মহিউদ্দিন শিবিরের নয়- রিমান্ডে স্বীকারোক্তি

 চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীরসহ গ্রেফতারকৃত ২০ নেতাকমর্ী রিমান্ডে স্বীকার করেছেন চবি ছাত্র নিহত মহিউদ্দিন ওরফে মাসুম শিবিরের নয়।
তাঁরা তাকে চেনেন না এবং দেখেনওনি। পুলিশের সঙ্গে গত শুক্রবার সংঘর্ষের ঘটনার পর বিশেষ মতা আইনে গ্রেফতারকৃত জামায়াত শিবিরের ৮৫ জনের মধ্যে ২০ জনের রিমান্ড রবিবার সম্পন্ন হয়েছে। আজ দ্বিতীয় দফায় আরও ২০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে। এদিকে চবির মেধাবী ছাত্র মহিউদ্দিন ওরফে মাসুম হত্যার কোন কু গত চারদিনেও উদঘাটন করতে পারেনি তদনত্ম সংস্থা জিআরপি পুলিশ। এ অবস্থায় মামলাটি সিআইডির কাছে ন্যসত্ম হতে যাচ্ছে বলে পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানানো হয়েছে। চট্টগ্রাম জিআরপি পুলিশ মামলাটি সিআইডির কাছে হসত্মাসত্মরের জন্য রবিবার পুলিশ সদর দফতরের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করেছে।
মহিউদ্দিনের হত্যাকা-ের ঘটনা একেবারে কাছের প্রত্যদশর্ী চবি ছাত্র মোহাইমেনুল ইসলাম রবিবার রাতে পুলিশের কাছে ধরা দিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে তাকে হন্যে হয়ে খোঁজার পরও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় সিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ রবিবার বিকেলে নগরীর শুলক বহর এলাকার একটি বাসা থেকে মোহাইমেনুলের বড় ভাই ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ার মোমেনকে আটক করে। আটকের পর তাকে সিএমপির সদর দফতরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে উপযর্ুপরি জিজ্ঞাসাবাদে মোমেন তার ছোট ভাই মোহামেনুলের অবস্থান জানায় পুলিশকে। পরে আত্মীয়স্বজনকে টেলিফোনে মোমেন বিষয়টি জানানোর পর মোহামেনুল রাত ৯টা নাগাদ পুলিশের কাছে এসে হাজির হয়। রাতেই পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরম্ন করেছেন। অপরদিকে, পাঁচলাইশ পুলিশ ঘটনার সময় মোহাইমেনুল ইসলামকে মোবাইল থেকে ফোন করা চবি ছাত্রী সিরাজুস মনিরা নামের একজনের সন্ধান পেয়েছে। শুলকবহর এলাকার তার বাসায় পাঁচলাইশ পুলিশ তাকে সকাল থেকে বিকেল পর্যনত্ম দুদফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনা সম্পর্কে সে কিছু জানে কিনা এবং ঘটনার সময় মোহাইমেনুলকে সে কেন টেলিফোন করেছিল এবং মোহাইমেন তাকে কিছু বলেছে কিনা। উক্ত ছাত্রী পুলিশকে বলেছে, ঘটনা সম্পর্কে সে কিছুই জানেনা, সহপাঠী হিসেবে ঐদিন সে মোহাইমেনুলকে ফোন করেছিল। যে সময় ফোন করেছিল ঠিক সে সময়ই অপ্রীতিকর এ ঘটনা সংঘটিত হয় বলে সে বুঝতে পেরেছে। তাকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়নি। তবে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সে প্রস্তুত থাকবে বলে অভিভাবকরা পুলিশের কাছে সম্মতি দিয়েছেন।
অপরদিকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে অবস্থানরত মোহাইমেনুলের মা জনকণ্ঠকে টেলিফোনে বলেছেন, তাঁর পুত্র শিবির কমর্ী নয়। জামায়াত শিবির জোর করে মোহাইমেনুলকে তাদের কমর্ী দাবি করেছে। যা ডাহা মিথ্যা। তিনি আরও জানিয়েছেন, ঐ দিন মহিউদ্দিনকে হত্যা করার সময় সন্ত্রাসীরা মোহাইমেনুলকেও আঘাত করেছে। পরে মোহাইমেনুল পাঁচলাইশ এলাকার নিরাময় নামের একটি কিনিকে চিকিৎসা নিয়েছে। এ ব্যাপারে সিএমপির ডিসি (নর্থ) বনজ কুমার মজুমদার জানান, এ তথ্য তাঁরা অবহিত হয়ে নিরাময় কিনিকে সন্ধান চালিয়েছেন। এতে বেরিযে এসেছে মোহাইমেন কিনিক থেকে চিকিৎসা নিলেও রেজিস্ট্রারে নাম গোপন করেছে। পুলিশের সন্দেহ সে নাম গোপন করল কোন্ উদ্দেশ্যে। যেহেতু সে মহিউদ্দিন হত্যাকা-ের অন্যতম প্রধান প্রত্যদশর্ী এবং ঐ মুহূর্তে কিভাবে কারা এ হত্যাকা- চালিয়েছে তা বের করার জন্য মোহাইমেনুলকে পুলিশের প্রয়োজন। কিন্তু সে আত্মগোপনে গেল কেন। উলেস্নখ্য, হত্যাকা-ের মামলায় মোহাইমেনুল আসামি নয় এবং পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের মামলায়ও আসামি নয়। পুলিশের মতে, সে প্রকৃত ঘটনা যা জানে তা জানিয়ে পুলিশকে সহায়তা করতে পারে।
এদিকে শুক্রবারের পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার পর বিশেষ মতা আইনে গ্রেফতারকৃত জামায়াত-শিবিরের ৮৫ নেতাকমর্ীর মধ্যে ২০ জনের জিজ্ঞাসাবাদ রবিবার রাতে সম্পন্ন হয়েছে। আজ থেকে আরও ২০ জনের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে কোতোয়ালি পুলিশ জানিয়েছে। প্রথম দফায় রিমান্ডে আনা ২০ জন জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তাদের ভুল তথ্য দিয়ে জানাজা এবং মিছিলে অংশগ্রহণ করানো হয়েছে। পরে তারা জানতে পেরেছে নিহত মহিউদ্দিন শিবির কমর্ী নয়। তদনত্ম কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত অন্যতম আসামি জামায়াতের নগর নায়েবে আমীর অধ্যাপক আহসান উলস্নাহ জিজ্ঞাসাবাদে নিজেই স্বীকার করেছেন, নিহত মহিউদ্দিন মাসুম শিবিরের নয়। এমনকি তিনি মহিউদ্দিনকে চেনেন না এবং কোনদিন দেখেনওনি বলে দাবি করেন। মহিউদ্দিন মাসুম হত্যার ঘটনাটি তাদের জানা নেই বলেও দাবি করছেন নগর জামায়াতের এ শীর্ষ নেতা। তারপরও সেখানে কেন গিয়েছিলেন_ পুলিশের এমন জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে আহসান উলস্নাহ জানিয়েছেন, তিনি সাংগঠনিক দাওয়াতে সেখানে গিয়েছিলেন। উলেস্নখ্য, অধ্যাপক আহসান উলস্নাহসহ যে ২০ জনকে প্রথম দফায় রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন করা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যরা হলেন এসএম লুৎফর রহমান, মোঃ নুরম্নজ্জামান, আহমদ উলস্নাহ, মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ ইব্রাহিম, মোঃ আবুল কালাম আজাদ, মোঃ কামাল হোসেন ফারম্নকী, মোঃ রফিকুল আলম, মোঃ ফরহাদ, মোঃ মাহবুবুর রহমান, মোঃ আলাউদ্দিন, কাউসার, হাসান মাহমুদ, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, আরিফ মাহমুদ, মোঃ ইয়াসিন, মোঃ শামসুল আলম, আফজাল আহমদ ও মোঃ খোরশেদ আলম।
এদিকে চবির গ্রেফতারকৃত ২৪ শিবির কমর্ীর মামলাটি কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত মামলার সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। রবিবার ২৩ শিবির কমর্ীর জামিন আবেদন চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নামঞ্জুর হয়েছে। পুলিশ এদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে আনার আবেদন করেছে। এর ওপর আজ শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। উলেস্নখ্য, চবির বিভিন্ন কটেজে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারকৃত ২৪ জনের মধ্যে একজনকে পরীা দেয়ার স্বার্থে আদালত জামিন দিয়েছে গত শনিবার।
অপরদিকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, মহিউদ্দিন মাসুমকে হত্যার সময় ৫/৬ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ষোলশহর স্টেশনে অবস্থান নিয়েছিল। এ সময় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে একটি শাটল ট্রেন চবির উদ্দেশে ষোলশহর স্টেশনে পেঁৗছার কথা। ঐ ট্রেনে মূলত মহিউদ্দিন মাসুম ও মোহাইমেনুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য স্টেশনে অপো করছিল। হত্যাকা-ের ২ মিনিট আগেও মোহাইমেনুল তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রেমিকার সঙ্গে মোবাইলে কথোপকথন চালিয়েছে। একপর্যায়ে মোহাইমেনুলের প্রেমিকা শুনতে পেয়েছে মোহাইমেনুল বলছিল, "আমি না, আমি না। এরপরও হামলাকারীরা মোহাইমেনুলের শরীরে আঘাত করেছে।
জিআরপি থানার একটি সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকা-ের ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে তা ষোলশহর স্টেশনের সম্মুখভাগে নয়। নুরম্নল ইসলাম স্টোর নামক একটি স্টেশনারি দোকানের পেছনে ৫/৬ সন্ত্রাসীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মহিউদ্দিন মাসুম খুন হয়েছে। দূর থেকে যারা প্রত্য করেছে তাদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, জিন্স প্যান্ট পরিহিত যুবকরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে একটি ছেলে দৌড়ে পালিয়েছে, কিন্তু বাকিরা এই যুবককে (মহিউদ্দিন) ঘটনাস্থলেই মৃতু্য নিশ্চিত করে চম্পট দেয়। অন্ধকার হওয়ার কারণে হত্যাকারীদের চেহারা দেখতে পায়নি ঘটনাস্থলের প্রত্যদশর্ীরা।
পাঁচলাইশ থানায় আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা শাটল ট্রেনটি ষোলশহর স্টেশনে মাত্র ১ মিনিটের জন্য থামে। এ সময় অন্য শিার্থীরা ট্রেনে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে চলে যায় । ট্রেনটি ছেড়ে যাবার পরই ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ যখন মহিউদ্দিন মাসুমের তবিত লাশ উদ্ধার করে তখন মহিউদ্দিনের কাঁধে থাকা ঝোলানো ব্যাগ, প্যান্টের পকেট থেকে একটি মোবাইল সেট, মানিব্যাগ, ভোটার আইডি কার্ড ও ডায়েরিও উদ্ধার করে । তবে ডায়েরির পাতায় মোহাইমেনুলের নাম লেখা ছিল বলে প্রথমে মহিউদ্দিনকে মোহাইমেনুল ভেবেছিল পুলিশ। পরবর্তীতে মহিউদ্দিনের মোবাইলে সংরতি নম্বর থেকে এক স্যারের নম্বরে ফোন করা হলে দেখা গেল এ নম্বরটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিকের নম্বর। শিক এই ছাত্রের বিষয়টি ও পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারায় পরবর্তীতে ঐ মোবাইল থেকে 'মামা' নামে সংরতি নম্বরে ফোন করা হলে তার মামা হত্যার শিকার ছাত্রের পরিচয় দিয়েছেন ভাগ্নে হিসেবে। শুধু তাই নয়, তার মামা বলেছেন, নগরীর শুলকবহর এলাকায় সপ্তাহে ৩ দিন সে একটি টিউশনিতে আসে। গত মাসে টিউশনির বেতন থেকে মামাকে মিষ্টি পর্যনত্ম খাইয়েছে নিহত মহিউদ্দিন।
এদিকে মামলার এজাহারে জামায়াত-শিবিরের শীর্ষস্থানীয় ১০ নেতার নাম থাকলেও এদের খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। মূলত হত্যার ইন্ধনদাতা হিসেবে পুলিশ ধারণা করছে ঘটনার পর চক্রের মূল হোতা এসব নেতা গা-ঢাকা দিয়েছেন। এদের গ্রেফতার করা গেলে হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের পরিচয় পাওয়া যাবে। পাশাপাশি ঘটনার কু উদ্ঘাটনে পুলিশকে বেগ পেতে হবে না। কোতোয়ালি থানা পুলিশের ৪ সদস্য রিমান্ডে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনও চাঞ্চল্যকর কোন তথ্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি। ইতোমধ্যে মহিউদ্দিন, মোহাইমেনুল ও তার প্রেমিকার মোবাইল নম্বরগুলো ট্র্যাকিং করা হয়েছে। এসব মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অনেক তথ্য ইতোমধ্যে পুলিশের নজরে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
চবি ছাত্রলীগের মিলাদ ॥ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রলীগ সমর্থক এএএম মহিউদ্দিনের মৃতু্যতে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিল হয়েছে। মিলাদে ছাত্রলীগের পাঁচ শতাধিক নেতা-কমর্ী অংশগ্রহণ করেন। মিলাদে মহিউদ্দিনের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং খুনী জামায়াত-শিবির ক্যাডারদের অতি দ্রম্নত বিচার দাবি করা হয়।। মিলাদে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, সাধারণ সম্পাদক এরশাদ হোসেন, সহসভাপতি আনিসুজ্জামান ইমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরম্নল ইসলাম, শেখ জাহেদুর রশিদ, জাহিদুল আলম জুয়েল, সাইফুল আলম লিমন, কাজী তানজিম হোসেন, সাইফুদ্দিন খালেদ, জুনায়েদ এয়াকুব ও গিয়াস দিয়াজ ইরফান চৌধুরী।
চবি ছাত্রলীগে এখনও গ্রম্নপিং বিভক্তি ॥ সংগঠনের এ দুঃসময়েও এক হতে পারল না চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। নেতাকর্মীরা দু'গ্রম্নপে বিভক্ত হয়ে সংগঠনের কার্যক্রম আলাদা আলাদাভাবে পরিচালনা করছে। এমনকি ছাত্রলীগ সমর্থক মহিউদ্দিনের মৃতু্যর পর বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছে আলাদা আলাদাভাবে। এতে তৃণমূলের নেতাকমর্ীদের মধ্যে তীব্র ােভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে এ বিভক্তি দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ছাত্রলীগের এ অবস্থার কারণে ফায়দা লুটছে শিবির।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, চবি ছাত্রলীগ মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও নগর আওয়ামী লীগ নেতা আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের ব্যানারে বিভক্ত। এ দু'গ্রম্নপের মধ্যেও আছে বিভিন্ন উপগ্রম্নপ। নিজেদের শক্তিশালী করতে এসব উপগ্রম্নপে ছাত্র শিবিরের পুরনো নেতাকমর্ীদেরও দলে ঠাঁই দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের কারণে সংগঠনে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। ছদ্মবেশী শিবির কমর্ীদের কারণে সংগঠনে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ােভ ল্য করা যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। ছদ্মবেশী শিবির কমর্ীরা ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচী চলাকালে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে বেকায়দায় ফেলে দেয়। গত এক বছরে ছাত্রলীগের কমপ ে৫টি কর্মসূচীতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার নজির রয়েছে। সংগঠনের ত্যাগী নেতাকমর্ীরা দাবি করেছেন, ছাত্র শিবির থেকে আসা কমর্ীরা এ ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। এ সময় সাংবাদিক নির্যাতন ও বিশ্ববিদ্যালয় সম্পদ ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। তাদের এ কার্যক্রমের মাসুল দিতে হয়েছে ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীদের। এসব অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে গত এক বছরে প্রশাসন ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকমর্ীকে বহিষ্কার করে। দলীয় নেতাকমর্ীদের অভিযোগ, সংগঠনের এক গ্রম্নপ গত নবেম্বরে ছাত্র শিবিরের শীর্ষ নেতার সঙ্গে ফরেস্ট্রি হোস্টেলে বৈঠক করে। এ গ্রম্নপ সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচীতে প্রত্য ও পরোভাবে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটায়। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ জনকণ্ঠকে জানান, সময় এসেছে এক হওয়ার। বিভক্ত থাকলে সংগঠনই তিগ্রসত্ম হবে। এজন্য উভয় পকে সব ধরনের সংকীর্ণতার পরিহার করে সংগঠনের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সহসভাপতি আনিসুজ্জামান ইমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন ও নজরম্নল ইসলাম জানান, সংগঠনের মধ্যে গ্রম্নপিং জিইয়ে রেখে একটি মহল ফায়দা লুটছে। আর এর সুযোগ নিচ্ছে মৌলবাদী ইসলামী ছাত্র শিবির। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত ও দেশ বিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধে ছাত্রলীগকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তৃণমূলের কমর্ীরা জনকণ্ঠকে জানান, শীর্ষ নেতাদের কারণে সংগঠনে গ্রম্নপিং চলছে। এর কুফল ভোগ করতে হচ্ছে তৃণমূলের কমর্ীদের। শীর্ষ নেতারা অতি দ্রম্নত সব ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে চবিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাসের সুগঠিত শক্তিতে পরিণত করবে।
এদিকে মেধাবী ছাত্র মহিউদ্দিনের মৃতু্যতে রবিবার অনুষ্ঠিত মিলাদ মাহফিলে ছাত্রলীগের এক গ্রম্নপের অধিকাংশ নেতাকমর্ী উপস্থিত ছিলেন না। অথচ শনিবার রাতে দু'গ্রম্নপের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করে একসঙ্গে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। কিন্তু মিলাদের দিন এ গ্রম্নপটির নেতাকমর্ীরা ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন।
চবি শিকের বিরম্নদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি ॥ গত শুক্রবার জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার পর গ্রেফতারকৃত চবি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক ড. মনির আহমদের মুক্তি দাবি করেছে চবি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঐ দিন অধ্যাপক মনির ও অধ্যাপক রাশিদা একই বিভাগের ছাত্র মহিউদ্দিনের মরদেহ দেখতে চমেক হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতালে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে তিনি ঐ স্থান ত্যাগ করে বাসায় ফিরে যান। অথচ তার নামে পুলিশ মামলা দিয়েছে। বিতর্কিত মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.