আন্তর্জাতিক : তাহরির স্কয়ার-বিপ্লব চলছে, চলবে...! by শ্রাবণ সরকার

ফের অগি্নগর্ভ তাহরির স্কয়ার। আবার ফিরে এল মাস দশেক আগের অগি্নঝরা 'ফেব্রুয়ারি'! এই সহস্রাব্দের প্রথম শতকের স্বতঃস্ফূর্ত ও সফলতম গণজাগরণের নজির হয়ে বিশ্ব-ইতিহাসের স্থায়ী আসনখানি হয়তো বরাদ্দ থাকবে মিসর-কায়রো-তাহরির স্কয়ারের জন্য! 'আরব জাগরণ', 'আরব বসন্ত' কিংবা 'জুঁইবিপ্লব বা যূথীবিপ্লব' নামের এই পরিবর্তনপ্রবণ ও 'অঘটনঘটনপটিয়সী' গণ-অভ্যুত্থানের 'সূতিকাগার' অবশ্য আরব দুনিয়ার আরেক দেশ তিউনিসিয়া।


তবে আরব জাহানের এ দেশ হয়ে, ও দেশ হয়ে প্রায় সব দেশতক মহামারির প্রাদুর্ভাবের মতো ছড়িয়ে পড়া এই বিপ্লবের 'তীর্থস্থানের' মান-মর্যাদায় অভিষিক্ত তাহরির স্কয়ার_বিশ্বের সামনে, সময়ের চোখে, ইতিহাসের বিচারে...বিশ্ববাসীর কাছে!
গণদাবি ও জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে, ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সফলতার অনন্য দৃষ্টান্তের সমনামও আজ তাই 'তাহরির স্কয়ার'! স্মরণাতীতকালের সেই অভূতপূর্ব মানব-উত্থানে পতন ঘটে স্বৈরশাসক হোসনি মুবারকের।
তাহলে আবার কেন গণবিক্ষোভের আগুনে উত্তপ্ত 'তাহরির স্কয়ার'? সেখানে গত কয়েক দিনের সংঘাত-সংঘর্ষে এরই মধ্যে ঝরে গেছে অন্তত ৪০টি তাজা প্রাণ, যাদের বেশির ভাগই ছিল সম্ভাবনাময় তরুণ-যুবা। শরীরে-পাঁজরে-পিঠে দাঙ্গা-পুলিশি আঘাতের ক্ষত নিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে তিন সহস্রাধিক মানুষ। আর কতজনকে গারদে পোরা হয়েছে, তার হিসাব অজানা।
এই যে ফের জনগণের দখলে তাহরির স্কয়ার, গণ-আন্দোলনের ফিরে আসা, ক্ষোভের বোমা বিস্ফোরিত হওয়া, কেন? তার মানে কি মিসরীয়দের মূল সমস্যা একনায়ক মুবারক তথা তাঁর একপেশে শাসনামল নয়?
আমরা অধিকাংশ বিশ্ববাসী যে তখন মিসরীয়দের আন্দোলনকে 'মুবারকবিরোধী' তকমায় দিব্যজ্ঞানে সঠিক ঠাওরেছিলাম, তা আড়েদিঘে ভুল প্রমাণিত করল আবার তাহরির স্কয়ারের গণজমায়েত, প্রাণহানি, রক্তক্ষয়। মিসরীয়দের একটাই দাবি_নিখাদ গণতন্ত্র।

আবার কেন 'তাহরির স্কয়ার'?
এই যাত্রায় বিক্ষুব্ধ মিসরবাসীর তাহরির স্কয়ারে জমায়েত হওয়ার নেপথ্য কারণ নানাবিধ ও বহুমুখী। গত ফেব্রুয়ারিতে গণরোষের মুখে ভূপাতিত হন স্বেচ্ছাচারী শাসক প্রেসিডেন্ট মুবারক। লাগাতার ১৮ দিনের বিক্ষোভের মুখে একদা পরাক্রমশালী মুবারকের পতনের পর সুষ্ঠু ও টেকসই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় উত্তরণে সেনা কর্মকর্তাদের হাতে দেশের ক্ষমতাভার তুলে দেয় মিসরের মানুষ। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন শাসনভার নেয় সুপ্রিম কাউন্সিল অব দ্য আর্মড ফোর্সেস (এসসিএএফ)। আন্দোলনকারীদের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়েই ক্ষমতাভার নেয় তারা। তৎকালীন মন্ত্রিসভার পদত্যাগের পর হাজারো জল্পনা শেষে প্রধানমন্ত্রী এসাম শরাফের নেতৃত্বে গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা। তবে প্রথম দিন থেকেই এ সরকারের অস্তিত্ব ছিল নামমাত্র; দেশ পরিচালনার মূল ক্ষমতা থেকেছে সর্বোচ্চ সেনা পরিষদের (এসসিএএফ) হাতে, ভেতর-বাহির থেকে কলকাঠি নেড়েছেন পরিষদপ্রধান ফিল্ড মার্শাল হুসেইন মোহাম্মদ তানতাবি। মুবারকের শাসনামলের পুরো দুই দশক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তানতাবি। সেনাবাহিনীর 'মুবারকপন্থী' এই কর্তাব্যক্তির বাইরেও সেনা পরিষদের অনেক কর্মকর্তাই মুবারক জামানায় উচ্চপদে আসীন ছিলেন। সুতরাং শুরু থেকেই মুবারকের 'অনুগত' তকমা আঁটা পরিষদের ব্যাপারে মিসরীয়রা নিঃসংশয় হতে পারেনি, পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারেনি সেনা কর্মকর্তাদের ওপর। তবে এর পরও ধৈর্য ধরেছিল মানুষ_গণতন্ত্রে উত্তরণের আকাঙ্ক্ষায় অপেক্ষা করছিল তারা। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতি তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিয়েছে।

বিন্দু বিন্দু করেই মহাসিন্ধু
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় উত্তরণের অংশ হিসেবে শুরুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে সেনা কর্মকর্তারা আলোচনার উদ্যোগ নিলেও পরে এই ধারা আর সচল রাখা হয়নি। ঘোষণা দেওয়া হয়, সাংবিধানিক সংস্কার শেষে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করতে ২০১২ সালের শেষ পর্যন্ত সময় গড়াতে পারে। এমনকি পরের বছরও তা পড়তে পারে। বিষয়টি মন থেকে মেনে নিতে না পারলেও নিশ্চুপই ছিল মিসরীয়রা।
এরপর মুবারক হটাও বিপ্লবে অংশ নেওয়া যুব সমাজকে ক্রমেই কোণঠাসা করতে থাকে সেনা পরিষদ। এতেও জনমনে সৃষ্টি হয় ক্ষোভ। প্রায় ১২ হাজার বেসামরিক নাগরিককে সামরিক আদালতের কাঠগড়ায় তোলে সরকার। বিভিন্ন মেয়াদে তাদের দেওয়া হয় কারাদণ্ড। এটাও ক্ষোভকে উসকে দেয় মানুষের মনে।
মিসরের হাল-হকিকতের ওপর নজর রাখা অনেকেই অভিযোগ করছেন, বাইরে থেকে খোলা চোখে ধরা না পড়লেও সংবাদমাধ্যমের ওপর বর্তমান সরকারের কড়া নজরদারি রয়েছে। গত কয়েক মাসে অর্থনীতির গতি সচল হয়নি এতটুকু।
এত সব 'গণবিরোধী' কারণে গণমানুষের শান্ত থাকার কথা নয়। এর ওপর চলতি মাসের গোড়ার দিকে সেনাবাহিনীকে সব দায় থেকে অব্যাহতি পাওয়ার সুযোগ রেখে সংবিধানের খসড়া তৈরি করা হলে তা ক্ষোভের বারুদে অগি্নসংযোগের কাজ করে। আর সেই আগুনে বিশুদ্ধ ঘি ঢেলে দেয় মানুষের নজর এড়িয়ে বাজেট অনুমোদনের বিষয়টি। সুতরাং গত ১৮ নভেম্বর 'ফেব্রুয়ারির দিনপঞ্জি' আবার ফিরে আসে ঐতিহাসিক তাহরির স্কয়ারে।

সেনাবাহিনীর একাল-সেকাল
বলা বাহুল্য, গত ফেব্রুয়ারির গণ-অভ্যুত্থানে জনগণের বিপক্ষে দাঁড়ায়নি সেনাবাহিনী। বরং বিক্ষোভকারীদের দমনে সরকারি আদেশ মেনে অস্ত্র হাতে সেনাবাহিনী মাঠে না নামায় মুবারকের পতন ত্বরান্বিত হয়। জনগণের সঙ্গে 'বন্ধুসুলভ' আচরণকারী সেই সেনাবাহিনীরই এখন রুদ্ররূপ! আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, মুবারকের চেয়ে নিষ্ঠুর কায়দায় দমন-পীড়ন চালিয়েছে সেনা পরিষদ।
গত সপ্তাহের শুক্রবার থেকে যে 'শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ' শুরু হয়েছিল, তা 'বিশৃঙ্খল' চেহারা নিতে শুরু করে পরদিন শনিবার রাত থেকেই। যথেচ্ছ লাঠি-গুলি-কাঁদানে গ্যাস দিয়েও বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি নিরাপত্তাবাহিনী। হু-হু করে বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে মানুষের যুদ্ধংদেহী মনোবল! অবস্থা বেগতিক দেখে বিক্ষোভ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক প্রথম প্রতিক্রিয়ায় গোটা বিষয়টিকে 'দুঃখজনক' হিসেবে অভিহিত করে এসসিএএফ। ২০১২ সালের জুলাইয়ের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণাও দেওয়া হয়। কিন্তু এটুকুই যথেষ্ট মনে হয়নি বিক্ষোভকারীদের কাছে। তারা তানতাবির পদত্যাগসহ সেনাবাহিনীর ব্যারাকে ফিরে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণার দাবি জানায়। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত উদারপন্থী ও মুক্তিকামী বিক্ষোভকারীরা সাফ জানিয়ে দেয়, প্রয়োজনে জান দেবে, কিন্তু সামরিক বাহিনীর শাসন নৈবচ নৈবচ। এ অবস্থায় মন্ত্রিসভার পদত্যাগ আরো জটিল করে তোলে পরিস্থিতি। নতুন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কামাল আল-গানজুরিকে গত শুক্রবার নিয়োগ দেয় সেনা পরিষদ। ক্ষমতাচ্যুত মুবারকের জামানায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা গানজুরির নিয়োগ স্বাভাবিকভাবেই বিক্ষোভকারীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। নিজেদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে_এমন প্রতিশ্রুতি তাহরির স্কয়ারের বিপ্লবী জনতাকে শান্ত করতে পারেনি। তারা এখনই সেনাশাসনের অবসান চায়।

কী আছে সেনাকর্তাদের মনে!
মুবারকের জমানায় নিষিদ্ধঘোষিত কট্টরপন্থী রাজনৈতিক গ্রুপ মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দেয় সেনা পরিষদ। স্বভাবতই বিক্ষোভকারীরা এই চুক্তি মেনে নিতে পারেনি। চলমান এই বিক্ষোভ থেকে দূরে থাকা এবং কট্টর ইসরায়েলবিরোধী ব্রাদারহুড মনে করে, পার্লামেন্ট নির্বাচন বানচাল করাই এ বিক্ষোভের উদ্দেশ্য। গ্রুপটির বিশ্বাস, পার্লামেন্ট নির্বাচনে তাদের ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি বিপুলভাবে জয়ী হয়ে পার্লামেন্ট নিয়ন্ত্রণ করবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পাল্টা সমাবেশের ঘোষণা দেয় তারা। (এই লেখা প্রেসে যাওয়া পর্যন্ত এটা নিশ্চিত হওয়ার উপায় ছিল না, পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভাগ্যে কী ঘটল। গতকাল সোমবার এটা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।)
এ পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় অনেকেই মনে করেন, মিসরের গণতন্ত্রের যাত্রায় যদি কট্টরপন্থী এবং ইসরায়েলবিরোধীরা শক্তিশালী হয়, তাহলে সেই গণতন্ত্রের চেয়ে সামরিক কর্তৃত্বই পশ্চিমাদের কাছে শ্রেয়তর বিবেচিত হওয়ার কথা! বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র ইসরায়েলের কাছে ব্রাদারহুডের গ্রহণযোগ্যতা থাকার কোনো কারণ নেই। আর তাই কট্টরপন্থীরা যাতে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াতে না পারে, তাদের উত্থান রোধের চেষ্টা পশ্চিমারা করবে বলেই ধরে নেওয়া যায়। ছিদ্রান্বেষীরা বলছেন, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ইসলামপন্থীদের 'দহরম-মহরম' আঁচ করেই বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। অথচ এত দিন ধরে সেনা পরিষদের 'টালবাহানা'র ব্যাপারে মুখ খোলেনি তারা। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে গণবিক্ষোভের সময় নেওয়া ভূমিকার জন্য সেনাবাহিনীকে মিসর বিপ্লবের 'অভিভাবক' হিসেবে অভিহিত করেছিল পশ্চিমারা। কিন্তু সেই অভিভাবকের ওপর আর তারা ভরসা রাখতে পারছে না!
বিশ্বের দশম বৃহত্তম মিসরীয় সামরিক বাহিনী দেশটির সবচেয়ে সুবিধাভোগী শ্রেণী। শান-শওকতময় চাকরির পাশাপাশি দেশটির এক বিশাল ব্যবসায়িক গোষ্ঠীও এই সামরিক বাহিনী। বলা বাহুল্য, আরব বিশ্ব এবং আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যেও সবচেয়ে বড় সামরিক বাহিনী মিসরের। বহু বছর ধরে বিপুল সুযোগ-সুবিধা ভোগ এবং প্রভাব খাটিয়ে আসা সামরিক বাহিনী তাদের অবস্থান অক্ষুণ্ন রাখতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। অনেকের আশঙ্কা, পাকিস্তান বা তুরস্কের মতো গণতান্ত্রিক বাতাবরণে নিজেদের রাজনৈতিক অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে অনেক কূটকৌশলেরও আশ্রয় নিতে পারে সেনাবাহিনী!

আরব জাহান থেকে বিশ্বভূমিতে 'তাহরির স্কয়ার'!
'আরব বসন্ত' মানুষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, তৃণমূল পর্যায় থেকেও আন্দোলন দানা বাঁধে এবং সেই আন্দোলন 'পরিপূর্ণ' আন্দোলনের মতোই আচরণ করে। যোগ্য নেতৃত্ব এবং সুসংগঠিত শক্তিই একমাত্র আন্দোলনের গর্ভ নয়। কোনো পূর্বাভাস ছাড়াও নিস্তরঙ্গ জনসমুদ্রে উত্তাল সুনামির জন্ম হতে পারে। আর তা জোরসে আছড়ে পড়তে পারে মসনদের বালুতটে!
অন্যদিকে, সুনির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া ছাড়াও মানুষ পথে নামতে পারে। আমেরিকাসহ বিশ্বব্যাপী চলমান 'ওয়াল স্ট্রিট দখল করো (অকিউপাই ওয়াল স্ট্রিট), আন্দোলনে শামিল হওয়া হাজারো-লাখো-কোটি মানুষের প্রতিবাদ-কর্মসূচি তারই প্রমাণ। নিউ ইয়র্কের জুকোটি পার্কে 'ভূমিষ্ঠ' হওয়া এই আন্দোলন আজ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। বস্তুত এসব আন্দোলনকারী কোনো তালিকা প্রণয়ন করে দাবি-দাওয়ার ফিরিস্তি তুলে ধরেনি, পেশ করেনি গাদাগুচ্ছের অভাব-অভিযোগ। আন্দোলনের লক্ষ্যও হয়তো সুনির্দিষ্ট নয়, তবে তার বার্তা পরিষ্কার। আমরা বঞ্চিত, গোটাকয়েক 'তুমি' অতিরঞ্জিত! এই আমরা ৯৯ শতাংশ।
আরব জাগরণের মতো তৃণমূল থেকে মাথা তোলা এই আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নীতিনির্ধারকদের কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। উপেক্ষা করতে পারছে না সরকার বা গণমাধ্যম কেউ-ই। কে জানত, মাত্র কয়েক ডজন মানুষের শুরু করা এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে গোটা দেশে, তাও আবার মাত্র সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে।
আন্দোলনকারীরা বলছে, তারা আরব বিশ্ব তোলপাড় করে দেওয়া গণ-আন্দোলন তথা 'তাহরির স্কয়ার' থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছে। নির্দিষ্ট কোনো দল, সংগঠন বা নেতৃত্বের ডাকে রাস্তায় নামেনি তারা, নেমেছে ভেতরের 'তাগিদ' থেকে।
এই 'তাগিদ' আসলে বৈষম্য-বঞ্চনার বিরুদ্ধে গণমানুষের বিদ্রোহ, কুশাসনের প্রতি ঘৃণা আর দাবি আদায়ে বিপ্লব-স্পন্দিত বুকের 'লেনিনদের' জেগে ওঠা!
মানুষের ভেতর 'তাগিদ' যত দিন বেঁচে থাকবে, তত দিন নতুন নতুন 'তাহরির স্কয়ার' জন্ম নেবে।

No comments

Powered by Blogger.