ব্রহ্মপুত্রের উৎসে তিন বাঁধ দিচ্ছে চীন?

ভারতের সকল আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে চীন বার বার শত্রুতামূলক কাজ করে চলেছে। এর আগে ব্রহ্মপুত্রের উৎস স্থানে তিব্বতে চীন বৃহত বাঁধ নির্মাণ করেছে।
সম্প্রতি চীনের সরকার তিব্বতে আরও তিনটি বাঁধ নির্মাণের জন্য এক প্রকল্পে মঞ্জুরি দিয়েছে। এই প্রকল্পগুলো কার্যকর করা হবে তিব্বতে ব্রহ্মপুত্রের উৎসস্থলে দাগু, জিয়াচা ও জিএকসুতে। চীনে ব্রহ্মপুত্রের নাম ইয়ার্লুং জাংবো। চীনের ১২তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত এই প্রকল্পগুলো তথা বাঁধগুলো নির্মিত হলে ব্রহ্মপুত্রের নিম্নস্থলে ব্যাপক জলসঙ্কট দেখা দেবে। অনেক ক্ষেত্রে জল শুকিয়ে যাবে। পূর্বোত্তরে অরুণাচল প্রদেশ এবং অসমে জলবিদ্যুত প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। হবে ব্যাপক বিদ্যুত সঙ্কট। বর্ষাকালে তেমনি জলোচ্ছ্বাসের ফলে চীনের এই বাঁধগুলো থেকে জল ছেড়ে দেয়া হলে ভেসে যাবে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অরুণাচল প্রদেশ, অসম, উত্তর বঙ্গ, এমনকি বাংলাদেশে শোচনীয় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। লাখ লাখ মানুষ গৃহহারা হবেন, লাখ লাখ কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হবে। প্রচুর কৃষিযোগ্য জমি বিলীন হয়ে যাবে নদীগর্ভে। ভারতের এই ব্যাপক ক্ষতি জেনেও চীন একের পর এক অনিষ্টকর কাজ করে চলেছে। আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সঈদ আকবরুদ্দিনকে আজ এই প্রতিবেদক সাংবাদিক সম্মেলনে চীন থেকে উদ্ভূত এই আশঙ্কার কথা তুলে ভারত সরকারের ভূমিকার ও প্রতিক্রিয়ার কথা জানতে চাইলে, আকবরুদ্দিন বলেন, ভারত সরকার ব্রহ্মপুত্রের সূত্রে চীনের গতিবিধির ওপর নজর রেখেছে। নিম্ন স্রোতের ভারতীয় এলাকার স্বার্থের কথা লক্ষ্যে রেখে ভারত চীন কর্তৃপক্ষের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এমনকি গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের সর্বস্তরেও এই আপত্তি তুলে ধরা হয়েছে বলে তিনি জানান। নিম্নস্রোতের রাজ্যগুলোর স্বার্থ যাতে ক্ষুণœ না হয় তার জন্য চীনের কাছে গ্যারান্টি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু চীন এ ব্যাপারে সম্মত হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি একে কূটনৈতিক বলে এড়িয়ে যান। এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।
উল্লেখযোগ্য ভারত বা বাংলাদেশকে চীনের তরফ থেকে এ ব্যাপারে আগে থেকে কিছুই বলা হয়নি। এটি আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গের শামিল। চীনা বিদেম মন্ত্রক মুখপাত্র হোং লি বেজিংয়ে বলেছেন, সীমান্তবর্তী নদীগুলোর ওপর উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে চীন সর্বদাই দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দিয়েছে। আপার এবং লোয়ার স্ট্রিম উভয়েরই স্বার্থ দেখে বৈজ্ঞানিক নতুন প্রকল্প নেয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.