শোকের মাস

বাঙালী জাতির বেদনাবিধুর শোকের মাস আগস্টের আজ তৃতীয় দিন। সর্বত্রই শোকের আবহ। রাজধানীসহ সারাদেশেই বিশাল বিশাল কালো পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার টানানো হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাতে নানা সেøাগান-কবিতা শোভা পাচ্ছে।


শোকের মাসে বাঙালী জাতি এবার পলাতক খুনীদের ফাঁসি, যুদ্ধাপরাধী-রাজাকার এবং তাদের দোসর-মদদদাতাদের দ্রুত বিচারের দাবিতে সোচ্চার। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর বাঙালী জাতি কলঙ্কমুক্ত পরিবেশে শোকের মাস পালন করছে।
নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শোকাতুর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শোকের নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে স্মরণ করছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ‘৭৫-এ ইতিহাসের নিষ্ঠুর ও জঘন্যতম এই হত্যাযজ্ঞের পর থেকেই বাঙালী ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস এবং পুরো মাসকে শোকের মাস হিসেবে পালন করে আসছে।
শোকের মাসের তৃতীয় দিনেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন সংগঠন শোকর‌্যালি, আলোচনাসভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মাসব্যাপী জাতীয় শোক দিবস এবং ২১ আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলা দিবসের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ভোরে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ছয়টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও গার্ড অব অনার প্রদান, সাড়ে সাতটায় বনানী কবরস্থানে দোয়া ও ফতেহা পাঠ, সোয়া দশটায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবরস্থানে দোয়া ও ফাতেহা পাঠ, দেড়টায় মিলাদ মাহফিল, বেলা সাড়ে এগারোটায় দেশের মন্দিরে মন্দিরে প্রার্থনা এবং বাদ আছর সকল জেলায় ইফতার ও মিলাদ মাহফিল।
ছাত্রলীগের মাসব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভার আয়োজন করে। আলোচনাসভায় স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রূখে দাঁড়ানোর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবি জানানো হয়।
শোকের মাস উপলক্ষে ৭১-এর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তারা আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আগেই যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন করে আদালতের রায় কার্যকরের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে ৩০ লাখ শহীদের আত্মা ও সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ মা-বোনের মনে শান্তি আসবে না। সরদার গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার আবদুল বাকি, আনোয়ার হোসেন খান আয়নাল, মোড়ল আমজাদ হোসেন, আফাছ উদ্দিন প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.