তাহরির স্কয়ার আবার উত্তাল

মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে গতকাল শনিবার বাধা দেওয়া হয়েছে। দেশটির রাজধানী কায়রো শহরের তাহরির স্কয়ারে বিক্ষোকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
প্রেসিডেন্ট মুরসি একচ্ছত্র ক্ষমতা হস্তগত করে ডিক্রি জারি করার পর তাঁর বিরোধীরা গত শুক্রবার বিক্ষোভ শুরু করে তাহরির স্কয়ারে। পুলিশ ও সরকার-সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এদিকে, মুরসির ওই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তাহরির স্কয়ারে শতাধিক বিক্ষোভকারী শুক্রবার সারা রাত অবস্থান করেন। গতকাল সকালে সেখানে আরও লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। উত্তেজিত জনতা এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশের একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। রাজধানী ছাড়াও অন্য কয়েকটি শহরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে শুক্রবার সংঘর্ষ হয় বন্দর নগর সুয়েজ ও ভূমধ্যসাগরীয় শহর আলেক্সান্দ্রিয়ায়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, মিসরীয় বিপ্লবকে ছিনতাই করে মুরসি এখন নতুন হোসনি মোবারক হতে চলেছেন। তিনি নিজের ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি মিসরের ওপর চাপিয়ে দিতে চান।
গতকাল তাহরির স্কয়ার থেকে বিক্ষাভকারীদের হটিয়ে দেওয়ার পর বামপন্থী, উদারপন্থী, সমাজতন্ত্রী ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলো আগামী মঙ্গলবার আবার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। সরকার উৎখাত ও মুরসির বিতর্কিত ডিক্রি বাতিলের দাবিতে তাহরির স্কয়ারমুখী ওই বিক্ষোভ আহ্বান করা হয়েছে বলে একটি দলের বিবৃতিতে বলা হয়।
প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বাড়ানোর ফলে তাঁর কোনো সিদ্ধান্তে বিচার বিভাগ এখন থেকে আর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত মুরসির এই একচ্ছত্র ক্ষমতা বহাল থাকবে।
মোবারক-উত্তর মিসরে গণতন্ত্রে উত্তরণ-প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে আইনি বিভিন্ন বাধা দূর করতেই প্রেসিডেন্ট মুরসির ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে বলে তাঁর সহযোগীরা দাবি করেছেন। মুসলিম ব্রাদারহুডসহ কয়েকটি দলের নেতা-কর্মীরা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে শুক্রবার সমর্থন জানায়। কায়রোর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে সমর্থকদের উদ্দেশে এক ভাষণে মুরসি শুক্রবার বলেন, তিনি দেশে আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছেন। গণতন্ত্র ও মানুষের মুক্তি নিশ্চিত করাই তাঁর উদ্দেশ্য। রয়টার্স, এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.