ষের আইনজীবী। ১৩ আগস্ট ৫ম সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষী পরাগ ধরের ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে জেরা সম্পন্ন হয়েছে। একই ট্রাইব্যুনালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরা অব্যাহত রয়েছে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই আদেশ প্রদান করেছেন। আসামি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রোজায় এতেকাফ পালনের জন্য এবং স্ত্রীর শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে মুজাহিদের পক্ষ থেকে জামিনের এই আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল বলেছে, এ বিষয়গুলো জামিনের জন্য কোন ‘কারণ’ হতে পারে না। তাছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে জামিনের কোন বিধান নেই বলেও বিচারক উল্লেখ করেন। এই আবেদনের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে শুনানি করেন মুজাহিদের আইনজীবী নজরুল ইসলাম। নজরুল ইসলাম বলেন, মুজাহিদ ২০ বছর ধরে এতেকাফ পালন করে আসছেন। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রী শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ জন্য তিনি জামিন চান।
কিন্তু এর জোরালো বিরোধিতা করেন প্রসিকিউশনপক্ষের আইনজীবী মীর ইকবাল হোসেন ও মোহাম্মদ আলী। মুজাহিদকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি। তিনি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন। ২০১০ সালের জুন মাসে গ্রেফতার হন জামায়াতের এ নেতা। গত ২৬ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।
সাকা চৌধুরী ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (সাকা চৌধুরী) বিরুদ্ধে নবম সাক্ষী পরাগ ধরের ক্যামেরা ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে দুই সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও এই ক্যামেরা ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হয়। নবম সাক্ষী পরাগ ধরের ক্যামেরা ট্রায়াল শেষে পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৮ আগস্ট দিন ধার্য করেছে ট্রাইব্যুনাল।
ক্যামেরা ট্রায়ালের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ হলোÑ সাক্ষীর জবানবন্দীর বিষয়ে আদালতের বাইরে কিছুই বলা যাবে না। এমনকি সাক্ষীর দেয়া জবানবন্দীর বিষয়ে আসামি সালাউদ্দিন চৌধুরীকেও কিছু বলা যাবে না।
ক্যামেরা ট্রায়াল চলাকালে আসামিপক্ষের দুই আইনজীবী এবং প্রসিকিউশনের তিন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। মামলার কার্যক্রম চলাকালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও ট্রাইব্যুনালের ডকে উপস্থিত করা হয়নি। প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম ১ আগস্ট সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে পরাগ ধরের সাক্ষ্য নেয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করলে ৭ আগস্ট মঙ্গলবার এর জন্য দিন ধার্য করেন। ক্যামেরা ট্রায়ালের সময় দু’পক্ষের আইনজীবী ব্যতীত কেউ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত থাকেনি। এর আগে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে একজন মহিলা সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা ক্যামেরা ট্রায়ালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। (অসমাপ্ত)

No comments

Powered by Blogger.