ইলিয়ভস্কি ফুটবলকে ঠকিয়ে গেছেন: বিপ্লব

জাতীয় দলের সদ্য বিদায়ী কোচ নিকোলা ইলিয়ভস্কি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রাথমিক পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঢাকা ও লাহোরে দুটো ম্যাচে অধিনায়কত্বের ব্যাজ বাহুতে নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন বিপ্লব।


লেবাননের পরবর্তী রাউন্ডেই যেন পাল্টে গেল সবকিছু। বিপ্লব চলে গেলেন ডাগ আউটে। দেশের অন্যতম এই অভিজ্ঞ ফুটবলারকে কোনো কারণ ছাড়াই ডাগ আউটে বসিয়ে রাখা জন্ম দিল নানা প্রশ্নের। তবে কি ইলিয়ভস্কি বিপ্লবকে পছন্দ করতেন না। ব্যাপারটি তেমনই। বিপ্লবের মতো গোলরক্ষককে ডাগ আউটে বসিয়ে রাখার নেপথ্যে যে কারণ দরকার, তার কোনো কিছুই সামনে নিয়ে আসতে পারেননি ইলিয়ভস্কি।
সাফ ফুটবলে ভরাডুবির পর বাফুফে পত্রপাঠ বিদায় জানিয়েছে এই মেসিডোনিয়ান কোচকে। বিদেশি কোচ বিদায় দেওয়ার ধরাবাহিকতার তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরো একটি নাম।
ইলিয়ভস্কি থাকতে মুখ খোলেননি বিপ্লব। পেশাদারি মনোভাব নিয়েই মেনে নিয়েছিলেন সবকিছু। প্রথম আলো অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বিপ্লব জানিয়েছেন, ইলিয়ভস্কির অধ্যায় এখন অতীত। তবে এই কোচ দেশের ফুটবলের ক্ষতি করেই গেছেন। এদেশের ফুটবলকে ঠকিয়ে গেছেন।
ইলিয়ভস্কির ওপর তাঁর এই ক্ষোভ ব্যক্তিগত পর্যায়ে থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিপ্লব ব্যাপারটিকে সেভাবে দেখতে চাননা। তাঁরমতে, বাফুফে তাদের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও ইলিয়ভস্কিকে যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিল। তিনি পেয়েছিলেন কাজ করার পূর্ণ স্বাধীনতা। অথচ এই মেসিডোনিয়ান কোচ সে সুবিধাগুলো অপচয়ই করে গেছেন।
বিপ্লব এখনো জানেন না বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দুটো ম্যাচের পর তাঁকে কেন বসিয়ে দেওয়া হল। তিনি বলেন, ‘আমি জানিনা ইলিয়ভস্কি আমার মধ্যে কি সমস্যা দেখেছিল, তবে আমি মনে করি কেউ বাইরে থেকে এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাঁকে প্ররোচিত করেছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাফ ফুটবলটা খেলার খুব ইচ্ছা ছিল। সাফ ফুটবল বরাবরই আমাদের জন্য বড় প্রতিযোগিতা। আশা করেছিলাম, দিল্লির সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে হয়ত ইলিয়ভস্কি আমার অভিজ্ঞতার মূল্য বুঝবেন, আমাকে খেলাবেন। কিন্তু, তা আর হয়নি।’
বিপ্লবের মতে, ইলিয়ভস্কি কেবল আমার সঙ্গেই অন্যায় করেননি। এমিলি, মিঠুন ও জাহিদের মতো খেলোয়াড়দের অবহেলা করে জাতীয় দলের ক্ষতি করে গেছেন। বিশেষ করে জাহিদকে সাফ ফুটবলের দলে না নেওয়া ছিল খুব বাজে সিদ্ধান্ত। সে এই মুহূর্তে দেশের অন্যতম সেরা প্লে-মেকার।
এই মৌসুমে শেষ রাসেলের তাবুতে ঠাঁই নিয়েছেন বিপ্লব ভট্টাচার্য। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে শেখ রাসেলের সাফল্যের ব্যাপারে দারুণ আশাবাদী দেশ সেরা এই গোলরক্ষক। তাঁর মতে, এবারের লিগ খুব ওপেন। যেকেউ লিগ বিজয়ের স্বাদ পেতে পারে। শেষ রাসেল কোনো মতেই লিগ লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকবে না।
বাফুফের বর্তমান কমিটির মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। দেশের ফুটবলের অন্যতম এই সিনিয়র ফুটবলার মনে করেন, সালাউদ্দিন ভাই তাঁর মেয়াদে পুরোপুরি সফল। তিনি বলেন, বাফুফের বর্তমান কমিটির সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে সারা বছর ফুটবলকে মাঠে রাখা। তিনি আরও বলেন, ‘সালাউদ্দিন ভাইকে এদেশের ফুটবলের জন্য কমপক্ষে আরও দুটি মেয়াদ দরকার। তিনিই এদেশের ফুটবলের যোগ্যতম ব্যক্তি। এদেশের ফুটবলের কোনো উন্নতি হলে তাঁর হাত দিয়েই হবে।’

No comments

Powered by Blogger.