ইফতেখারের সেঞ্চুরি আল-আমিনের ৫ উইকেট

গ্রজ আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে কী করেন, কে জানে। তবে গতকাল জাতীয় লিগে শক্তিধর সিলেটের বিপক্ষে বরিশালকে ভালো কিছু করার মঞ্চ পাইয়ে দিয়েছেন শাহরিয়ার নাফীসের অনুজ ইফতেখার নাঈম। তাঁর সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ২৫০ রান তুলে ষষ্ঠ রাউন্ডের প্রথম দিন শেষ করেছে বরিশাল। আজ অধিনায়ক শাহীন হোসেনের সেঞ্চুরি সম্ভাবনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বরিশালের ভাগ্যও। ফতুল্লায় এখনো সেঞ্চুরি পাননি রংপুরের কোনো


ব্যাটসম্যান। তবু সবার কাঁধে চড়ে দলটির ৫ উইকেটে ৩০৪ রান তুলে ফেলা দেখে চিন্তার ভাঁজ পড়ার কথা ঢাকা মেট্রোর কপালে! এদিকে প্রথম দিনেই প্রথম ইনিংসে 'লিড' নেওয়ার মরণ লড়াই শুরু হয়ে গেছে বরিশালে। ঢাকা বিভাগের ১৩১ রানের ইনিংসের জবাবে মাত্র ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে রাজশাহীও। আর রাজশাহী স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামকে ২০০ রানে অল আউট করা খুলনা ৫৮ রানে হারিয়েছে ৩ উইকেট। ৫ উইকেট নিয়ে এদিনের নায়ক খুলনার পেসার আল-আমিন হোসেন।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নামা সিলেটকে দারুণ শুরুই উপহার দিয়েছিলেন জাতীয় ক্রিকেটার তাপস বৈশ্য। এ পেসারের প্রথম স্পেলেই ৩৬ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে বসে বরিশাল। তবে চতুর্থ উইকেটে ইফতেখার নাঈম এবং শাহীন হোসেনের মধ্যকার ১৮৮ রানের জুটি স্বস্তি এনে দেয় বরিশালের ড্রেসিংরুমে। ২৩৭ মিনিট এবং ১৬৯ বলে সেঞ্চুরি করা ইফতেখার সিলেটের পেসার আবু জাহেদের বলে আউট হন ১৩২ রান করে। তবে এখনো ক্রিজে আছেন ৬৩ রান করতে ৩০১ মিনিট ব্যাটিং করে ফেলা শাহীন।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উন্নতির স্বাভাবিক নিয়মটা এবার যেন মেনে চলছে শুধু রংপুর বিভাগই। জাতীয় লিগের নবাগতদের উন্নতির সে ধারা গতকাল চিন্তায় ফেলে দিয়েছে শক্তিশালী ঢাকা মেট্রোকে। অধিনায়ক তারিক আহমেদ মাত্র ১৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন। তবে তাঁর দল প্রথম ইনিংসেই ঢাকা মেট্রোকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়ে গেছে। অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটি তানভীর হায়দার এবং আরিফুল হকের মধ্যকার ৮৪ রানের জুটি কার্যত স্বপ্নই দেখাচ্ছে রংপুরকে।
ঢাকা বিভাগের বোলিংটা তবু ভালো। কিন্তু ব্যাটিং যাচ্ছেতাই। ব্যর্থতার এ ধারাবাহিকতা ষষ্ঠ রাউন্ডেও প্রকট ঢাকার ব্যাটিংয়ে। রাজশাহীর বিপক্ষে দলটির প্রথম ইনিংস শেষ মাত্র ১৩১ রানে। ৫২ রানে ৫ উইকেট হারানো এ দলটা অত দূর যেতে সক্ষম নয় লোয়ার অর্ডারে নামা মোশারফ হোসেন এবং মোহাম্মদ শরিফের কল্যাণে। ঢাকার ইনিংসের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত দুটি স্কোরই এঁদের। তবে ৪১ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার আনন্দটা ড্রেসিংরুমে বসে একরকম ভুলতেই বসেছেন সাকলাইন সজিব। ৩৯ রানে দলের ৩ উইকেট পড়ে যাওয়াতেই না প্রথম ইনিংসে 'লিড' নেওয়ার জন্য ব্যাটটাও শক্ত হাতে ধরতে হয় রাজশাহীর বাঁহাতি এ স্পিনারকে!
৩ উইকেটে ১৪৪ রান নিদারুণ ব্যাটিং ব্যর্থতার জাতীয় লিগে দারুণ ব্যাপার। কিন্তু তা আর ধরে রাখতে পারেনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় দল। খুলনার বাঁহাতি স্পিনার মুরাদ খান পতনের পথ দেখিয়ে দেওয়ার পর পুরনো বলে আল-আমিনের শেষ স্পেলে সর্বস্বান্ত চট্টগ্রাম। সে স্পেলে ৪ উইকেট নিয়েছেন আল-আমিন। আর দিনের প্রথম উইকেটটা মিলে তাঁর বোলিং ফিগার ১৮.৫-৬-৫৩-৫। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া অধিনায়ক নাজিমউদ্দিনের সান্ত্বনা এবারের লিগে আরেকটি ফিফটি এবং দলকে ২০০ রানে নিয়ে আরেকটি ব্যাটিং বোনাস পয়েন্ট প্রাপ্তি। এখন লড়াইয়ে খুলনার অধিনায়ক তুষার ইমরান। ৫৮ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের জন্য প্রতিপক্ষের ২০০ রানও মরণপণ লড়াইয়ের ক্ষেত্র!

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বরিশাল-সিলেট : বরিশাল ১ম ইনিংস ৯০ ওভার ২৫০/৬ (ইফতেখার ১৩২, শাহীন ব্যাটিং ৬৩; তাপস বৈশ্য ৩/৪২, আবু জাহেদ ৩/৬৭)।
ঢাকা মেট্রো-রংপুর : রংপুর ১ম ইনিংস ৯০ ওভার ৩০৪/৫ (রবিউল ৪৫, তারিক ৮৫, তানভীর ব্যাটিং ৪৮, আরিফুল ব্যাটিং ৪১)।
ঢাকা বিভাগ-রাজশাহী : ঢাকা ১ম ইনিংস ৬৪.২ ওভার ১৩১/১০ (মোশারফ ২৪, শরিফ ৩৭; মুক্তার ৩/৩১, সাকলাইন ৪/৪১)।
চট্টগ্রাম-খুলনা : চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস ৫৫.২ ওভার ২০০/১০ (নাজিমউদ্দিন ৬৪; আল-আমিন ৫/৫৩, মুরাদ ৩/৩০)।

No comments

Powered by Blogger.