সিরাজগঞ্জের সেতুতে ত্রুটি-সেই একই ট্রাডিশন...

সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ সড়কে নির্মিত হচ্ছে লক্ষ্মীকোলা সেতু। ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি টাকা। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই দেখা দিয়েছে ত্রুটি। মঙ্গলবার সমকালে 'সওজের লক্ষ্মীকোলা সেতু নির্মাণের আগেই গার্ডারে ধস : প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ' শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'ইতিমধ্যে অর্ধেক নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।


চলছে গার্ডারের নির্মাণ কাজ। কিন্তু রোববার ৫টি গার্ডারের একটি ধসে পড়ে।'
স্বস্তির খবর যে সেতুটি চালুর আগেই নির্মাণ ত্রুটি ধরা পড়ে। সেতুটি খুলে দেওয়ার পর গার্ডার ধসে পড়লে যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়তে পারত। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এটাও হতে পারে যে, রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনো প্রভাব খাটিয়ে অযোগ্য প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। সড়ক ও জনপথের যারা তদারকি কাজে যুক্ত, তাদের তরফেও সমস্যা থাকতে পারে। এ সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনেকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে উঠেছে। অভিযোগ উঠলেই সত্য হবে, এমন কথা নেই। কিন্তু বহু বছর ধরেই এ প্রতিষ্ঠানের নানা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সন্দেহের তালিকায়। মানসম্পন্ন কাজ না হলেও তাদের তদারকিতে সেসব ধরা পড়ে না। কিংবা ধরা পড়লেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এভাবেই সরকারি অর্থের অপচয় ঘটে। লক্ষ্মীকোলা সেতুর মতো কাজ চলাকালেই অনেক ক্ষেত্রে ত্রুটি ধরা পড়ে। এ ক্ষেত্রে হয়তো বাড়তি অর্থ ব্যয় করে তা মেরামত করা সম্ভব হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সড়কপথ বা সেতু নির্মাণ শেষ হয়ে চালুর পর ত্রুটি ধরা পড়ে। তখন মেরামত-সংস্কার করা হয়ে পড়ে আরও কঠিন। এ জন্য ব্যয়ের বহর বাড়ে এবং প্রকারান্তরে তা চাপে জনগণের কাঁধে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এটাই ট্রাডিশন। এর প্রতিকার করায় জনপ্রতিনিধিরা কার্যকর ভূমিকা নিতে পারতেন এবং জনগণ সেটাই চায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, স্থানীয় সরকার কিংবা সংসদে নির্বাচিতদের পছন্দের লোককে সরকারি কাজের ঠিকাদারি দেওয়ার কারণে বড় ধরনের ভুল ধরা পড়লেও তারা থেকে যেতে পারেন নিরাপদ দূরত্বে। লক্ষ্মীকোলা সেতুর ক্ষেত্রে অন্যথা হবে, এমন আশা থাকতেই পারে। কিন্তু বাস্তবে যে বড়ই কঠিন।

No comments

Powered by Blogger.