সংকটে বিমান-সরকার বরাদ্দ দিলেই সমাধান!

বাংলাদেশ বিমান চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পেঁৗছেছে যে, ধারদেনা পরিশোধ করতে গিয়ে সংস্থাটি তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন প্রদানের সামর্থ্যও হারিয়ে ফেলতে পারে। অথচ আকাশ পরিবহনের একমাত্র জাতীয় সংস্থাটিকে লাভজনক করার সংকল্প নিয়ে ২০০৭ সালে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত করা হয়।


কিন্তু এ সময়ও চিরাচরিত লোকসানি ধারা থেকে প্রতিষ্ঠানটি বের হয়ে আসতে পারেনি। সোমবার সমকালের তৃতীয় পৃষ্ঠায় 'আর্থিক সংকটে বিমান' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সংস্থাটি আর্থিক চাহিদা মেটাতে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। বিমানের পক্ষ থেকে ২০ এপ্রিল এক হাজার কোটি টাকা চেয়ে আবেদন করা হয়। আপাতত জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ৫শ' কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন। প্রশ্ন হলো, ৫শ' কোটি টাকা বা এক হাজার কোটি টাকা সরকার প্রদান করলেই কি বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা যাবে? প্রতিবেদনে বছরওয়ারি লোকসানের যে হিসাব দেওয়া হয়েছে তাতে দেখা যায়, সংস্থাটি গত বছর ১৯৯ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। এর আগের দু'বছর যথাক্রমে ৮০ কোটি ও ১৫ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। বিমান তার নিজস্ব আয় থেকে নতুন বিমান ক্রয় করে নিজেকে চলনসই করতে পারবে মনে করাটা ভুল হবে। আধুনিকায়ন বা নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য সরকারকেই বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থের সংস্থান করে দিতে হবে। তাতেও সংস্থাটি আদৌ কর্মক্ষম হবে, তা কিন্তু হলফ করে বলা যায় না। আর এখন তো দৈনন্দিন খরচ মেটানো, বেতন-ভাতা নির্দিষ্ট সময়ে প্রদানই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। বিমান কর্তৃপক্ষ এবং এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গকে সংকটের স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। সরকারের দায়িত্বও কম নয়। নিজস্ব আয় দিয়ে জাতীয় উড়ান সংস্থাটি কী করে চলতে পারে, সে ব্যাপারে কার্যকর পরিকল্পনা দরকার। এভাবে বিমান ধুঁকে ধুঁকে চলবে আর সরকার বারবার তাকে সচল করার জন্য কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালবে বর্তমান প্রতিযোগিতার যুগে এটা তো বেশিদিন চলতে পারে না।
 

No comments

Powered by Blogger.