কুমিল্লা সিটি নির্বাচন-বাধা দিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা : সাখাওয়াত

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন কেউ বাধাগ্রস্ত বা ব্যাহত করতে চাইলে নির্বাচনী আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে কেউ না এলে কিছু যায়-আসে না। কিন্তু কেউ নির্বাচন নষ্ট করতে চাইলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


গতকাল সোমবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন। কুমিল্লার রিটার্নিং অফিসারের হলরুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে কমিশনের জোরালো অবস্থান তুলে ধরে 'চ্যালেঞ্জ' ছুড়ে দেন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, 'আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, ইভিএমে কোথায় সমস্যা আছে দেখান।'
নির্বাচন কমিশনার বড় দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'দলের সমর্থন দেওয়া-না দেওয়া নিয়ে আপনারা বাড়াবাড়ি করবেন না। একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে আমাদের সহযোগিতা করুন।' এ বিষয়ে মিডিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনারাও কাউকে দলের প্রার্থী উল্লেখ না করলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে।'
বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার হুমকি প্রসঙ্গে সাখাওয়াত বলেন, 'কেউ যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না চায়_তাহলে নেবে না, কিন্তু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে কিংবা ব্যাহত করতে চাইলে নির্বাচনী আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' সভায় ইভিএম, সেনাবাহিনী, প্রশাসন ও নির্বাচনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন কমিশনার। পরে তিনি সম্ভাব্য প্রার্থী ও বিশিষ্টজনদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
সভায় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিদলীয় সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীরা উপস্থিত থাকলেও বিএনপির সম্ভাব্য কোনো মেয়র প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিপুলসংখ্যক কাউন্সিলর প্রার্থী সভায় যোগ দেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন, জেলা প্রশাসক রেজাউল আহসান, পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে গতকাল সকালে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সাখাওয়াত হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, 'নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি সহ্য করা হবে না।'
সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, 'আমরা কোনো প্রকার বদনাম নিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে বিদায় নিতে চাই না। নির্বাচন পরিচালনা বিষয়ে কারো কোনো অপারগতা থাকলে আগে থেকে সম্মানজনকভাবে সরে যান। এরপর কোনো কথা ওঠলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল আহসান। সভায় জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসক, র‌্যাব, বিজিবি ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির বিক্ষোভ : এদিকে নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি বাতিল এবং সেনা মোতায়েনের দাবিতে গতকাল দুপুরে কুমিল্লা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। গতকাল সকাল থেকে শহরের কান্দিরপাড়ে দলের জেলা কার্যালয়ে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, শহর বিএনপির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, জসিম উদ্দিন ভিপি প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.