অভিযুক্তদের মিডিয়ায় আনা মানবাধিকার লঙ্ঘন- জমির, মওদুদ প্রমুখের দাবি

সুপ্রীমকোর্টের ৯ জন সিনিয়র আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিভিন্ন ফৌজদারী মামলায় আটক অভিযুক্তদের মিডিয়ার সামনে এনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেয়া হচ্ছে, যা সংবিধান, মানবাধিকার ও আইনের শাসন লঙ্ঘনের শামিল।
এভাবে মিডিয়ার সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেয়া হলে মামলার নিরপেৰ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য তদনত্ম প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রসত্ম করবে। সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ কাউকে দোষ স্বীকারে বাধ্য করার ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আইনজীবীরা বলেন, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আনত্মর্জাতিক চুক্তি ১৯৬৬-এর ৭ ও ১০ অনুচ্ছেদ, আনত্মর্জাতিক মানবাধিকারে ঘোষণাপত্র ১৯৪৮-এর ৫নং অনুচ্ছেদ ব্যক্তির প্রতি অমানবিক আচরণ ও নিষ্ঠুরতা, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইকরামের স্বীকারোক্তি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে।
আইনজীবীরা বিবৃতিতে আরও বলেন, যে দেশে রিমান্ডের সুযোগের অপব্যবহারের হাজারো নজির রয়েছে, যেখানে রয়েছে রিমান্ডের নামে অমানুষিক নির্যাতন, শারীরিক ও মানসিক আঘাত, দোষ স্বীকারে বাধ্য করার নানা অপকৌশল গ্রহণের হাজারো ঘটনা। যেখানে সুস্থ মানুষ রিমান্ড শেষে মেরম্নদ- সোজা করতে না পারার নজির রয়েছে শত শত। সেখানে ইকরাম কর্তৃক র্যাবের কাছে স্বীকারোক্তি প্রদান মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার আমাদের কাছে বিস্ময়কর মনে হয়নি।
ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বেচ্ছাপ্রণোদিত স্বীকারোক্তি নেবেন ম্যাজিস্ট্রেট। এর গোপনীয়তা রৰা করতে হয় শতভাগ। তাছাড়া মামলা তদনত্মের পর্যায়ে থাকলে পুলিশ হেফাজতে ১৬৭ ধারায় প্রদত্ত দোষ স্বীকারের কোন সাৰ্যগত মূল্যই নেই। রাজনৈতিক স্বার্থে জোর করে এ দেশে যে স্বীকারোক্তি রিমান্ডের নামে আদায় করা হচ্ছে তা গুরম্নতর আপত্তিকর।
আইনজীবীরা এই কর্মকা-ের নিন্দা করে বলেন, এ ধরনের মিডিয়া ট্রায়াল, রিমান্ডের নামে অমানবিকতা, নিষ্ঠুর ও সংবিধানবিরোধী কার্যকলাপ সংবিধান, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের পরিপন্থী। আইনের স্বাভাবিক গতিধারা বাধাগ্রসত্ম করে এমন কার্যক্রম থেকে সকলকে সংযত থাকতে হবে। বিবৃতিদানকারীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, আ জা মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী ও ব্যারিস্টার আব্দুর রেজ্জাক।

No comments

Powered by Blogger.