খাদ্যে ভেজাল

খাদ্যে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের কারণে মানুষের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ। এতে বিত্তবান বা বিত্তহীন কেউই ঝুঁকিমুক্ত নন; খাদ্য দূষণের কারণে সবাই আশঙ্কাযুক্ত জীবনযাপন করছেন। বিষাক্ত রাসায়নিকমুক্ত খাদ্য কোন বাজারেই পাওয়া যায় না। এ যেন এক অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে।


এ দেশে বাস করতে হলে স্বাস্থ্যের জন্য অতিশয় ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত ভেজাল খাদ্য খেতেই হবে; এর যেন কোন বিকল্প নেই। ফরমালিন দেয়া মাছ, মাংস ও শাকসবজি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পত্রিকায় লেখা হচ্ছে; কিন্তু অবস্থার তেমন পরিবর্তন হচ্ছে না। এর কারণ কি? একদল অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যদূষণের জন্য দায়ী। এরাই নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যে ফরমালিন ও অন্যান্য রাসায়নিক মিশিয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। বিষাক্ত খাদ্য খেয়ে মানুষ নানা ধরনের জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই খাদ্যে ভেজালকে এর প্রধান কারণ মনে করেন।
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কটের সৃষ্টি করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন মহাজোট অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুদদারদের দমনের জন্য অনেকবারই উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে রমজান ও ঈদের আগেই তারা প্রতিবারই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন; প্রতিবারই ব্যবসায়ীরা দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু পরে তারা কথা রাখেননি। তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এর ফলে দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষ খুবই অসুবিধার মধ্যে রয়েছে। অথচ বাজারে খাদ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এই অসাধু মজুদদার ও ব্যবসায়ীরা ন্যূনতম ন্যায়নীতি ও যুক্তি মানতে রাজি নয়।
দেশে খাদ্যে ভেজালের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা দরকার; মূল্যস্ফীতি ও সমাজে বিঙ্খৃলা সৃষ্টির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে হবে। এসব সুবিধাবাদী দুর্বৃত্ত দেশের উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধক। এদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই; এরা গণমানুষের শত্রু। তাই এদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া দরকার। জনগণ আর কতকাল এই শঙ্কাযুক্ত জীবন যাপন করবে? দেশের মানুষ চায় শান্তিপূর্ণ-নিরাপদ সমাজ।

No comments

Powered by Blogger.