জয় বাংলা

মুক্তিযুদ্ধ হাজার বছরের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ গৌরবময় ঘটনা। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ৩০ লাখ মানুষের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে জন্ম হয়েছে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের।
বাঙালী জাতি তার এ অর্জনকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে প্রতিনিয়ত। একাত্তরের মহান বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ। এরই প্রেক্ষাপটে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও জনতা ব্যাংকের অর্থায়নে নির্মান করা হয় ভাস্কর্য ‘জয় বাংলা’। ভাস্কর্যটির নকশা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রফেসর হামিদুজ্জামান খান। স্বাধীনতার দীপ্ত স্লোগান ‘জয় বাংলা’ এদেশের মানুষকে যেমনিভাবে উদ্বেলিত করেছে, তেমনিভাবে চিরদিন এই বলিষ্ঠ উচ্চারণ আপামর জনগণের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে সে প্রত্যাশায় ভাস্কর্যটির নাম দেয়া হয় ‘জয় বাংলা’।
ভাস্কযটির বর্ণনা : মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে সমন্বয় রেখে ভাস্কর্যটির পাদদেশটি লাল রঙের সিরামিক ইট দিয়ে ঘেরা ১৫ ইঞ্চি উঁচু ৪০ ফুট, ৩০ ফুট মাটির একটি স্তরের ওপর ১৫ ইঞ্চি, উঁচু ২২ ফুট, ১৬ ফুট মাটির আরেকটি ধাপ করা হয়েছে। এর ঠিক মাঝ বরাবর কালো গ্রানাইট পাথর দ্বারা সুসজ্জিত একটি আরসিসি বেদির ওপর ১৯ ফুট উঁচু স্টেনলেস স্টিলের তৈরি প্রতীকী এক মুক্তিযোদ্ধা যার কাঁধে ঝুলানো আছে একটি রাইফেল, মাথায় গামছা বাঁধা ও হাতে রয়েছে স্বাধীন বাংলার পতাকা। সমগ্র বিষয়টির তাৎপর্য হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে চলা।
উদ্বোধন : প্রশাসনিক ভবনের সমক্ষে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘জয় বাংলা’র পাদদেশে ২০১১ সালের ৩০ মার্চ শুভ উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর নজরুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের কথা : ভাস্কর্যটির সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী মোঃ সাইফুল ইসলাম, আরিফুর রহমান পিয়েল, কামরুন্নাহার তামান্না ও বিবিএ’র শিক্ষার্থী আলী মারজান বলেন, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ বাঙালী জাতির গৌরব। যুদ্ধকালীন দেশ মাতৃকার বীর সন্তানরা জীবনবাজি রেখে মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ‘জয় বাংলা’ ভাস্কর্যটির মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখনই এই ভাস্কর্যটি দেখেন তখনই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
প্রিন্সেস ফারিবা সুলতানা দিনা

No comments

Powered by Blogger.