প্রাগৈতিহাসিক! টেঁটা যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত নরসিংদীর চরাঞ্চল by মাখন দাস

একবিংশ শতাব্দীতে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই ব-দ্বীপে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ক্রমশ বদলে যাচ্ছে সবকিছু। তবে নরসিংদীর চরাঞ্চলসহ আশপাশের কিছু এলাকায় যেন এখনো বিরাজ করছে প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকার যুগ। এখানকার জীবনাচারের স্বাভাবিক চিত্রে পরিণত হওয়া টেঁটাযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করলে মনে হবে- আধুনিকতা বা সভ্যতা এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের মন-মগজে কোনো আঁচড়ই কাটতে পারেনি।

তুচ্ছ কারণে ঝড়ে পড়ে অমূল্য প্রাণ
মেঘনার তীরে নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চল রায়পুরা উপজেলার ৮টি ও সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ লাখ মানুষ প্রাগৈতিহাসিক যুগের মত তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণেও টেঁটা-বল্লম-ঢাল নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ লিপ্ত হয়। এসব অঞ্চলে কখনো গোষ্ঠীগত, কখনো এলাকার প্রভাব প্রতিপত্তি, কখনো সীমানা বিরোধ নিয়ে মুহূর্তের মধ্যে টেঁটাযুদ্ধে জড়িয়ে পরে শত শত গ্রামবাসী।

এসব যুদ্ধে যোগ দিতে আশপাশের বিশ-বাইশ গ্রাম তো বটেই, দেখা গেছে বিশ-ত্রিশ মাইল দূর থেকেও আত্মীয়-স্বজন আর জ্ঞাতী-গোষ্ঠীর লোকজন এসে হাজির হয়। কখনো কখনো পরপর দুই-তিনদিন ধরে চলে যুদ্ধ। তখন মনে হয় প্রশাসন বা পুলিশ বলে কিছু নেই ওইসব অঞ্চলে।

প্রতি বছর গা শিউরানো মরণপণ এসব যুদ্ধের বলি হয় বেশ কিছু প্রাণ। প্রতিপক্ষের হামলা-মামলায় সর্বস্ব হারায় শত শত পরিবার। তবু তারা সর্বনাশা টেঁটাযুদ্ধ থেকে বিন্দুমাত্র সরে দাঁড়ায় না। যারা নিহত হয়, তাদের রক্তের প্রতিশোধ নিতে পাল্টা খুন আর মামলায় ক্ষতবিক্ষত হয় শান্তির জীবন।

যেন মানুষের নেশা আর পেশায় পরিণত হয়েছে
এক কথায় বলা যায়, টেঁটাযুদ্ধ যেন চরবাসী মানুষের নেশা এবং পেশায় পরিণত হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এখানকার প্রতিটি ঘরে কমপক্ষে ৩০/৪০ টি করে টেঁটা, ২০/২৫টি বল্লমসহ ভিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র মজুদ থাকে সব সময়।

এমনও দেখা গেছে- যে পরিবারের সদস্য সংখ্যা সাকুল্যে ৮ জন সেখানে বল্লম-টেঁটার মজুদ থাকে কমপক্ষে ৯০টি।

চরাঞ্চলে টেঁটাযুদ্ধের সময় যতক্ষণ যোদ্ধাদের হাতে যুদ্ধের রসদ থাকে ততক্ষণ জীবনের মায়া উপেক্ষা করে তারা জিঘাংসাদীপ্ত রোষে যুদ্ধ চালাতে থাকে- যোদ্ধারা এতটাই বেপরোয়া যেন ‘সংশপ্তক’।

পুলিশ ব্যস্ত থাকে জান বাঁচাতে
‘যুদ্ধকালে’ কখনো কখনো নীরব দর্শক হয়ে দূরে দাঁড়িয়ে থাকে পুলিশের ক্ষুদ্র কোনো দল। কারণ যুদ্ধবাজ দু’পক্ষের মাঝখানে লড়াই থামাতে আসা পুলিশ বাহিনী যুদ্ধরতদের তুলনায় সংখ্যায় ‘যেন সাগরে গোষ্পদ’। কখনো কখনো তো এমন হয় যে, ওই ছোট্ট পুলিশ বাহিনী বিশাল দুই শত্রুপক্ষের মাঝখানে আটকা পড়ে কোনোমতে মাথা নিচু করে, মাটিতে শুয়ে পড়ে জীবন বাঁচায়। 

এক পর্যায়ে যখন টেঁটা-বল্লমের মওজুদ শেষ হয়ে যায়, যোদ্ধাদের শরীরের শেষ শক্তিটুকুও নিঃশেষিত- তখন ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে আসে লড়াই। এ সময় ‘যুদ্ধের ময়দানে’ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় উভয় গ্রুপের টেঁটাবিদ্ধ নিহত ও আহত যোদ্ধাদের। মারাত্মক আহত আর মুমূর্ষুদের আর্তচিৎকারে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।  

এ সময় স্বজনদের কেউ কেউ আহতদের আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নৌকাযোগে প্রায় ২০/২৫ কিলোমিটার নদীপথ অতিক্রম করে শহরের হাসপাতালগুলোতে নিয়ে আসে। হাসপাতালে আনার পর অনেক সময়েই বোঝা যায় না কে বেঁচে আছে আর কার ভবলীলা সাঙ্গ হয়ে গেছে।

ডাক্তার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে কাউকে মৃত ঘোষণা করে আবার কাউকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। তবে সঙ্গীদের মৃত্যুর খবরে সহযোদ্ধারা খুব একটা বিচলিত হয় না। বরং দ্রুত প্রতিশোধ নিতে আবার তারা টেঁটাযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে মনে মনে।

অপরদিকে, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে খুনীদের শাস্তি নিশ্চিত করণে এবং একইসঙ্গে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ৩/৪শত লোককে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

পরে মামলা সূত্রে এলাকায় পুলিশ নিয়ে মহড়া দেয় বাদীপক্ষের লোকজন। আসামি আর তাদের স্বজনরা গ্রেপ্তার ও পুলিশী হয়রানি ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সুযোগে বাদীপক্ষের লোকজন আসামিদের বাড়িঘর, গরু-ছাগল, নৌকা ও জমির ধানসহ অন্যান্য জিনিসপত্র লুটপাটসহ পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।

ঘটনা পরম্পরায় বছর খানেক স্থানীয় নেতা ও প্রভাবশালীদের কাছে নানাভাবে দেন-দরবার করে খুন প্রতি ১৫/২০ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে ‘সেটিং করে’ প্রতিপক্ষের ‘বশ্যতা’ মেনে এলাকায় ফিরে আসে বিবাদী পক্ষ।

ঘটনার এভাবে নিষ্পত্তি হলেও বলা যেত ‘মন্দের ভালো’।

কিন্তু না!

কিছুদিনের মধ্যেই ছাইচাপা প্রতিশোধের আগুন ফের উসকে ওঠে ছোটখাটো কোনো ঘটনার সূত্রে। আপাত বিশ্রামে থাকা যোদ্ধাদের রক্ত যেন ফের টগবগিয়ে ওঠে। নতুন করে অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, আর পুরনোগুলোকে সারাই করে তৈরি রাখা হয়। এভাবেই গোপনে গোপনে প্রস্তুতি চলে ‘অনিবার্য’ যুদ্ধের।

এরপর অপেক্ষা চলে যুদ্ধ শুরুর কোনো তাৎক্ষণিক উপলক্ষ্যের। কিছু না পাওয়া গেলে বেহুলা-লক্ষ্ণীন্দরের গল্পের সেই সাপের মত ছোবল দেওয়ার ছুতো (অজুহাত) তৈরি করা হয়। 

এবং অনিবার্যভাবেই আবারো বেজে ওঠে যুদ্ধের দামামা। যোদ্ধাদের হাতে উঠে আসে সযতনে মাচায় তুলে রাখা রক্তপিপাসু টেঁটা-বল্লম-সড়কি-যুইত্যাসহ দেশীয় অস্ত্রগুলো। তবে অতি অবশ্যই এসব যুদ্ধের প্রধান অস্ত্র থাকে টেঁটা। 

আশ্চর্যের ব্যাপার হলো- কখনো কখনো ফুটবল-ক্রিকেট বা কাবাডির প্রীতি ম্যাচের মত দুই পক্ষ দিন-ক্ষণ ঠিক করে এবং এলাকায় আগে থেকে প্রচার করে যুদ্ধে জড়ায়। অনেক ক্ষেত্রে টেঁটাযুদ্ধে যোদ্ধাদের সহযোগী হিসেবে তাদের সহর্ধমনীদের দেখা যায় মাঠে। তারাও স্বামীদের মত বীরদর্পে চালিয়ে যায় যুদ্ধের যোগানদারী।

এসব বিষয়ে এলাকার শতবর্ষী বৃদ্ধ রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ী গ্রামের শুকুর আলী বাংলানিউজকে বললেন, ‘ছুডু বেলা থাইক্যা দেইখ্যা আইতাছি আমার বাপ-দাদারা বিভিন্ন কারণে টেঁডা নিয়া খালি খালি মাইর করতো। এহনো সেই ঝগড়া বিবাদডা রইয়াই গেল। কবে যে সুমতি অইব, আর দেশ থ্যাইক্যা এ টেঁডার মারামারি শেষ অইব আল্লাই জানে।’ 

শুরুটা ব্রিটিশ আমলে...
কবে থেকে এ অঞ্চলে টেঁটাযুদ্ধের সূত্রপাত তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেননি।
তবে এলাকার লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, মূলত বৃটিশ শাসনামল থেকে এখানে টেঁটাযুদ্ধের সূচনা হয়। তখন ঢাকার নবাবদের নিয়ন্ত্রণে ছিল এসব এলাকা।

তৎকালীন নবাব সেলিম ছিলেন এ অঞ্চলের অধিপতি। ওই সময়েএকপর্যায়ে মেঘনা নদীতে একের পর এক নতুন চর জাগতে শুরু করে। তখন ভূমিহীন কৃষকরা বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে দুর্গম এসব চরাঞ্চলে বসতি শুরু করে।

ওই সময় কৃষকরা হিংস্র জীব-জানোয়ারের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা ও একইসঙ্গে জীবন-জীবীকার তাগিদে নদী থেকে মাছ শিকার করার জন্য নিজেরাই লোহা পুড়িয়ে তৈরি করতো টেঁটা, বল্লমসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রপাতি।

এরপর নবাবের জোতদাররা চরে বসতি স্থাপনকারী কৃষকদের কাছ থেকে খাজনা আদায় শুরু করলো। এ নিয়ে কৃষক-জোতদারদের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব-সংঘাত। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের উদ্দেশ্যে তখন টেঁটা-বল্লম-সড়কির ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। পরবর্তীতে জমিদারী প্রথা শেষ হওয়ার পর শুরু হয় গোষ্ঠীগত দাঙ্গা। এসব দাঙ্গা এবং এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ গ্রুপগুলো গড়ে তোলে যার যার লাঠিয়াল বাহিনী।

আর নামে লাঠিয়াল হলেও এসব বাহিনীর মূল হাতিয়ার হিসেবে স্থান করে নেয় টেঁটা। এর পাশাপাশি ব্যাবহৃত হতে থাকে বল্লমসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রও। পরে লাঠিয়াল বাহিনীর কর্মকাণ্ড-আচরণ সাধারণের থেকে আর আলাদা থাকেনি। চরবাসী সাধারণ জনগণও লাঠিয়ালদের মতই যুদ্ধংদেহী মনোভাবাপন্ন হয়ে পড়ে এক সময়।

এরই ধারাবাহিকতায় আধুনিক যুগেও রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল চরমধুয়া, বাঁশগাড়ী, র্মীজারচর, নিলক্ষ্য, পড়াতলী, শ্রীনগর, চানপুর, চরআড়ালিয়া ও সদর উপজেলার আলোকবালী, চরদীঘলদী, করিমপুর ও নজরপুর ইউনিয়নে তুচ্ছ কারণেই বেঁধে যায় রক্তক্ষয়ী টেঁটাযুদ্ধ। এবং একের পর এক হতে থাকে শুরুতে বয়ান করা ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি।

দায়ী জনপ্রতিনিধিরাই, দমন করবার কেউ নেই!
ওইসব এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, পুলিশ কিছুদিন পরপর এসব এলাকাতে অভিযান চালিয়ে টেঁটা, বল্লমসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করলেও যুদ্ধবাজ চরবাসী খুব দ্রুতই পুনরায় তৈরি করে বা রেডিমেড কিনে এনে সমৃদ্ধ করে রাখে প্রিয় অস্ত্রভাণ্ডার। এভাবেই চলছে চরাঞ্চলের টেঁটাযুদ্ধ সংস্কৃতি। দেখবার কেউ নেই, বা এ সংস্কৃতি দমন করবারও যেন কেউ নেই।

এ ব্যাপারে কথা বললে রায়পুরা মডেল থানা ওসি আব্দুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এটা পূর্ব থেকে চলে আসছে, এ অঞ্চলের ট্রাডিশন। কোনো কিছু হতে না হতেই টেঁটা-বল্লম নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। আর দুর্গম এলাকা হওয়ায় পুলিশ জানার পরও ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে কমপক্ষে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এর মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে যায়।’

তিনি জানান, এখানকার জনপ্রতিনিধিরাই এসব ঘটনার সৃষ্টি করেন। নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তারকে কেন্দ্র করে তারা ঝগড়া-লড়াই জিইয়ে রাখেন।

‘এসব জনপ্রতিনিধিরা সচেতন না হলে শুধু প্রশাসনের চেষ্টায় টেঁটাযুদ্ধ রোধ করা যাবে না।’ বললেন ওসি আব্দুল বাতেন।

সামাজিকভাবে প্রতিরোধ ছাড়া বন্ধ হবে না
নরসিংদী সদর মডেল থানা সেকেন্ড অফিসার বিপ্লব কুমার দত্ত চৌধুরী এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে বলেন, ‘চরাঞ্চলের টেঁটাযুদ্ধ সামাজিকভাবে প্রতিরোধ ছাড়া আমাদের দ্বারা বন্ধ করা সম্ভব না।’

তিনি জানান, কিছু কিছু এলাকায় পৌঁছাতে ৩/৪ ঘণ্টা সময়ও লাগে। গিয়ে দেখা যায় লাড়াই শেষ। কিন্তু পুলিশ ফিরে আসার পর আবার বেঁধে যায় যুদ্ধ। পুলিশেরই সেখানে নিরাপত্তা নেই। রাত থাকা যায় না। রাতের বেলা আসামি ধরতে গিয়ে দেখা গেছে- পুলিশের ওপরও টেঁটা হামলা হয়েছে।
   

লড়াই জিউয়ে রাখেন জনপ্রতিনিধিরাই
বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হাতেই রয়েছে এখানকার টেঁটাযুদ্ধ সংস্কৃতির কলকাঠি।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সদর উপজেলার আলোকবালি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক কোনও বক্তব্য দিতে রাজি হননি। উল্লেখ্য, তার বিরুদ্ধে এলাকায় নানা বিরোধ-দ্বন্দ্বে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

তবে সদরপুর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারিস মিয়া জানান, চরাঞ্চলের এই টেঁটাযুদ্ধ দীর্ঘদিনের ট্রাডিশন। একেবারে তুচ্ছ কারণে এখানকার মানুষ টেঁটাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ‘আমার বা কারও একক প্রচেষ্টায় এটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। সামাজিকভাবে সবাই মিলে এটা প্রতিরোধ করতে হবে।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য নরসিংদী-১ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম হিরুর সেলফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

No comments

Powered by Blogger.