খসড়ার ভিত্তিতেই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হতে হবে-অনড় মমতা
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অবস্থান নিয়েছেন, তাকে সৎ প্রতিবেশীসুলভ বলা যাবে না, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সঙ্গেও মেলানো কঠিন। বলা যায়, তাঁর কারণেই গত সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় চুক্তিটি হতে পারেনি। এখন আবার ফারাক্কা বাঁধের ফাটলকে এর সঙ্গে যুক্ত করায় চুক্তির ক্ষেত্রে নতুন সমস্যা সৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি করছেন।
আন্তর্জাতিক নদী হিসেবে তিস্তার ওপর পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের যেমন অধিকার আছে, তেমনি আছে বাংলাদেশেরও। বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে তারা একতরফা সমুদয় পানি নিয়ে যেতে পারে না। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে সমঝোতায় আসা যায় কি না, সে ব্যাপারে গত শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও পররাষ্ট্রসচিব রঞ্জন মাথাই বৈঠক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। কিন্তু তাতে তাঁর অনড় অবস্থানের সামান্য পরিবর্তন ঘটেনি। বৈঠকে তিনি তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের প্রতিশ্রুতি না দিলেও নয়াদিল্লির কাছ থেকে ফারাক্কা বাঁধ মেরামতের প্রতিশ্রুতি ঠিকই আদায় করে নিয়েছেন। এর আগে ফারাক্কায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বাংলাদেশ বেশি পানি পাচ্ছে বলে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের প্রতি তাঁর এই নেতিবাচক মনোভাব লক্ষ করা যায় ছিটমহল বিনিময়সহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের জীবন-মরণ সমস্যাকে দিল্লির সঙ্গে দর-কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করলেও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে বিএসএফের গুলি সম্পর্কে কোনো অবস্থান নিচ্ছেন না। এটি দুর্ভাগ্যজনক।
এ ক্ষেত্রে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির টানাপোড়েনের কাছে বাংলাদেশের স্বার্থ জিম্মি হতে পারে না। এর আগে যে খসড়া তৈরি হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি হতে হবে। এর রদবদল বাংলাদেশের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ নিজেকে বঞ্চিত মনে করলে দিল্লির কাছে উজানে পানি প্রত্যাহার কমানোর দাবি জানাতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশকে তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করতে পারে না।
সম্পর্ক ও সহযোগিতা কখনো একপক্ষীয় হয় না। দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের অন্য কোনো রাজ্য যদি তা বুঝতে না চায়, তাদের বোঝানোর দায়িত্ব নয়াদিল্লিরই। ২০১০ সালে দুই দেশের শীর্ষপর্যায়ে যে মতৈক্য হয়েছিল, বাংলাদেশ তা প্রতিপালনে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখালেও ভারতের কাছ থেকে তার যথাযথ প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি।
আমরা আশা করব, এর আগে তৈরি খসড়ার ভিত্তিতে নয়াদিল্লি অবিলম্বে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এবং অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসবে। সর্বোপরি এ অঞ্চলের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সব আন্তর্জাতিক নদীর পানিসম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য যৌথ পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভারতের কাছ থেকে ইতিবাচক মনোভাবই প্রত্যাশিত।
এ ক্ষেত্রে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির টানাপোড়েনের কাছে বাংলাদেশের স্বার্থ জিম্মি হতে পারে না। এর আগে যে খসড়া তৈরি হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি হতে হবে। এর রদবদল বাংলাদেশের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ নিজেকে বঞ্চিত মনে করলে দিল্লির কাছে উজানে পানি প্রত্যাহার কমানোর দাবি জানাতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশকে তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করতে পারে না।
সম্পর্ক ও সহযোগিতা কখনো একপক্ষীয় হয় না। দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের অন্য কোনো রাজ্য যদি তা বুঝতে না চায়, তাদের বোঝানোর দায়িত্ব নয়াদিল্লিরই। ২০১০ সালে দুই দেশের শীর্ষপর্যায়ে যে মতৈক্য হয়েছিল, বাংলাদেশ তা প্রতিপালনে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখালেও ভারতের কাছ থেকে তার যথাযথ প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি।
আমরা আশা করব, এর আগে তৈরি খসড়ার ভিত্তিতে নয়াদিল্লি অবিলম্বে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এবং অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসবে। সর্বোপরি এ অঞ্চলের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সব আন্তর্জাতিক নদীর পানিসম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য যৌথ পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভারতের কাছ থেকে ইতিবাচক মনোভাবই প্রত্যাশিত।
No comments