ন্যায়বিচার-ইংরেজের আইন ও রবীন্দ্রনাথ by মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

সমাজ রক্ষা করতে কিছু রীতিনীতি মানতে হয়। রাজ্য বা রাষ্ট্রের জন্য আইনের প্রয়োজন রয়েছে। সমাজের রীতিনীতি, বিধিবিধান ও মনুষ্যপ্রণীত আইন হচ্ছে দেশের আইনের উৎস। বাংলাদেশের আইনে অনার্য, আর্য, তুর্কি, ইংরেজ নানা জাতির আইনি পলি পড়েছে। ‘বাংলায় সংবিধান’ বক্তৃতায় আমি বলি, ‘আইন’,

‘কানুন’, ‘আদালত’, ‘ইনসাফ’—শব্দগুলো ৮০০ বছর আগে আমাদের দেশে প্রচলিত ছিল না। আইন-কানুন—এই দ্বিপদী শব্দ আইন শ্রেণীবাচক বা আইনের বহুবচন হিসেবে এখন ব্যবহূত হচ্ছে। ‘আইন’ ফার্সি শব্দ। ‘কানুন’ আরবি, গ্রিক ‘কানুন’-এর সঙ্গে শব্দটির সাদৃশ্য রয়েছে। ‘অ্যাক্ট’, ‘ইক্যুটি’, ‘রুল’, ‘রেগুলেশন’—শব্দগুলোর ব্যবহার আড়াই শ বছরেরও কম। তুর্কিদের আগমনের আগে ইনসাফ-ইক্যুটি বলতে ‘ধর্ম’ শব্দের ব্যবহার হতো। ‘অথরিটি’, ‘স্যাংসন’, ‘জুরিসডিকশান’, ‘লেজিসলেশান’ ইত্যাদি ইংরেজি শব্দের দ্যোতনা সংস্কৃতে বা বাংলায় আমরা সরাসরি পাচ্ছি না।
ইংরেজদের আগমনের পর আমাদের দেশে বিবিধ নবপ্রবর্তনার শুরু। সর্বোচ্চ আদালতের রায় রাষ্ট্রসহ সবাইকে মান্য করতে হবে, বিচারক যে ধর্মেরই হোন না কেন। ১৮৫৮ সালের ১ নভেম্বর রানি ভিক্টোরিয়া প্রজার ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মপালনে হস্তক্ষেপ না করার নীতি ঘোষণা করেন এবং সরকারি কর্মে নিয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষপাত করা হবে না বলে আশ্বাস দেন। ইংরেজের আইনে অপরাধের জন্য সবার জন্য এক আইনের বিধান দেওয়া হয়। ধর্ম পরিবর্তনের জন্য কোনো শাস্তির বিধান দেওয়া হলো না। আর ইংরেজি আইনি ঐতিহ্যের নজিরপ্রথা গ্রহণ করা হলো।
কোনো কোনো দেশ বেশ সহজে বিদেশের আইন রপ্ত করতে পারে। এ ব্যাপারে জাপানিদের কৃতিত্বের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ জাপান-যাত্রীতে বলেন, ‘য়ুরোপের কামান-বন্দুক, কুচ-কাওয়াজ, কল-কারখানা, আপিস-আদালত, আইন-কানুন যেন কোন আলাদিনের প্রদীপের জাদুতে পশ্চিমলোক থেকে পূর্বলোকে একেবারে আস্ত উপড়ে এনে বসিয়ে দিলে। নতুন শিক্ষাকে ক্রমে ক্রমে সইয়ে নেওয়া, বাড়িয়ে তোলা নয়; তাকে ছেলের মতো শৈশব থেকে যৌবনে মানুষ করে তোলা নয়—তাকে জামাইয়ের মতো একেবারে পূর্ণ যৌবনে ঘরের মধ্যে বরণ করে নেওয়া। বৃদ্ধ বনস্পতিকে এক জায়গা থেকে তুলে আর এক জায়গায় রোপণ করবার বিদ্যা জাপানের মালীরা জানে; য়ুরোপের শিক্ষাকেও তারা তেমনি করেই তার সমস্ত জটিল শিকড় এবং বিপুল ডালপালাসমেত নিজের দেশের মাটিতে এক রাত্রির মধ্যেই খাড়া করে দিলে।’
মুসলমান আইনের ফৌজদারি বিধিবিধান ও সাক্ষ্য-প্রমাণ আইন ইংরেজ আমলে পরিত্যক্ত হয়। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত আইনের বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। অন্য সব আইনের মতো হিন্দু ও মুসলমানের আইনের ক্ষেত্রেও ইংরেজ আমলে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকের রায়—সে বিচারক যেকোনো ধর্মাবলম্বীই হোক না কেন—চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়। এমন নজির প্রথা হিন্দু বা মুসলমান আইনের ঐতিহ্যে ছিল না।
উন্নততর ও জটিলতর সামাজিক অবস্থার আইনগত সমস্যার মোকাবিলা করতে গিয়ে পশ্চিম ইউরোপ যেমন রোমান আইনকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল, বাংলাদেশ তেমন করে ইংলিশ কমন ল-কে আমন্ত্রণ জানায়নি। এখানে কমন ল প্রভাব বিস্তার করেছে ব্যাপক সংকলনের মাধ্যমে।
১৮৩৩ সালের সনদ বলে যে ল কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়, তা মুসলমান আইন, হিন্দু আইন ও স্থানিক আইন—তিনটি স্বতন্ত্র সংকলনের কথা চিন্তা করে। মুসলমান ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায় প্রবল আপত্তি করায় সাধারণ দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিষয়ে কমিশনের কাজ সীমাবদ্ধ থাকে। ১৮৫৯ থেকে ১৮৮২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সংকলনের মাধ্যমে দেশের আইন উল্লেখযোগ্যভাবে নতুন রূপ ধারণ করে।
ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর বিশ্বের বিভিন্ন বলয়ে উপনিবেশ সৃষ্টির পর সেসব উপনিবেশের আইনের ক্ষেত্রে দারুণ পরিবর্তন হয়। আধুনিকীকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ ইউরোপীয় আইনের কার্যকরতা লক্ষ করে অনেক দেশ ঢালাওভাবে তা অনুকরণ-অনুসরণ করে। তুর্কিরা সুইস ও জার্মান আইন আমদানি করে। ভিয়েতনামে চীন, ফরাসি, সোভিয়েত রাশিয়া, মার্কিন ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের আইন নিয়ে গ্রহণ-বর্জনের পরীক্ষা চলে। আজ বিশ্বায়নের যুগে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য চুক্তি, বিরোধ নিষ্পত্তি, সালিস, কোম্পানি, বহুজাতিক কোম্পানির চেহারা প্রায় একই রকম হতে চলেছে।
সারা উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনেক আগে থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তিনটি প্রেসিডেন্সি শহর—কলকাতা, মাদ্রাজ ও বোম্বাইয়ে (বর্তমানে মুম্বাই) ইংরেজি ফৌজদারি আইন চালু ছিল। নন্দকুমারের ফাঁসি হয়েছিল ইংরেজি জালিয়াতির আইনে। ইংল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলার বিচার হতো জুরির সাহায্যে। ১৮২৬ সাল পর্যন্ত জুরি ইউরোপীয়দের দ্বারা গঠিত হতো।
১২১৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের ব্যারন-সামন্তরা রাজা দ্বিতীয় হেনরিকে ঘেরাও করে ম্যাগনা কার্টা (মহাসনদ) আদায় করে। ওই সনদের ৩১ ও ৫২ অনুচ্ছেদে বিধান দেওয়া হয়, কোনো স্বাধীন ব্যক্তি আইন অনুযায়ী তার সমকক্ষের রায় ছাড়া কোনো শাস্তি ভোগ করবে না বা তার সম্পত্তি থেকে সে বঞ্চিত হবে না।
১২৯৮ সালে ‘প্রাচ্য ও প্রতীচ্য’-এ ইংরেজ আইন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘ইংরেজের মুলুকে আমরা অনেক আইন এবং অনেক আদালত পেয়েছি। দেশে যত চোর আছে পাহারাওয়ালার সংখ্যা তার চেয়ে ঢের বেশি। সুনিয়ম সুশৃঙ্খল সম্বন্ধে কথাটি করার জোর নেই। আমরা ইংরেজের সতর্কতা, সচেষ্টতা, প্রখর বুদ্ধি, সুশৃঙ্খল কর্মপটুতার অনেক পরিচয় পেয়ে থাকি; যদি কোনো কিছুর অভাব অনুভব করি তবে সে এই স্বর্গীয় করুণার, নিরুপায়ের প্রতি ক্ষমতাশালীর অবজ্ঞাহীন অনুকূল প্রসন্নভাবের। আমরা উপকার অনেক পাই, কিন্তু দয়া কিছুই পাই নে। অতএব যখন এই দুর্লভ করুণার অবস্থানে অপব্যয় দেখি, তখন ক্ষোভের আর সীমা থাকে না।’
আইনের দ্বারা সংস্কার সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘কোনো কোনো সামাজিক প্রথাকে অনিষ্টকর জ্ঞান করিয়া আমরা ইংরাজের আইনকে ঘাঁটাইয়া তুলিয়াছি, তাহাও কাহারও অগোচর নাই। যেদিন কোনো পরিবারে সন্তানদিগকে চালনা করিবার জন্য পুলিসম্যান ডাকাতে হয়, সেদিন আর পরিবাররক্ষার চেষ্টা কেন। সেদিন বনবাসই শ্রেয়।’
রবীন্দ্রনাথ অতিশয় পন্থা পছন্দ করতেন না। সন্ত্রাসবাদ তাঁর পক্ষে গ্রহণ করা অসম্ভব ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট উইলসনকে এক পত্রে তিনি বলেন, ‘আমি এমন স্বদেশপ্রেমে বিশ্বাস করি না, যা মানবতার উচ্চতর আদর্শ মাড়িয়ে যায়। গোপন মিথ্যা ও প্রচণ্ড অসৎকর্মপূর্ণ কোনো সেবা নিজের দেশকে উৎসর্গ করাকে আমি এক অধর্মের কাজ মনে করি।’
১৩১৩ সনের জ্যৈষ্ঠের বঙ্গদর্শন-এ রবীন্দ্রনাথ বয়কটকে দুর্বলের প্রয়াস নয়, দুর্বলের কলহ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘ইংরেজ ধৈর্য্যের ওপর ভাবিয়া দেখো দেখি, ইংরেজের উপরে আমাদের কতখানি শ্রদ্ধা, কতখানি ভরসা জমিয়া উঠিয়াছে যে আমরা ঠিক করিয়া বসিয়াছিলাম যে, আমরা বন্দেমাতরাম হাকিয়া তাহাদের দক্ষিণ হাতে আঘাত করিব, তবু তাহাদের সেই হাতের ন্যায়দণ্ড অন্যায়ের দিকে কিছুমাত্র টলিবে না।’
ইংল্যান্ডে থাকার সময় রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘ভারতবর্ষে দণ্ডবিধান ব্যাপারে গ্লানিজনক ঘটনা ইংরেজি খবরের কাগজে প্রায় কিছুই এসে পৌঁছত না। তার একমাত্র কারণ এ নয়, পাছে য়ুরোপ ও আমেরিকায় নিন্দা রটে। বস্তুত কড়া ইংরেজ শাসনকর্তা স্বজাতির শুভবুদ্ধিকেই ভয় করে। বেশ করেছি, খুব করেছি, দরকার ছিল জবরদস্তি করবার—এটা বুক ফুলিয়ে বলা ইংরেজের পক্ষে সহজ নয়, তার কারণ ইংরেজের মধ্যে বড়ো মন আছে। ভারতবর্ষ সম্বন্ধে আসল কথাগুলো ইংরেজ খুব কম জানে। নিজেদের উপর ধিক্কার দেবার কারণ চাপা থাকে। এ কথাও সত্য, ভারতের নিমক দীর্ঘকাল যে খেয়েছে তার ইংরেজি যকৃৎ এবং হূদয় কলুষিত হয়ে গেছে অথচ আমাদের ভাগ্যক্রমে তারাই হল অথরিটি।’
যে রবীন্দ্রনাথ ব্রিটিশ শাসনকে একসময় বিধির বিধান বলতেন এবং তা ট্রাস্টি বা অছির মর্যাদায় মহিমামণ্ডিত করতেন, তিনিই আবার ১৩৪৮ সনে ‘সভ্যতার সংকট’-এ বলেছেন, ‘এই বিদেশীয় সভ্যতা, যদি একে সভ্যতা বলো, আমাদের কী অপহরণ করেছে তা জানি; সে তার পরিবর্তে দণ্ড হাতে স্থাপন করেছে যাকে নাম দিয়েছে Law and Order, বিধি এবং ব্যবস্থা, যা সম্পূর্ণ বাইরের জিনিস, যা দারোয়ানি মাত্র। পাশ্চাত্য জাতির সভ্যতা-অভিমানের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা অসাধ্য হয়েছে। সে তার শক্তিরূপ আমাদের দেখিয়েছে, মুক্তিরূপ দেখাতে পারেনি।’
সাবেক ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উপনিবেশমুক্ত অঞ্চলে আজও ইংরেজ আইনের প্রভাব প্রায় অক্ষুণ্ন রয়েছে। সংশোধন ও সংস্কারের কথা বলে ভারতের আইন কমিশন ইংরেজের রেখে যাওয়া আইনকে দেশের আত্মীকৃত আইন বলে বিবেচিত করেছে। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের হামুদুর রহমান আইন কমিশন অনুরূপ বক্তব্য রাখে। ঔপনিবেশিক বা ধর্মবিরুদ্ধ আইন হিসেবে ইংরেজের আইনে ঢেলে সাজানোর কথা মাঝেমধ্যে বলা হলেও সেই উদ্যোগ নেওয়ার মতো দেশে তেমন উৎসাহ বা সামর্থ্যের উপস্থিতি লক্ষ করা যায় না। ইংরেজের আইন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ যে সমালোচনা করেন, তা উপনিবেশমুক্ত দেশগুলো সম্পর্কে এখনো প্রযোজ্য এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুঃখজনকভাবে প্রযোজ্য ও প্রাসঙ্গিক।
সম্প্রতি সংবিধানে স্বীকৃত অধিকার লঙ্ঘনের জন্য দুর্ভোগগ্রস্ত ব্যক্তিকে খেসারত দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের সর্বোচ্চ আদালত নতুন নতুন প্রতিকারের ব্যবস্থা করছে। এ সময় আমরা সম্পূর্ণ উল্টো পন্থায় অধিকার লঙ্ঘনের দায় থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আমরা প্রয়াস পাচ্ছি। আমাদের দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘এনকাউন্টার’ বা ‘ক্রসফায়ারে’ আইনবহির্ভূত হত্যার সাফাই দিতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আত্মরক্ষার অধিকারের কথা বলেন। বিন্দুমাত্র অনুতাপ বা দুঃখপ্রকাশ নেই সে কথায়। তদন্ত বা বিচার শেষে শাস্তি দেওয়ার কোনো দৃষ্টান্ত নেই। ঢালাওভাবে দায়মুক্তির এক কলঙ্কময় আইন পাস হয় ২০০৩ সালে।
দায়মুক্তির আইনেও মানবিক মনের ছাপ থাকতে পারে। একটা উদাহরণ দিই। ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের সামরিক আইন জারির প্রসঙ্গে ১৯১৯ সালে একটি দায়মুক্তি আইন পাস করা হয়। সামরিক বা বেসামরিক কোনো সরকারি কর্মকর্তা কারও সম্পত্তি অধিগ্রহণ বা ব্যবহার করে থাকলে তার ন্যায়সংগত খেসারত নির্ধারণের বিধান দেওয়া হয় সেই আইনে। মতৈক্যের মাধ্যমে খেসারতের পরিমাণ নির্দিষ্ট করতে ব্যর্থ হলে জেলা জজের অধস্তন নয়, এমন এক বিচারীয় কর্মকর্তার দ্বারা ব্যাপারটা নিষ্পন্ন করারও বিধান দেওয়া হয়। এটা সেই সময়কার কথা, যখন দেশটা পরাধীন ছিল। সাংবিধানিক সরকার তখন থাকার কথা নয়। এখনকার মতো মানবাধিকারের প্রশ্নও তখন উচ্চারিত হতো না।
রবীন্দ্র-রচনায় আইনি ভাবনায় আমি যে মন্তব্য করেছি, তার পুনরোক্তি করে আমার বক্তব্য এখানে শেষ করছি।
‘এমনিতেই ঔপনিবেশিকতার প্রভাব থেকে ঔপনিবেশিক মনের মুক্তি পাওয়া কঠিন। ইংরেজ আইনের ক্ষেত্রে সেটা বিশেষভাবে সত্য। সেই আইনের সাফল্য এই যে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিও যেন শেষ পর্যন্ত তার প্রতি বিশ্বাস হারাতে পারে না, যদিও সেই শাসনের চিরন্তনতা কামনা করতে তার মন রাজি হয় না।
ইংরেজ আইনের সৌভাগ্য এই যে রবীন্দ্রনাথের মতো প্রজার হাতে তাঁর মূল্যায়ন হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য ঔপনিবেশিক আইনের প্রতিতুলনায় তিনি ইংরেজ আইনের মন্দের ভালোর দিকটা লক্ষ করেছেন, যদিও ইংরেজ, এমনকি ‘বড়’-ইংরেজের, শাসনের পক্ষে তাঁর মন সায় দিতে রাজি হয়নি।
বাঙালিসমগ্র জাদুঘর আয়োজিত প্রথম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মারক বক্তৃতার সংক্ষেপিত রূপ।
মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা। সাবেক প্রধান বিচারপতি।

No comments

Powered by Blogger.