যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং আমাদের দায় by ড. হারুন রশীদ

দেশে বর্তমানে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দুইটি ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিচার চলছে। ইতোমধ্যে বিচার কার্যক্রম অনেকদূর এগিয়েছে। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর এখন শুনানি চলছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ বছরের শেষেরদিকে অন্তত তিন/চার জনের বিচার শেষ করা সম্ভব হবে।


বাকিদের বিচারও চলতে থাকবে। এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত আরও যারা রয়েছে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।
বর্তমান সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার করার। সরকার যে যুদ্ধাপরাধের বিচারকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে বলে আসছেন ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে না।’ এ বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রশ্নে বর্তমান সরকারের দৃঢ় অবস্থানই মূর্ত হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগে ৭৩টি ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এই সুযোগে যুদ্ধাপরাধীরা রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়। এরা তখন সমাজে নানা স্তরে অধিষ্ঠিত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধারা সে সময় অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হন। স্বাধীনতার চার দশক পর সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় এনেছে। এক সময় মনে করা হতো বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা সম্ভব হবে না। স্বঘোষিত খুনীরা পার পেয়ে যাবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা সেই বিচার করে দেশকে যেমন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন তেমনি খুনী চক্রকে এ বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছেন যে, অপরাধীরা যত শক্তিশালীই হোক তারা পার পাবে না। তাই তো এক সময় যাদের গাড়িতে স্বাধীন বাংলার পতাকা তুলে দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তাদের অনেকেই এখন বিচারের আওতায়। জাতির পতাকা যারা খামছে ধরেছিল সেই পুরনো শকুনদের বিচার করতে হলে গোটা জাতিকেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা এদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং যাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতায় এদেশের লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, মা-বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নেয়া হয়েছিল; বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তারা আবার স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পায়। সামরিক শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় এরা ক্ষমতার স্বাদও গ্রহণ করে। কাজেই এরা অনেকদূর পর্যন্ত জাল বিছিয়েছে। এদের বিচার কারাটা তাই অত সহজ নয়। বিচার বন্ধে তারা নানা রকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বর্তমান বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে এদের পক্ষে কথা বলছেন। তাদের রাজনৈতিক জোটও রয়েছে জামায়াতের সঙ্গে। কাজেই ভেতরে-বাইরে সর্বত্র প্রবল বিরোধিতার মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। যদিও এদেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে যুদ্ধাপরাধের বিচারে। মানুষের সেই সমর্থনই একটি বড় ভরসার জায়গা।
মনে রাখতে হবে, যুদ্ধাপরাধীরা মানবতার শত্রু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল। এ ছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ইতিহাসের অনেক কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর বিচার সম্পন্ন হয়েছে। মাত্র কয়েক বছর আগে বসনিয়ায় গণহত্যার দায়ে সার্বিয়ান সমরনায়কের বিচার হয়েছে ও তাকে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া কিছুদিন আগে কাম্পুচিয়ায় হত্যাযজ্ঞ চালানোর দায়ে পলপট সরকারের কয়েক নেতার বিচারের জন্য নমপেনে একটি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল। হত্যাযজ্ঞ চালানোর কয়েক বছর পর এ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। সুতরাং বাংলাদেশেও ৪১ বছর পর যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর মধ্য দিয়ে নিঃসন্দেহে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এখন এ বিচারকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিতে হবে সমাপ্তির দিকে। বিচারের রায় ঘোষণা ও তা কার্যকরের অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশের মানুষ।
রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী গঠন করে এদেশের ঘৃণ্য কুলাঙ্গাররা সেদিন পাকবাহিনীর গণহত্যাকে সমর্থন যুগিয়েছিল। এই গণহত্যা যে অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ছিল সেটা তো ইতিহাসই সাক্ষ্য দেয়। সম্প্রতি প্রকাশিত পাকিস্তানের এক সেনা কর্মকর্তার বইয়েও এই গণহত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি করা হয়েছে। বইটি বের হওয়ার পর পাকিস্তান সরকার এ নিয়ে বেকায়দায় রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে যখন যুদ্ধাপরাধের বিচার চলছে তখন পাকিস্তান সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইতিহাসের জাজ¦ল্য সাক্ষী এই বইটি।
পাকবাহিনীর চতুর্র্দশ ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হুসেন রাজা তাঁর ‘এ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি ইস্ট পাকিস্তান ১৯৬৯-৭১’ বইটিতে লিখেছেন- স্বাধীনতা ঘোষণার অপরাধে বঙ্গবন্ধুকে প্রকাশ্যে ঢাকায় ফাঁসিতে ঝোলাতে চেয়েছিলেন টিক্কা খান। বাংলাদেশের মা-বোনের শ্লীলতাহানির জন্য হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন নিয়াজী। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় গণহত্যায় নিয়োজিত ছিল পাকিস্তানী সেনা কমান্ডার। তাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে ও নির্দেশে হয় গণহত্যা। মুক্তিযুদ্ধে পাক সেনাদের নির্মম অত্যাচারের সবিস্তার চাক্ষুস বিবরণই শুধু নয়, সেই সময় পূর্ব পাকিস্তানের কোন্ জেলায় কোন্ কোন্ অফিসার গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তার অকপট স্বীকারোক্তিও রয়েছে বইটিতে। এই জেনারেল সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন। আর তিনি তাঁর পরিবারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর মৃত্যুর পর যেন বইটি প্রকাশ করা হয়। এর যুক্তিসঙ্গত কারণও ছিল। বইটির তথ্য-উপাত্ত যে পাকিস্তান সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবে সেটা লেখকের জানা ছিল। আর সে কারণেই তিনি রোষানলে পড়তেন খুব স্বাভাবিক কারণেই। এ জন্যই মৃত্যুর পর তা প্রকাশের নির্দেশ দেন তিনি তাঁর পরিবারকে।
একাত্তরে বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের বিবরণ রয়েছে পাক জেনারেলের বইটিতে। রাজা জানিয়েছেন, খান সেনাদের মহিলাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আরেক কমান্ডার শেখ নিয়াজি। নির্দেশ অমান্য করার জন্য তার সামনেই কোমরবন্ধ থেকে পিস্তল বের করে এক বাঙালী অফিসারকে গুলি করেছিলেন নিয়াজি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এই নিয়াজিই যুদ্ধের শেষদিকে ঢাকায় ৯০ হাজার পাক সেনাসহ ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। আর এর সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার পতন ঘটে। তার কিছু দিন আগেই নিয়াজি লেখকের কাছে তাঁর পূর্ব পাকিস্তানের বান্ধবীদের ফোন নম্বর চেয়েছিলেন বলে বইটিতে জানিয়েছেন রাজা।
বই প্রকাশের পর ইতোমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেক গোমর ফাঁস হয়ে যেতে পারে বিধায় পাকিস্তান সরকার বইটির প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে বইটি নিষিদ্ধের দাবিও উঠেছে। বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত হবেÑবইটি দ্রুত সংগ্রহ করে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রামাণ্য দলিল হিসেবে তা দাখিল করা। যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তরা যখন নিজেদের অপরাধকে অস্বীকার করা, ধুয়ে-মুছে ফেলার নানা অপচেষ্টায় লিপ্ত ঠিক তখনই বইটি হয়ত তাদের অনেকেরই গোমর ফাঁস করে দিতে পারে। আর তা বিচার প্রক্রিয়াকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে নিঃসন্দেহে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার দ্রুত নিষ্পন্ন করার ব্যাপারে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে। বিশেষ করে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম এই দাবি তুলে কিছু সমস্যার কথাও বলেছেন। এক গোলটেবিল বৈঠকে এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার বলেছেন, মানবতাবিরোধী বিচার আইনে আপীলের বিধান বাতিলের জন্য সরকারকে অনুরোধ করা হবে। কেননা বিশ্বের কোথাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার সুযোগ নেই। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ’৭১-এর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হারুন হাবীব বিচারের অগ্রগতি, বিভিন্ন সমস্যা এবং কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করেন। অগ্রগতির মধ্যে রয়েছে আগের যে কোন সময়ের তুলনায় তদন্ত ও প্রসিকিউশন টিমের মধ্য সমন্বয় সন্তোষজনক। অভিযুক্ত, আটক প্রায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন, মামলার শুনানিতে তারা সন্তুষ্ট। অধিকাংশ সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রদান এবং দুই নম্বর ট্রাইব্যুনাল বিচারের বিষয়ে মানুষের মনে আগের চেয়ে অনেকখানি আশা সৃষ্টি করেছে।
সমস্যার মধ্যেÑমামলার দীর্ঘসূত্রতা, প্রসিকিউশন কিছু নির্ধারিত সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অভিযুক্তদের সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত সতর্কতার অভাব লক্ষ্য করার মতো। সাক্ষী ও তাদের পরিবারপরিজনদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি। এর ফলে আসামি পক্ষ নানাভাবে হুমকি এমনকি হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এতে করে মামলাগুলো দুর্বল হবার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীরা, বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সরাসরি স্বাধীনতাবিরোধী এবং চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ অবলম্বন করেছে। তারা ঐতিহাসিক এ বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত বা ভ-ুল করার লক্ষ্যে দেশে অস্থীতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
এমন অবস্থায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় আরও কয়েকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং প্রতিটি চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেফতার করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার প্রস্তাব করে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ’৭১। বর্তমান মামলাগুলোর কার্যক্রম আরও দক্ষতা ও দ্রুততার সঙ্গে পরিচালিত করা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো সকল অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দল-গোষ্ঠীর সম্মিলিত মোর্চা গঠন করতে হবে। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে বিদেশে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা প্রতিহত করতে অবিলম্বে বিদেশী দূতাবাসকে সক্রিয় করার পাশাপাশি বিচারপ্রত্যাশী প্রবাসী বাঙালীদের প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয় বৈঠকে।
মনে রাখা প্রয়োজন, যুদ্ধাপরাধের বিচার দলীয় কোন বিষয় নয়। আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষমতায় এসে এ বিচার কার্যক্রম শুরু করেছে। এ দায় কেবল তাদের একার নয়। সর্বস্তরের মানুষেরই এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের প্রচারের বিরুদ্ধে সত্যকে তুলে ধরতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, কেন যুদ্ধাপরাধের বিচার করা জরুরী। মুক্তিযুদ্ধের ন্যায় এটিও আরেকটি যুদ্ধ। এ যুদ্ধে সকলকে শামিল হতে হবে। জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে। যারা যুদ্ধাপরাধীদের অপকর্মের প্রত্যক্ষদর্শী তাদের উচিত ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেয়া। আর যাঁরা সাক্ষ্য দিচ্ছেন তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন, যুদ্ধাপরাধীরা মরণ কামড় দেবে। তারা বিভ্রান্তি ছড়াবে। অনেক পথভ্রষ্ট মুক্তিযোদ্ধাকেও দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করবে (যুদ্ধাপরাধের দায়ে গ্রেফতার হওয়া মীর কাসেম আলীর মালিকানাধীন দিগন্ত টেলিভিশনে এবং নয়াদিগন্ত পত্রিকায় বঙ্গবীর হিসেবে খ্যাত এবং বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত কিংবদন্তির মুক্তিযোদ্ধাকে দেখা যাচ্ছে অনুষ্ঠান করতে এবং কলাম লেখতে।) কাজেই সতর্ক এবং সাবধান থাকতে হবে। কে কোন্ পক্ষের তা ভাল করে চিনতে হবে। মানুষের পক্ষে, সভ্যতার পক্ষে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে হবে।
ইতিহাসের দায় মোচন, বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে দেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা জাতি হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু স্বাধীনতার প্রায় চার দশক পার হলেও সে মহান দায়িত্ব পালন করা যায়নি। যে উদ্দীপনা ও আত্মত্যাগের মহিমায় মাত্র নয় মাসের মাথায় একটি সুসজ্জিত সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করে এ দেশের দামাল ছেলেরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সুবিচার করতে চারটি দশক অপেক্ষা করতে হলো। এই অপেক্ষা যাতে আর দীর্ঘ না হয় এ জন্য সকলকেই আবার একাত্তরের চেতনামন্ত্রে দীক্ষিত হতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
harun_press@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.