সংকটে বিজেএমসি-দুর্নীতি ও অব্যবস্থা দূর হোক

বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন দুর্নীতি ও অব্যবস্থার শিকার হয়ে পুনরায় বোঝা হয়ে উঠছে কি? বিশ্বে সবুজায়ন আন্দোলন জোরদার হওয়ার কারণে এবং পলিথিনসহ ক্ষতিকারক উপাদানে প্রস্তুত ব্যাগ ও বস্তা ব্যবহার বিশ্বের অধিকাংশ দেশে প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে পাটের ব্যবহার বাড়ছিল।
কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে ধস নামে। ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা ও দূরদর্শিতার অভাবে যেসব দেশে এর চাহিদা রয়েছে সেখানে রফতানি বাড়িয়ে এই সাময়িক রফতানি ঘাটতি মোকাবেলা করা সম্ভব হয়নি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্নীতি। পাট ক্রয়, ঋণ নেওয়া, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রয়সহ নানাবিধ দুর্নীতির বিবরণ শনিবার সমকালের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশ পেয়েছে। বিজেএমসির পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধেও দুর্নীতি ও অদক্ষতার অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে দেশে পাটের দাম আশঙ্কাজনকভাবে পড়ে গেছে এবং লাখ লাখ বেল পাট অবিক্রীত অবস্থায় গুদামে পড়ে আছে। সরকারকে অবশ্যই বিদেশে পাট রফতানির নতুন নতুন বাজার সন্ধান করার পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও পাটের ব্যবহার বৃদ্ধি করার বিষয়টির ওপর জোর দিতে হবে। ২০১০ সালে পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে আইন পাস হলেও সে আইনের কার্যকারিতা নেই। অথচ সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, এই আইন কার্যকর করা গেলে দেশেই বার্ষিক পাটের ব্যাগের চাহিদা ৯০ হাজার পিস থেকে বেড়ে এক লাফে ৮০ কোটিতে উন্নীত হবে। আমরা দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে পাটের বাজার সম্প্রসারণে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। বিজেএমসি থেকে দুর্নীতি দূর করা এবং সেখানে দক্ষ ও সৃজনশীল ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে অর্থ ও মেধায় স্বয়ংসস্পূর্ণ করে গড়ে তুলতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.