গণ-আন্দোলনের দ্বিতীয় বার্ষিকী-ফের ফুঁসে উঠেছে মিসরীয়রা সহিংসতায় নিহত ৯

মিসরে হোসনি মুবারকবিরোধী গণ-আন্দোলন শুরুর দ্বিতীয় বার্ষিকীতে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৯ জন মারা গেছে। সাড়ে পাঁচ শয়েরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। মিসরের ২৭টি প্রদেশের ১২টিতেই সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহবান জানান। এক পুলিশসহ আটজনের মৃত্যুর পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর সুয়েজে গতকাল শনিবার সেনা মোতায়েন করা হয়।
গত শুক্রবার মুবারকবিরোধী আন্দোলনের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে মিসরের ছোট-বড় অনেক শহরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়। রাজধানী কায়রো, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেকজান্দ্রিয়া, ইসমাইলিয়া, দামানহুরসহ অন্যান্য শহরে মিছিল ও সমাবেশ হয়। কয়েকটি শহরে সরকারি ভবন ও মুসলিম ব্রাদারহুডের কার্যালয় লক্ষ্য করে হামলা হয়। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করে, প্রেসিডেন্ট মুরসি গণ-আন্দোলনের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন এবং নিজের দল মুসলিম ব্রাদারহুডের স্বার্থরক্ষায় সব কাজ করছেন। তারা গত মাসে গণভোটে পাস হওয়া নতুন সংবিধান বাতিলেরও দাবি জানায়।
গত শুক্রবার সুয়েজে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ও গুলি ছোড়ে। গতকাল সকালে সুয়েজজুড়ে সেনা ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন করা হয়। এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী দাবি করেছে, নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান ও সরকারি-বেসরকারি সম্পদ রক্ষার উদ্দেশ্যেই সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কায়রোর প্রেসিডেন্ট বাসভবনের সামনে ও বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। ভূমধ্যসাগর উপকূলের শহর দামিয়েত্তায় বিক্ষোভকারীরা সরকারি অফিস-আদালত ঘেরাও করে এবং প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচলে বাধা দেয়। মিসরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১২টি প্রদেশে সহিংসতায় অন্তত ৪৫৬ জন আহত হয়েছে। কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে আহতের সংখ্যা অন্তত ৪৭০ বলে উল্লেখ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালায় থেকে ৯৫ জন নিরাপত্তা কর্মকর্তার আহত হওয়ার খবর জানানো হয়।
এদিকে গত শুক্রবার রাতে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে মুরসি দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহবান জানান। জনগণকে 'বিপ্লবের মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে এবং শান্তিপূর্ণভাবে মতামত প্রকাশের' আহবান জানান। সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে মুরসি বলেন, 'গণ-আন্দোলনের অর্জনকে নস্যাৎ করতেই ঘৃণ্য এ সহিংসতা চালানো হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কোনোভাবেই বিক্ষোভকারীদের ছাড় দেবে না এবং অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।' তবে বিরোধী দলগুলো সহিংসতার জন্য মুরসিকেই দায়ী করেছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.