সুষ্ঠু সঞ্চালন নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিন-মানিকগঞ্জে বিদ্যুৎ-যন্ত্রণা

বিদ্যুতের সংকটে জনজীবনে দুর্ভোগ অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে বহু আগেই। জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষ ত্যক্তবিরক্ত। বিগত বছরগুলোতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু উৎপাদন বাড়েনি।


পূর্বাপর সরকারের অদূরদর্শিতার কারণে বাংলাদেশের সীমিত সামর্থ্য অনুযায়ীও যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব ছিল, তা হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার বহু নজির আছে। সম্প্রতি মানিকগঞ্জে ব্রেকার ফেটে যাওয়ার পর কয়েক দিন অতিবাহিত হলেও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ ১৩৩ কেভি গ্রিডের তিনটি ব্রেকার ফেটে পুড়ে যায়। এর ফলে মানিকগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার প্রায় দেড় লাখ গ্রাহকের দুর্ভোগ অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছায়। বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, পুড়ে যাওয়া ব্রেকারগুলো মেরামত করে কাজ চালানোর সুযোগ নেই; এগুলো সরিয়ে নতুন করে ব্রেকার স্থাপন করতে হবে। কিন্তু উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, দেশে আর কোনো ব্রেকার না থাকায় আমদানির আগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা নেই। কবে নাগাদ গ্রাহকেরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাবেন, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
ব্রেকার ফেটে পুড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতেই পারে। এ জন্য বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকা আবশ্যক। গ্রাহকদের চরম ভোগান্তিতে ফেলার পরও কর্তৃপক্ষের কোনো বিকল্পের দিশা দিতে না পারাও দুঃখজনক। বিদ্যুৎ খাতে এ ধরনের অব্যবস্থা, অনিয়ম ও অদক্ষতার বহু উদাহরণ রয়েছে। তাদের গাফিলতির দায় ভোগ করবেন কেন গ্রাহকেরা? চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারেও তাদের ব্যর্থতা চোখে পড়ার মতো। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হলে বিদ্যুৎ খাতে চুরি, দুর্নীতি বন্ধের বিকল্প নেই। যত দ্রুত সম্ভব, মানিকগঞ্জের পুড়ে যাওয়া ব্রেকারগুলো প্রতিস্থাপন করে গ্রাহকদের দুর্ভোগ লাঘবে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।

No comments

Powered by Blogger.