অবিলম্বে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হোক-চমেক হাসপাতালে হৃদরোগ চিকিৎসা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ একটি হৃদরোগ বিভাগ নেই—এটি নিঃসন্দেহে হতাশাব্যঞ্জক তথ্য। কারণ চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর; চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হলো ওই নগরের প্রধান পাবলিক হাসপাতাল, যার ওপর নির্ভরশীল শুধু চট্টগ্রাম নগরবাসী নয়, তিন পার্বত্য জেলাসহ পুরো বিভাগের মানুষ।


রোববারের প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে ছাপা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সমস্যাবলির কথা। প্রথম সমস্যা হলো প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব। এক বছর ধরে তিনজন বিশেষজ্ঞ সার্জন এ হাসপাতালে কর্মরত, কিন্তু তাঁরা কোনো অস্ত্রোপচার করতে পারেন না যন্ত্রপাতির অভাবে। হাসপাতালটির হৃদরোগ বিভাগে শুধু এনজিওগ্রাম করা হয়, যা কোনো অস্ত্রোপচার নয়, একটি পরীক্ষা মাত্র। তা ছাড়া অবকাঠামো অপ্রতুল; একটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। লোকবলের অভাব রয়েছে, সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় লোকবল চাওয়া হয়েছে। একটি ওপেন ও ক্লোজড হার্ট অপারেশন বিভাগ খোলার জন্য বাজেটসহ পরিকল্পনা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে দীর্ঘদিন, কিন্তু কাজের অগ্রগতি নেই।
সব ক্ষেত্রের মতো চিকিৎসা খাতেও অতিরিক্ত ঢাকাকেন্দ্রিকতা রাজধানীর ওপর বেশি চাপ সৃষ্টি করছে। হৃদরোগের মতো প্রাণঘাতী অসুখের চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ অতিরিক্ত বেশি। চট্টগ্রাম অঞ্চলে হৃদরোগের ভালো চিকিৎসা নেই বললেই চলে। কিন্তু ওই অঞ্চলে হৃদরোগীর সংখ্যা বিপুল। অনেকের আর্থিক সামর্থ্য আছে; তাই তাঁরা ঢাকা আসেন বা ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশে যান চিকিৎসা নিতে। বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা এভাবে চলে যাচ্ছে, যার কোনো প্রয়োজন থাকত না, যদি প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে অপারেশনের ব্যবস্থা করা হতো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবিলম্বে কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগ চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবরে প্রকাশ। তাহলে বিলম্ব কেন? অবিলম্বে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা, লোকবল নিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন করে হৃদরোগ বিভাগকে পূর্ণাঙ্গ করা হোক, যাতে বছরে অন্তত এক হাজার হৃদরোগীর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হতে পারে এই হাসপাতালে।

No comments

Powered by Blogger.