সময়ের কথা-অর্থনীতি নিজের বনাম দেশের by অজয় দাশগুপ্ত

বাংলাদেশের অনেক রাজনীতিক বলেন, তারা অর্থনীতি তেমন বোঝেন না। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে যে দেশের অর্থনীতি না বুঝলেও নিজের বিত্ত-বৈভব কীভাবে বাড়িয়ে নিতে হবে সে বুঝ থাকে ষোলোআনার ওপর আঠারোআনা। সরকারি দল যারা করেন এবং তাদের আশপাশে যারা থাকেন, এ বিষয়ে তাদের জ্ঞানও টনটনে।


দেশের উন্নয়নের পথে কিন্তু এটা মস্ত এক বাধা। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা যদি দেশের অর্থনীতির স্বার্থ আরেকটু ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করতেন!


এই বছর অর্থাৎ ২০১১ সালের জুলাই মাসে ৫টি শুক্রবার, ৫টি শনি এবং ৫টি রোববার। এমন ঘটনা ঘটে ৮২৩ বছরে একবার। এটি বিরল ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত। তবে মানুষের জীবনে এতে কী আসে-যায়? আপনার, আমার কিংবা অন্য কারও জীবনে এমন অনেক সংখ্যা কিংবা ঘটনা আসে, যা বিরল কিংবা অন্য কিছুর সঙ্গে তার মিল নেই। আপনি যে মুহূর্তটি অতিক্রম করছেন, সেটাও কিন্তু আর ফিরে আসে না। নদী বা সাগরের ঢেউও ফিরে আসে না। এ বছরের আগস্ট মাসে সোম, মঙ্গল ও বুধবারও ৫ দিন করে। অক্টোবরেও তিনটি বার পড়েছে ৫ দিন। তাতে কী প্রমাণ হয়? বিশেষ কিছুই না।
খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডারের এ বছরটির শেষ দুটি সংখ্যা ১১ (এগার) বা ইলেভেন। জানুয়ারি মাসের প্রথম তারিখটি আমরা লিখেছি_ ১/১/১১। আবার ১১ নভেম্বরে লিখব ১১/১১/১১। কেমন মজার, তাই না? আমেরিকায় নাইন-ইলেভেন প্রচলন হয় ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর। এই সূত্র ধরে বাংলাদেশে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি আইন জারি করে বিশেষ ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিষয়টিকে উল্লেখ করা হতে থাকে ওয়ান-ইলেভেন (১/১১) হিসেবে। ঘটনাটা এভাবে স্মরণ রাখা সহজ হয়, আবার খানিকটা মজাও করা যায়।
পাঁচটি শুক্র, শনি ও রোববারের এ মাসের পূর্ববর্তী মাস হচ্ছে জুন। এ মাসের ৫ তারিখটি পড়েছে রোববারে। আগের দুটি দিন শুক্র ও শনিবার। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং তার ঘনিষ্ঠ মিত্র দল জামায়াতে ইসলামী এ তারিখে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে। এর অর্থ দু'ভাবে করা যায়_ এক দল মনে করছে পরপর তিনদিন ছুটি মিলল। আরেক দলের কাছে এর অর্থ_ পরপর তিনদিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কিছু না কিছু বিঘি্নত হবে। সাপ্তাহিক ছুটির দুটি দিনের সঙ্গে মিলিয়ে হরতাল ডাকা হলে তাতে নাকি বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়_ এমনই রাজনৈতিক বিশ্ল্নেষণ রয়েছে। তিন দিনের ছুটিতে কিছু লোক ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যায়, ফলে রাজধানীতে হরতাল 'সফল' বলে দাবি করা সহজ হয়। সহজে বাজিমাতের চেষ্টা আর কি। দেশে আর কতকাল এ ধরনের 'সফল হরতাল' হবে, কে জানে। 'হরতালের ছয় দশক' শীর্ষক একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। তাতে দেখা যায়, এখন রাজনৈতিক আন্দোলনের কর্মসূচির মধ্যে হরতাল আহ্বান সবচেয়ে সহজ। একটি জনসভা করতে হলে লোক সমাবেশ ঘটাতে হয়, মঞ্চ তৈরি ও মাইক বাঁধার কাজ করতে হয়। এর প্রতিটি খাতেই ব্যয়ের পরিমাণ অনেক। দলীয় সমাবেশেও দলের নিষ্ঠাবান কর্মীরা পর্যন্ত বাসে-ট্রাকে না নিলে যেতে চায় না। আর বস্তি থেকে লোক আনতে হলে শুধু গাড়ি পাঠালেই চলে না, হাতে কিছু অর্থ ধরিয়ে দিতে হয়। সে তুলনায় হরতাল আহ্বানে খরচ অনেক কম। আগে হরতাল সফল করার জন্য মাসখানেক প্রচার চালাতে হতো। লিফলেট-পোস্টার ছাপা হতো, আয়োজন হতো পথসভা ও ছোট-বড় সমাবেশের। এখন এসবের বালাই নেই। হরতাল ডেকে দিলে তা প্রচারের ভার তুলে নেয় সংবাদপত্র-বেতার-টেলিভিশন। বাজেট নিয়ে যারা ভাবনাচিন্তা করেন, তারা এ ধরনের স্বল্প ব্যয়ের কর্মসূচিতে খুশি থাকেন।
এবারে আসি জুলাইয়ের প্রথম দিনটির কথায়। এদিন পড়েছে শুক্রবার। পরের দুটি দিন শনি ও রোববার। জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকে অর্থবছর শুরু হয়। পাকিস্তান আমলে শুক্রবারে হরতাল ডাকার রেওয়াজ ছিল। রমজান মাসেও হরতাল ডাকা হয়েছে। এখন তা করা হয় না। ধর্মের অবমাননা করা হবে ভেবে রাজনৈতিক দলগুলো এমনটি করে থাকে। কেউ কেউ মনে করেন, বিএনপি এবং তার মিত্ররা ৯ জুন সংসদে বাজেট পেশের পর এবং ৩০ জুন বাজেট পাসের পর হরতাল আহ্বান করতে পারে। কারণ, এটাই যে সবচেয়ে কম ব্যয়ে এবং কম খাটুনিতে পালন করা যায়! 'তিনদিন ছুটি দিতে চাইলে' তারা ৩ জুলাই রোববার হরতাল দিতে পারে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাজেট প্যাকেজে কী রয়েছে, এটা জানা যাবে ৯ জুন, বৃহস্পতিবার। তিনি কিংবা তার সরকার দ্রব্যমূল্যের কশাঘাত থেকে দেশবাসীকে আপাতত স্বস্তি দিতে পারবেন বলে মনে হয় না। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভা গঠনের পরের কয়েকটি বছর কিন্তু বাজেটের আগে কিংবা পরে দ্রব্যমূল্য তেমন বাড়েনি। এমনকি ১৯৯৮ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যার পরও ভোগ্যপণ্যের বাজার ছিল নিয়ন্ত্রণে। তখন অনেকে বলছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জিনিসের দাম কমে। তখন ১৯৯৬ সালের শেষ দিকে কেবল শেয়ারবাজার চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি বাদে আওয়ামী লীগের জন্য সময়টি ছিল আশীর্বাদের_ কারণ বিশ্ববাজারে সে সময় পেট্রোল-চাল-চিনি-ভোজ্যতেলসহ অনেক পণ্যের দাম কমে গিয়েছিল। তার প্রভাব বাংলাদেশের বাজারেও পড়ে। এবারে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপর চালের দাম কিছুটা কমে যায়। কিন্তু দুই বছর যেতে না যেতেই বাজার গরম। শেয়ারবাজারও গরম হয়েছিল। তবে হঠাৎ করেই তা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। আর এর প্রভাবে গরম হয়ে আছেন অনেক লোক। তারা সরকারের মুণ্ডুপাত করছেন। তাদের জন্য অর্থমন্ত্রীর কোনো আশার আলো দেখাতে পারবেন কি? অর্থনীতির নিয়ম বলে যে এ কাজ খুব কঠিন। যারা চড়া বাজারের সুফল ঘরে তুলেছে, তারা এখন খুশি। গলা ফাটিয়ে তারা বলছে যে বাজার চাঙ্গা হয়েছে বলে ভালো ব্যবসা করেছি_ এতে দোষ কোথায়? কিন্তু ধারদেনা করে কিংবা সঞ্চয় ভেঙে শেয়ার ব্যবসায় নেমে যারা ধরা খেয়েছে, তারা শান্ত হচ্ছে না। ধৈর্য ধরতে তাদের বলাই যায়। কিন্তু সরকারের প্রতি রোষ তাতে কমবে বলে মনে হয় না। শোনা যায়, অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিও চড়া দামে শেয়ার কিনে বিপদে পড়েছেন। শেয়ারবাজার হঠাৎ করে পড়ে যাবে, এটা বুঝতে পারেননি।
কৃষিতে সাফল্য মিলেছে এবারেও। বিশ্ববাজারে চালের দাম চড়া। বাংলাদেশে আমনের পর বোরোতেও বাম্পার ফলন। আমরা যদি কিছু চাল বিশ্ববাজারে বিক্রি করতে পারতাম! এর পরিকল্পনা কি করা যায় না? বোরো মৌসুম যেতে না যেতে সরকার ইউরিয়া সারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী মনে করেন, এ সারের উৎপাদন ব্যয় এবং আমদানি খরচ অনেক বেশি। এত লোকসান সরকার দিতে পারে না। তাছাড়া সস্তায় সার কিনতে পারার কারণে জমিতে প্রয়োজনের চেয়েও বেশি সার অনেক কৃষক ব্যবহার করছিল। আরেকটি সমস্যা_ কৃষিবহির্ভূত খাতে ইউরিয়া সারের ব্যাপক ব্যবহার। এমনকি মুড়ি ও চাল সাদা করার জন্যও ভর্তুকিযুক্ত এ সার ব্যবহার করা হয়। বোরো মৌসুম শেষ হওয়ায় এখন সারের চাহিদা অপেক্ষাকৃত কম। এ কারণে কৃষকরা আপাতত ক্ষোভ-রোষ হয়তো তেমন দেখাবে না। কিন্তু সামনের বোরো মৌসুমে সরকারকে এ দাম বৃদ্ধির কারণে যথেষ্ট বিব্রত হতেই হবে। তবে কৃষকরা সার ব্যবহারে মিতব্যয়ী হলেই যে উৎপাদন কমবে, তা কিন্তু ঠিক নয়। সরকারি কৃষি বিভাগ যদি কোন ফসলে কী পরিমাণ সার ব্যবহার দরকার সে পরামর্শ কৃষককে সময়মতো দিতে পারে তাহলে কিন্তু কৃষকরা দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে তেমন ক্ষোভ দেখাবে না। সারের পাশাপাশি বোরো ধান উৎপাদনের জন্য সেচের পানির পেছনেও প্রচুর ব্যয় পড়ে। পানির মেশিন বসিয়ে একদল লোক জমজমাট ব্যবসা করছে। তারা মাটির নিচ থেকে পানি তুলে আনে। সেখান থেকে প্রচুর পানি তোলার কারণে ভূমিধসের আশঙ্কা বাড়ছে। অথচ প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে প্রচুর পানি মেঘ থেকে ঝরে পড়ে সাগরে চলে যায়। এর যথাযথ ব্যবহার বাড়ানো যায় না? এটা করার জন্য বাজেট বরাদ্দ করার দাবি রয়েছে। মালদ্বীপ সফর করে আসা একজন জানালেন, সেখানে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য প্রতিটি বাড়ির ছাদে রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এ পানি চলে যায় বিশেষ জলাধারে। 'পানির দেশ' বাংলাদেশে কিন্তু এ ধরনের ব্যবস্থা চালুর সময় এসেছে। এখন ঢাকাসহ বড় কয়েকটি শহরে বিশেষ ব্যবস্থায় ওয়াসার পানি সরবরাহ করা হয়। এজন্য প্রচুর ব্যয় পড়ে। সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়। অর্থনীতির নিয়ম হচ্ছে, ভর্তুকিযুক্ত পণ্য যে যত বেশি ব্যবহার করে তার সুবিধা তত বেশি। এটা বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও বলা যায়_ যে যত বেশি লাইট-ফ্যান-এসি যন্ত্র-ফ্রিজ-গ্রিজার-হিটার ব্যবহার করবে তার ভাগে তত বেশি ভর্তুকি মিলবে। গরিবের ঘরে এসব আইটেমের কয়টাই-বা থাকে। বলা যায়, সরকারের ভর্তুকির ভাগ ধনীদের বরাতেই বেশি জোটে। পানি-বিদ্যুৎ-সার সব ক্ষেত্রেই এটা সত্য।
অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ী যে কোনো দেশে ধনী মানুষের সংখ্যা থাকে কম এবং দরিদ্রদের সংখ্যা থাকে বেশি। ধনীদের একটি অংশ শিল্প-বাণিজ্যে মূলধন খাটিয়ে উৎপাদন বাড়াতে পারে। যত বেশি বিনিয়োগ, নতুন কাজের সুযোগও হয় তত বেশি। এ ধরনের উদ্যোগী ভূমিকা যারা নিয়ে থাকেন তাদের সহায়তা প্রদান সরকারের দায়িত্ব। ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারাও সরকারের বিশেষ মনোযোগ দাবি করে। তাদের সংখ্যা বেশি, তারা পরিশ্রমীও। আমাদের দেশে তাদের সংখ্যা অনেক এবং তাদের সহায়তা প্রদান করা হলে বিপুলসংখ্যক পরিবার লাভবান হতে পারে। সরকার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি ঋণ দিতে বলতে পারে। এসব শিল্প যারা স্থাপন করবে তাদের শুল্ককর ছাড় সুবিধা প্রদানও জরুরি।
আগামী বছর উন্নয়ন বাজেটের আকার হবে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে থাকে বেসরকারি বিনিয়োগ এবং তার পরিমাণ ঢের বেশি হবে। এটাই অর্থনীতির নিয়ম_ সরকার যা বিনিয়োগ করে ব্যক্তিরা মিলে করে তার তুলনায় অনেক অনেক বেশি। সরকারের বিনিয়োগ ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের কাজ সহজ করে দেয়। সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রসারিত করে। বিদ্যুৎ-গ্যাস উৎপাদন বাড়ায়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো খাতে মনোযোগ দেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করে। প্রশাসনের মাধ্যমে অনেক কাজ সম্পন্ন করে। তবে সরকারের কাজের সমস্যা হচ্ছে, এর গতি ধীর। তদুপরি রয়েছে দুর্নীতি ও অনিয়ম। ব্যক্তি খাতেও তা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তি খাতের দুর্নীতির মাত্রা হয়ে থাকে সীমাহীন। সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে আমরা এটা দেখেছি। তবে সরকারের দুর্নীতিকে সর্বদাই বড় করে দেখা হয়। তাদের কাজে স্বচ্ছতা দাবি করা হয়। সরকারের কাজ স্বচ্ছভাবে হয় কি-না সেটা দেখার জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জাতীয় সংসদেরও সেটা দেখার কথা। প্রতি বছর রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট সংসদে পেশ করা হয়। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, সংসদে সরকারি দলের অনেকে নিয়মিত হাজির থাকেন না। আর বিরোধী দল তো পুরো সময় থাকে গরহাজির। এবারের বাজেটেও সেটাই হবে, তা আগাম বলে দেওয়া যায়। বিরোধী দল কেবল সংসদ সদস্যপদ হারানোর ভয় হলেই স্বল্প সময়ের জন্য সংসদে যোগ দেয়। এ অবস্থায় সরকারি ব্যয় নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদে কে সোচ্চার হবে? এখন পদ্মা সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মতো বড় প্রকল্প সরকার বাস্তবায়ন করবে। অনেক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কাজ চলছে। গ্যাস খাতের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতের সুবিধা গ্রাম পর্যায়ে নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। নদনদীতে ড্রেজিংয়ের জন্য আগের চেয়ে বরাদ্দ বেড়েছে। এসব খাতের ব্যয় ঠিকভাবে হচ্ছে কি-না, সেটা নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। সরকারি কাজের কন্ট্রাক্ট কারা পাচ্ছে, কীভাবে পাচ্ছে এবং এতে কোনো অনিয়ম রয়েছে কি-না তা নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়া উচিত। এসব সরকারি কাজের বেশিরভাগ সম্পাদিত হয় ব্যক্তির মাধ্যমে। সরকারের কাজের টেন্ডার তারাই পায়। অনেক কাজ সময়মতো শেষ হয় না। অনেক কাজ মানসম্পন্ন হয় না। এতে দেশের উন্নয়নের ক্ষতি হয়। আমাদের সংসদ এ বিষয়ে কবে মনোযোগ দেবে? বাংলাদেশের অনেক রাজনীতিক বলেন, তারা অর্থনীতি তেমন বোঝেন না। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে যে দেশের অর্থনীতি না বুঝলেও নিজের বিত্ত-বৈভব কীভাবে বাড়িয়ে নিতে হবে সে বুঝ থাকে ষোলোআনার ওপর আঠারোআনা। সরকারি দল যারা করেন এবং তাদের আশপাশে যারা থাকেন, এ বিষয়ে তাদের জ্ঞানও টনটনে। দেশের উন্নয়নের পথে কিন্তু এটা মস্ত এক বাধা। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা যদি দেশের অর্থনীতির স্বার্থ আরেকটু ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করতেন!

অজয় দাশগুপ্ত : সাংবাদিক
ajoydg@gmail.com
 

No comments

Powered by Blogger.