বিশেষ সাক্ষাৎকার-অর্থনৈতিক বিবেচনায় কিছু অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে হয় by এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম

এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি নেন। এরপর তিনি অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে তৎকালীন সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে (সিএসপি) যোগদান করেন এবং পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮০ সালে তিনি বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। সুদীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি জাতিসংঘের এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে পরিচালক, দেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সবশেষে ২০০৭-০৯ সময়কালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অনেক গবেষণা প্রবন্ধ ও প্রকাশনা আছে।
 সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আসজাদুল কিবরিয়া

প্রথম আলো  বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থাটা আপনি কীভাবে দেখছেন?
মির্জ্জা আজিজ  অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি খুব একটা উজ্জ্বল নয়। বিশেষ করে অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অংশই এখন বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে। প্রথমেই মনে রাখা দরকার যে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩৫ শতাংশ এখন বিদেশি বাণিজ্য। তবে এই বিদেশি বাণিজ্যের চিত্রটি সুখকর নয়। ২০০৯-১০ বা চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে আমাদের রপ্তানি আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে সোয়া ৩ শতাংশ কমে গেছে। আর গত অর্থবছর রপ্তানি আয়ে মোট প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ। আমরা যদি গত অর্থবছরের সমপরিমাণ রপ্তানি আয়ও অর্জন করতে চাই, তাহলে এ বছরে বাকি চার মাসে ৭২০ কোটি ডলার আয় করতে হবে, যা বাস্তবে সম্ভব নয়। রপ্তানির সমস্যাটা মন্দাজনিত নয়, যেমনটা বলা হচ্ছে। কারণ, তৈরি পোশাক খাতেই দেখা যাচ্ছে বেশ কাজের আদেশ পাওয়া যাচ্ছে। এখানে সমস্যাটা হয়েছে উৎপাদন করতে না পারার। আর এ জন্য মূলত দায়ী দেশের ভেতরে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট। আরেকটি বিষয় হলো, রেমিট্যান্স বা প্রবাসী-আয়। গত বছর প্রবাসী-আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় সাড়ে ২২ শতাংশ। এসেছিল মোট ৯৬৮ কোটি ২৬ লাখ ডলার। এবার একই হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বাকি তিন মাসে ৩৬০ কোটি ডলারের প্রবাসী-আয় পেতে হবে। মানে প্রতি মাসে ১২০ কোটি ডলার, যা প্রায় অসম্ভব। এবার প্রবাসী-আয়ের প্রবৃদ্ধিও শেষ পর্যন্ত কমে যাবে।
প্রথম আলো  এটা তো অর্থনীতির বহির্মুখী খাতগুলো নিয়ে বললেন। অভ্যন্তরীণ দিকটায় আর কী দেখার আছে?
মির্জ্জা আজিজ  বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) কথা বলা দরকার। এডিপি বাস্তবায়নের হার গত বছরের তুলনায় ভালো। নয় মাসে ৪৪ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু এডিপি হলো জিডিপির মাত্র ৪ শতাংশ। এই সীমাবদ্ধতাটাও আমাদের বুঝতে হবে। তা ছাড়া বাকি তিন মাসে যদি আরও অনেক বেশি এডিপির অর্থ ব্যয়ও হয়, তার পরও অর্থবছরের শেষে গিয়ে এডিপির মোট বরাদ্দের ৮০ শতাংশ ব্যয় হবে না। আবার সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) বাজেটের আড়াই হাজার কোটি টাকার একটি পয়সাও খরচ করা যায়নি। জলবায়ু তহবিল বাড়িয়ে ৭০০ কোটি টাকা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
প্রথম আলো  এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী অর্থবছরের বাজেট কী হতে পারে বলে মনে করছেন?
মির্জ্জা আজিজ  বাংলাদেশে সাধারণত সম্প্রসারণশীল বাজেট করা হয়। এর মানে হলো, রাজস্ব ঘাটতি একটু বড় থাকে। এখন আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যয় হলো জিডিপির ১৬ শতাংশ। এটা বাড়াতে হবে। তার মানে আসলে বাজেটের আকার বাড়াতে হবে। আমরা যদি আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির বার্ষিক গড়হার সাড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ ধরি, তাহলে আমার হিসাবে এবার বাজেটের আয়তন হতে পারে এক লাখ ৩১ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা। ঘাটতি হবে জিডিপির ৫ শতাংশ। অর্থমন্ত্রী ইতিমধ্যে যে আভাস দিয়েছেন, তাতে বাজেট প্রায় এ রকমই হবে বলে মনে হচ্ছে। সমস্যা হলো, এডিপির আয়তন বড় রাখতে হবে। অথচ এডিপি বাস্তবায়নের দক্ষতার উন্নতি নেই।
প্রথম আলো  বাজেটে কোন কোন খাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন?
মির্জ্জা আজিজ  সাত-আটটি খাত তো বরাবরই অগ্রাধিকার পেয়ে আসছে। এবারও তাতে কোনো রদবদল হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে এবার জ্বালানি ও বিদ্যুতের দিকে আরও অনেক বেশি নজর দিতে হবে। জ্বালানির সংকট গোটা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নজর দিতে হবে কৃষি ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনাকে। পল্লি অবকাঠামো বিনির্মাণ ও সম্প্রসারণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। সর্বোপরি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রথম আলো  বাজেট তো শুধু আর্থিক বরাদ্দ দেওয়ারই বিষয় নয়। এর সঙ্গে সরকারের অর্থনৈতিক নীতিভাবনা ও ব্যবস্থাপনার বিষয় যুক্ত। আপনি নীতিগত ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোয় মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন?
মির্জ্জা আজিজ  এ ক্ষেত্রে আমি কয়েকটা বিষয় আগে উল্লেখ করব। এগুলো এখনই বাস্তবায়ন করা না গেলেও খুব গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে। প্রথমত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো (এসওই) প্রায় সবই লোকসানি হয়ে পড়েছে। এই লোকসানি বোঝা থেকে বের হয়ে আসার বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট নীতি দেখা যাচ্ছে না। শিল্পনীতিতে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতি-নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বেসরকারীকরণের দিকে যাওয়াটাই যুক্তিযুক্ত। দ্বিতীয়ত, ভর্তুকির বিষয়ে ভাবতে হবে। কৃষি খাত ও রপ্তানিতে যেভাবে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, তা এখন পর্যালোচনা করে সংশোধনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কথাটা অপ্রিয় শোনালেও এটাই সত্যি। কৃষির জন্য সেচযন্ত্রে ডিজেল ব্যবহারে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, যা অসমভাবে বণ্টিত হচ্ছে। যার যত বেশি জমি, তার সেচ তত বেশি পেতে হয়। ফলে সে ভর্তুকিও পায় বেশি। একইভাবে সারের ক্ষেত্রেও ভর্তুকি বেশি যায়, যার জমি বেশি। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে ক্ষুদ্র কৃষকের কাছে ভর্তুকি তুলনামূলকভাবে কম যাচ্ছে। সারের দাম বাড়লে কৃষকেরা কম সার ব্যবহার করবে বলে যে ধারণা আছে তা ঠিক নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বোরো মৌসুমের পর টিএসপি সারের দাম দ্বিগুণ করা হয়েছিল। পরবর্তী চাষাবাদের সময় কিন্তু সারের ব্যবহার কমেনি। এ বিষয়গুলো ভেবে দেখা প্রয়োজন।
প্রথম আলো  রপ্তানির ক্ষেত্রে?
মির্জ্জা আজিজ  তৈরি পোশাকের মতো রপ্তানিমুখী খাতকে বছরের পর বছর কেন ভর্তুকি দিতে হবে, তাও ভাবা দরকার। যেকোনো খাতেই একটা পর্যায়ের পর ভর্তুকি তুলে নেওয়া উচিত। বাংলাদেশে মুশকিল হলো, একবার একটা সুবিধা চালু হলে পরে সহজে তা তুলে নেওয়া যায় না। কিন্তু অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা বিবেচনায় কিছু অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বর্তমান সরকার যে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছে, তাতে তাদের পক্ষে এ ধরনের কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি। আরেকটা বিষয় হলো, নিয়ন্ত্রণবিধি সংস্কার। রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশন ও বেটার বিজনেস ফোরাম—দুটোকেই নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু বিকল্প কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবিধি সংস্কার করতে। অথচ বিবিএফ ও আরআরসির কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের সুফল ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে।
প্রথম আলো  ব্যবসায়ী মহল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক আয়করের হার কমানোর কথা বলা হচ্ছে। এটা কতখানি যৌক্তিক?
মির্জ্জা আজিজ  করের বিষয়টি সামগ্রিক বিবেচনায় দেখতে হবে। কর তথা রাজস্ব-ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর ভালো একটা সুযোগ আছে। এবং এটা করতে হবে। বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন। এটা বাড়াতে হবে। এ জন্য করের আওতা বা বেষ্টনী বাড়াতে হবে। তবে এ কাজে সাফল্য পেতে হলে কিছু সংস্কার করতে হবে। যেমন: আয়কর বিবরণী আরও সহজ করা এবং তা অনলাইনে দাখিলের ব্যবস্থা করা। প্রাতিষ্ঠানিক আয়কর বা করপোরেট ট্যাক্স বর্তমান হারের চেয়ে আড়াই শতাংশ কমানো যেতে পারে। আমদানি শুল্ক হারে তেমন কোনো পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। তবে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, অগ্রিম আয়কর ইত্যাদি মিলে শুল্ককাঠামো যে জটিল অবস্থায় আছে, তাতে অদক্ষতাই উৎসাহিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কার্যকর প্রতিরক্ষণ হার (ইআরপি) বিশ্লেষণ করে শুল্ককাঠামোয় পুনর্বিন্যাস করার বিষয়টি ভাবা দরকার।
প্রথম আলো  কালো টাকা সাদা করার বা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার বিষয়টি আবার আলোচনায় উঠে এসেছে। আপনি কি এটা সমর্থন করেন?
মির্জ্জা আজিজ  কালো টাকা সাদা করার সুযোগটি নৈতিকতাবিবর্জিত কাজ। আমি এটা সমর্থন করি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আমি যেটা করেছিলাম, সেটা হলো বৈধ কিন্তু অপ্রদর্শিত আয় জরিমানা দিয়ে প্রদর্শন বা বৈধ করার সুযোগ প্রদান। এ ক্ষেত্রে চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ইত্যাদি অবৈধ আয়কে কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। সে সময় অর্থাৎ ২০০৮-০৯ অর্থবছরে পাঁচ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বৈধ হয়েছিল। অবশ্য সেটা একটা বিশেষ পরিবেশ-পরিস্থিতিতে ছিল। পরে এসে মানে চলতি অর্থবছরে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে প্রায় সব বৈধ-অবৈধ অপ্রদর্শিত আয়কে প্রদর্শনের সুযোগ করে দেওয়া হলো। যেটুকু জানি, এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ কোটি টাকা কর পাওয়া গেছে। আসলে এই সুযোগ আর থাকা উচিত নয়।
প্রথম আলো  কর প্রশাসনের বিরুদ্ধেও তো নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এটা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
মির্জ্জা আজিজ  জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দক্ষতা বাড়াতে হবে। করদাতা ও আদায়কারীর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ কমাতে হবে। সে জন্যই পুরো কর আদায়-প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি কিছু আইনি সংস্কারও করতে হবে। কর-বিষয়ক হাজার হাজার মামলা আদালতে আটকে আছে। এ জন্য জাতীয় কর ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এসব মামলা নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।
প্রথম আলো  শেয়ারবাজারে মূলধনী আয়ের ওপর করারোপের কথা বলা হচ্ছে। এতে কি বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে?
মির্জ্জা আজিজ  শুধু শেয়ারবাজারের মূলধনী আয়ের ওপর করারোপ করার পক্ষে আমি নই। আমি মনে করি, করলে সব ধরনের মূলধনী আয়ের ওপর করারোপ করতে হবে। শুধু শেয়ারবাজারের মূলধনী আয়ের ওপর এটা করলে তা ঠিক হবে না। আর করারোপ করলে প্রথমে স্বল্প হারে করা উচিত। মানে পদ্ধতিটা চালু করা যেতে পারে। আর শেয়ারবাজারে বিও হিসাব খোলার ক্ষেত্রে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করার যে কথা হচ্ছে, তা অগ্রহণযোগ্য। কে কর দেওয়ার যোগ্য বা নয়, তা নির্ধারণ করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। গাড়ির নিবন্ধনের জন্যও যে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, আমি এর কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না। এগুলো নাগরিকদের জীবনে জটিলতা বাড়ানো ছাড়া কিছু নয়।
প্রথম আলো  মূল্যস্ফীতির চাপ তো অর্থনীতিতে বাড়ছে। এটা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কী কী করা উচিত?
মির্জ্জা আজিজ  আমাদের মতো দেশে সরকারের হাতে আসলে এমন কোনো হাতিয়ার নেই, যা দিয়ে মূল্যস্ফীতি বড়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেহেতু আমরা বহুলাংশে আমদানিনির্ভর, সেহেতু বিশ্ববাজারের দামের ওঠানামা আমাদের বাজারেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। আর তাই বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ার পরও দেশের ভেতর চালের দাম না কমে বেড়েছে। রাজস্ব নীতির মাধ্যমে স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া যেতে পারে, তবে মূল্যস্ফীতিতে তেমন প্রভাব ফেলা যায় না। মুদ্রানীতিও মূল্যস্ফীতিতে তেমন প্রভাব ফেলে না। কেননা, সুদের হার বাড়িয়ে-কমিয়ে অভ্যন্তরীণ ঋণপ্রবাহ বাড়ানো-কমানো গেলেও তা সব সময় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয় না। সুদের হার বাড়লে অনেক ক্ষেত্রেই আমদানি ব্যয় বেড়ে যায়। তাই, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার চেয়ে গরিব মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার দিকেই বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আর তা জিনিসপত্রের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে হবে না। বরং গরিব মানুষের আয় করার ও আয় বাড়ানোর সুযোগ করে দিতে হবে।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
মির্জ্জা আজিজ  ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.