ডজনখানেক যুদ্ধাপরাধী গোয়েন্দা নজরদারিতে- যে কোন সময় গ্রেফতার by শংকর কুমার দে

যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারে প্রায় ডজনখানেক যুদ্ধাপরাধী। শুধু সরকারের সবুজ সঙ্কেতের অপেৰা মাত্র। গ্রেফতারের তালিকাভুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে রয়েছে জামায়াতের ৮, বিএনপির ২ এবং মুসলিম লীগের ২ জন।
দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য ছক তৈরি করে এগোচ্ছে যুদ্ধাপরাধীরা। যুদ্ধাপরাধী বিচারকে বাধাগ্রসত্ম করার উদ্দেশ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে তারা। গ্রেফতারের তালিকাভুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের নজরদারির মধ্যে রেখেছে গোয়েন্দা সংস্থা। এ খবর সংশিস্নষ্ট সূত্রের।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াত-শিবিরের রগকাটা রাজনীতি সন্ত্রাসী তা-ব, ঢাকায় হিজবুত তাহরীরের ব্যানারে মিছিল, চট্টগ্রামের বাঘাইছড়িতে পাহাড়ী-বাঙালীদের মধ্যে সহিংসতা, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশানের অফিসের সামনে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো একই সূত্রে গাঁথা বলে মনে করছে গোয়েন্দারা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রগকাটা সন্ত্রাসী তা-বের পেছনে জামায়াত_শিবিরের সম্পৃক্ততা তদনত্মে প্রমাণিত হয়েছে। জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাহরীরকে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় খোদ রাজধানী ঢাকাতে মিছিল বের করার নেপথ্যে জামায়াত_শিবিরের ইন্ধন রয়েছে। চট্টগ্রামের বাঘাইছড়িতে পাহাড়ী-বাঙালীদের সহিংসতার পেছনে স্বাধীনতাবিরোধীদের গভীর ষড়যন্ত্র বলে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে পরপর দুই দিন বোমাসদৃশ বস্তু রেখে দেয়া ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর ঘটনা সাজানো বলে প্রমাণিত হয়েছে। গত ২৩ ফেব্রম্নয়ারি বেগম জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পুত্র আকতার হামিদ পবন আহত হয় বলে প্রচার করা হয়। এ ঘটনা তদনত্ম করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখতে পেয়েছে পবনের আহত হওয়ার ঘটনা সঠিক নয়। বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের কার্যালয়ে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর পেছনে 'জামায়াত_শিবিরের কারসাজি' বলে গোয়েন্দা সংস্থা তদনত্ম করে খুঁজে পেয়েছে। যুদ্ধাপরাধী বিচারকার্যকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত ও ধামাচাপা দেয়ার জন্যই দেশে নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীরা তৎপরতা চালাচ্ছে বিদেশেও। তারা সৌদি আরব ও পাকিসত্মান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রৰা করার চেষ্টা করছে। তারা সৌদি আরব ও পাকিসত্মান সরকারকে দিয়ে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করার পাশাপাশি দেশে নৈরাজ্যকর ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে যুদ্ধাপরাধীরা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য শুরম্ন হওয়ার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে যুদ্ধাপরাধীরা ততই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
আগামী মার্চ মাসেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য শুরম্ন হবে বলে সরকারের পৰ জানানো হয়েছে। এজন্য পুরনো হাইকোর্টে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আদালত স্থাপনের কাজ দ্রম্নতগতিতে এগিয়ে চলেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পরিচালনার জন্য বিচারপতি, আইনজীবী প্যানেলসহ সংশিস্নষ্টদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পুরনো হাইকোর্টে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য যে বিচারালয় স্থাপনের অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরম্নর পর্বে প্রায় ডজনখানেক যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার জন্য তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব যুদ্ধাপরাধীর বিরম্নদ্ধে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ে পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আছে। এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে কারও কারও পাক হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে তখনকার সংবাদ মাধ্যমে তাদের বক্তৃতা-বিবৃতি ছাপা হয়েছে, যা স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী হিসেবে প্রমাণ দেবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সরকারের সবুজ সঙ্কেত পাওয়া গেলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে। এসব যুদ্ধাপরাধীকে গোয়েন্দা নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.