রেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া দুই মাসের মধ্যে ফের শুরু হচ্ছে

 রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক জানিয়েছেন, অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলের নিয়োগ প্রক্রিয়া দুই মাসের মধ্যে শুরু হবে। ১ হাজার ৪৪১টি খালাসী এবং ১৪৩টি এ্যাটেনডেন্ট পদে নিয়োগের জন্য নতুন দুটি কমিটিও গঠন করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
সরকারের চার বছরে রেলওয়ের সাফল্য ও নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে মঙ্গলবার রেল ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
রেলে নিয়োগের বিষয়ে মুজিবুল হক বলেন, গত বছরের ৯ এপ্রিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গেটে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর এ নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। পরে মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পুনরায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইলে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন হয়। উচ্চ আদালত পুনরায় অনুমতি দেয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
দুটি ক্যাটাগরিতে নিয়োগে নতুন করে কোন আবেদন করতে হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেই সময়ের আবেদনকারীদের মধ্যে খালাসী পদে ৩৬ হাজার ৪৫৩টি এবং এ্যাটেনডেন্ট পদে ১১ হাজার ৬৪৪টি সঠিক ও বৈধ আবেদনকারীর পরীক্ষা নেয়া হবে।
পরীক্ষার পর সরকারী বিধিবিধান এবং জেলা ও অন্যান্য কোটা বণ্টনসহ সব সরকারী নীতিমালা অনুসরণ করে নতুন কমিটি নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ করবে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, চূড়ান্ত সুপারিশ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে নিয়োগপত্র জারি করা হবে।
কবে নাগাদ নিয়োগের জন্য নতুন দুটি কমিটি গঠন করা হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, খুব শীঘ্রই এ কমিটি গঠনের পর সবাইকে জানানো হবে। নিয়োগ কমিটির কোন গাফিলতি পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও সতর্ক করেন রেলপথমন্ত্রী।
গত চার বছরে রেলে সফলতা শতভাগ বলে দাবি করেন রেলপথমন্ত্রী। চার বছরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কী কী ব্যর্থতা রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত চার বছরে শতভাগ সফলতা রয়েছে, কোন ব্যর্থতা নেই। রেলের সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাওয়া বা অবৈধভাবে হস্তান্তর করার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে মুজিব বলেন, মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর রেলের এক ইঞ্চি জমিও কাউকে দিইনি।
সূত্রমতে, জনবল সঙ্কটে থাকা রেল বিভাগে ১ হাজার ৫৮৪টি শূন্য পদে নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার, প্রক্রিয়াও শুরু হয়। কিন্তু গত বছরের এপ্রিলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠার পর ওই প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়। ওই সময় রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে যে বিপুল অর্থ পাওয়া গিয়েছিল, তাও নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা বলে অভিযোগ রয়েছে। সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে সুরঞ্জিতের পদত্যাগের কয়েক মাস পর নতুন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে রেলের দায়িত্ব নেন মুজিবুল হক। এর আগে দুটি ক্যাটাগরিতে নিয়োগের জন্য করা দুটি কমিটিতেই রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের তখনকার মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধাকে প্রধান করা হয়েছিল। ওই কমিটি দুটি বাতিল করা হয়েছে। বিজিবি ফটকে অর্থসহ ধরা পড়ার সময় ফারুকের গাড়িতে ইউসুফ মৃধাও ছিলেন। পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়। দুদকের মামলায় এখন তিনি কারাগারে রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী ছাড়াও রেল সচিব মোহাম্মদ মাহবুব উর রহমান, রেল মহাপরিচালক আবু তাহেরসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.