মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী- ভাষাসৈনিক আব্দুর রশীদ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যেতে চান

৮৩তম জন্মদিনে প্রিয়জনদের হৃদয় নিংড়ানো ফুলেল শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় সিক্ত হলেন শেরপুরের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক, ভাষাসৈনিক মোঃ আব্দুর রশীদ।
শেরপুর শহরের গৃদারায়ণপুরের বাসভবনে পারিবারিকভাবে ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজিত জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ভাষাসৈনিক আব্দুর রশীদ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি করেছে, গণহত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে সেইসব নরপিশাচ রাজাকার, আলবদর ও আল শামসদের শাস্তি দেখে যেতে পারলে জীবনটা সার্থক হতো।
জন্মদিনে ভাষাসৈনিকের প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যবৃন্দ তাকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া আরও যারা তাকে শ্রদ্ধা জানাতে বাসভবনে আসেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী জয়শ্রীনাগ লক্ষ্মী, জেলা মানবাধিকার কমিশনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট প্রদীপ দে কৃষ্ণ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি আমজাদ হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, প্রবীণ সাংবাদিক সুশীল মালাকার, শিক্ষাবিদ ড. সুধাময় দাস, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম স্বপন, জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সদস্য সচিব হারেজ আলী। এছাড়া বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে ভাষাসৈনিক আব্দুর রশীদ উৎসব মুখর পরিবেশে করতালির মধ্যে তার ৮৩তম জন্মদিনের কেক কাটেন। আব্দুর রশীদ ১৯৩১ সালের ২৫ জানুয়ারি শেরপুর পৌর শহরের শেখহাটিতে এক সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া একাডেমীতে অধ্যয়নকালে ছাত্রাবস্থায় তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট, ’৬২’র শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ’৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ’৭০’র নির্বাচন, ’৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে অবদান রাখেন।
এছাড়া স্বাধীনতার পরে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক, সাংস্কৃতিক ও প্রগতিশীল আন্দোলন এবং শেরপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা-েও অবদান রেখেছেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর ও জামায়াত-শিবির এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। বিশেষ করে শেরপুরের কুখ্যাত আল বদর জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদাই প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করেন এবং যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানকে সামাজিকভাবে বয়কট করে শেরপুরে এক অন্যন্য নজির স্থাপন করেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি শেরপুর জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ।

Ñরফিকুল ইসলাম আধার, শেরপুর

No comments

Powered by Blogger.