দেশব্যাপী এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা আজ শুরু- অংশ নেবে ১৩ লাখ পরীক্ষার্থী

আজ থেকে দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা। এসএসসি ও সমমানের এ পরীক্ষায় এবার গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ১৬ হাজার ৮৫৪ জন কম।
আটটি সাধারণ, একটি মাদ্রাসা ও একটি কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৩ লাখ তিন হাজার ২০৩ শিক্ষার্থী। গত বছর ছিল ১৪ লাখ ২০ হাজার ৫৭ হাজার। আজ প্রথম দিন সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত বাংলা প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথম পত্রের পরীক্ষা হবে। এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে জটিলতায় পড়ে টানা দুদিন আন্দোলনের পর শিক্ষা বোর্ডের সহযোগিতায় প্রবেশপত্র হাতে পেয়েছে পুরান ঢাকার ইস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউশনের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার জন্য দায়ী অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন মিয়াকে আটক করে বৈধ শিক্ষার্থীদের হাতে প্রবেশপত্র তুলে দেয়া হয়েছে। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে নবম শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশন করেও এক লাখ ৮৬ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষার আগেই ঝরে পড়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঝরে পড়ার হার গত চার বছরে অনেক কমেছে। ২০০৯ সালে যেখানে এসএসসির আগে হার ছিল ৪৮ শতাংশ এবার সেই হার ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১০ সালে যারা প্রথম জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল, তারাই এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এবার এসএসসিতে তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ৫ মার্চ পর্যন্ত। ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ৬ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘আশা করছি শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশে পরীক্ষা হবে।’ তিনি আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর আজিমপুর সরকারী গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন। বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজী প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, গণিত ও উচ্চতর গণিত ছাড়া এবার সব বিষয়ের পরীক্ষা হবে সৃজনশীল প্রশ্নে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসজনিত প্রতিবন্ধী এবং হাত নেই এমন পরীক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। তাদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেয়া হবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে (www.dhakaeducationboard.gov.bd) পরীক্ষার সময়সূচী পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল পুরান ঢাকার ইস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউশনের অনেক শিক্ষার্থীর। প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড না পাওয়ায় দুদিন ধরে আন্দোলন করেছিল শিক্ষার্থীরা। দুদিন আগে অনেকেই প্রবেশ পত্র পায়নি। আবার প্রবেশপত্র এসেছে তাদের নিজের নাম, বাবার নাম ও গ্রুপ, ধর্ম ভুল এসেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের প্রধান সড়ক অবরোধ করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায় সেও পালায়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, বহিরাগত অনেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে প্রবেশপত্র দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিষয়টিতে হাত দেয় বোর্ড কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শুক্রবার বোর্ডে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এম ওঅহিদুজ্জামান ও অভিভাবকরা বিষয়টিতে পুলিশের সহায়তা চাইলে শনিবার অধ্যক্ষকে বোর্ডে ধরে এনে তার কাছ থেকে ফরম পূরণ ও রেজিস্ট্রেশনের ফি নিয়ে বৈধ শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেয়া হয়। একজন শিক্ষার্থী ভুয়া তাই তার প্রবেশপত্র দেয়া হয়ািন বলে জানিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। অভিযুক্ত অধ্যক্ষের শাস্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আপাতত পরীক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান করা হলো। তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাকে পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। এদিকে পরীক্ষায় নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ পরীক্ষার দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে পরীক্ষার দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ বন্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনিটি।

No comments

Powered by Blogger.