দুই ভাগ করা নগরবাসী মানবে না : খোকা by মোশাররফ বাবলু

রকার জোরপূর্বক ঢাকা মহানগরীকে ভাগ করছে। জনমত গড়ে তোলার মাধ্যমে নগরবাসীসহ সারা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে। ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে এ কথার পাশাপাশি বলেছেন, 'সংসদে বিল পাস হোক আর না হোক, নগর ভবনে আজ আমি শেষ অফিস করেছি।' গত ৯ বছরের সিটি করপোরেশনের কাজের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে আমার বলা উচিত নয়। কাজের মূল্যায়ন করবে নগরবাসী।'


ডিসিসি ভাগের সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন কি না_জানতে চাইলে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, 'সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে ডিসিসিকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সংসদে বিল করতে যাচ্ছে। মহানগরীকে দুই ভাগে বিভক্ত করা আমরা কখনো মেনে নেব না। শুধু আমরা কেন, নগরবাসীও মেনে নিবে না।'
আইনগতভাবে প্রতিরোধ করার সুযোগ আছে কি না_জানতে চাইলে খোকা বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে এখনই ভাবছি না।' সংসদে বিল পাস হলে হরতাল দেওয়া হবে কি না_এ প্রশ্নে খোকা বলেন, 'হরতালের বিষয়ে দলীয় ফোরাম সিদ্ধান্ত নেবে।'
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না_জানতে চাইলে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, 'ডিসিসি ভাগ করার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ যখন নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, তখনই চেয়ারপারসনের সঙ্গে কথা বলেছি। আবারও আলোচনা করব। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সারা দেশের জনগণ নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।' এ ব্যাপারে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি আসছে কি না_জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলীয় ফোরামে এ নিয়ে আবারও আলোচনা হবে। আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা বলা যাবে।'
মেয়াদের প্রায় দ্বিগুণ সময় মেয়র হিসেবে থাকাটাকে কিভাবে দেখছেন_প্রশ্নের জবাবে খোকা বলেন, 'মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ক্ষমতা ধরে রাখার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। আমিসহ আমার দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন দেওয়ার দাবি করেছি। সরকার সহযোগিতা না করায় নির্বাচন সম্ভব হয়নি।'
২০০২ সালের মার্চ মাসে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একই সালের ১৫ মে থেকে গত প্রায় সাড়ে ৯ বছর ধরে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন সাদেক হোসেন খোকা। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ডিসিসি ভাগের বিল পাস হলে তিনি আর মেয়র পদে থাকছেন না। আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করারও হয়তো প্রয়োজন হবে না। সেই হিসেব করেই গতকাল সোমবার তিনি মেয়র হিসেবে নগর ভবনে শেষ অফিস করেছেন। ডিসিসি কার্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। কিছু ফাইলপত্রে স্বাক্ষরও করেন। নিজস্ব কিছু কাগজপত্রও গোছানো হয়।
সাদেক হোসেন খোকা বলেন, '২০০২ সালের ১৫ মে এক প্রতিকূল পরিবেশে দায়িত্ব গ্রহণের সময় সিটি করপোরেশনে ছিল ভাঙা রাস্তা, মশার আখড়া এবং ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। গত সাড়ে ৯ বছরে ঢাকার অনেক উন্নয়নকাজ হয়েছে। মেয়র হওয়ার পর সিটি করপোরেশনের দেনা পরিশোধ এবং ডিসিসিকে উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। আমি কী করেছি, তা মানুষ মূল্যায়ন করবে। নগরবাসীর উপকার ছাড়া কোনো ক্ষতি করেছি বলে আমার মনে পড়ে না। তবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোনো ভুলত্রুটি হতে পারে। ডিসিসির সব কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করেছি। কর্মকর্তারা আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন।'
ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা বলেন, 'সরকার কেন ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করতে গেল, বুঝতে পারছি না। যতটা মনে হয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই ডিসিসি ভাগ করা হচ্ছে। আমি তো আগেই বলেছি, আমি নির্বাচন করব না। এর পরও ঢাকাকে ভাগ করবেন না। কিন্তু সরকার তো আমার কথার গুরুত্ব দিচ্ছে না।'

No comments

Powered by Blogger.