সার ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের প্রয়োজন by এ এম এম শওকত আলী

কৃষি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি সার ব্যবস্থাপনা আইন ও বিধি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সংশ্লিষ্ট আইন ২০০৬ সালে প্রণীত হয়। এর উত্তরসূরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন ১৯৫৬-এর আওতায় প্রণীত সার নিয়ন্ত্রণ আদেশ ১৯৯৯। এর আগে ছিল সার নিয়ন্ত্রণ আদেশ ১৯৯৪। ২০০৬ সালে সম্পূর্ণ পৃথক একটি আইন প্রণীত হয়।


নিয়ন্ত্রণ শব্দটি বিলুপ্ত করে আইনের শিরোনাম করা হয় সার (ব্যবস্থাপনা) আইন। শুনতে ভালো লাগে। কারণ নিয়ন্ত্রণ শব্দটি অনেকাংশে কঠোর মনে হয়। বাস্তবে ব্যবস্থাপনা না হয়ে আইনটি বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণমূলক। নিয়ন্ত্রণের প্রকার ও ধরন একাধিক। এক. যেকোনো সার বা সারজাতীয় পণ্য বাজারজাত করার আইনি পদ্ধতি। এর মধ্যে আমদানিতব্য সারও রয়েছে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত না হলে কোনো সার বা সারজাতীয় দ্রব্য দেশে প্রস্তুত বা আমদানি করা যাবে না। বিপণনও করা যাবে না। দেশে প্রস্তুত সারের ক্ষেত্রে একই নিয়ম। দুই. ভেজাল বা সরকারিভাবে অনুমোদিত বিনির্দেশ ছাড়া কোনো সার প্রস্তুত, আমদানি বা বিপণন করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিন. দেশীয় কারখানায় পরীক্ষাগার থাকার বাধ্যবাধকতা ইত্যাদি।
নতুন সারের বা সারজাতীয় দ্রব্যের অনুমোদনপ্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতার বেড়াজালে আবদ্ধ। এ প্রক্রিয়ায় দুই ধরনের দায়িত্ব দুই সংস্থাকে প্রদান করা হয়েছে। সার ব্যবস্থাপনা আইন ও বিধি অনুযায়ী জাতীয় সার প্রমিতকরণ কমিটি সার অনুমোদনের সর্বোচ্চ স্তর। এ কমিটির সভাপতি কৃষিসচিব। আইন অনুযায়ী কমিটি এক বা একাধিক কমিটি গঠনে ক্ষমতাবান। মূলত এ-সংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় প্রমিতকরণ কমিটিকে সহায়তা করার জন্য একটি টেকনিক্যাল কমিটি দায়িত্ব পালন করে। আইন অনুযায়ী দেশে সার প্রস্তুত করার জন্য যেকোনো উদ্যোক্তাকে নিবন্ধিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করার জন্য কিছু তথ্য প্রদান করতে হয়। যাচিত অনেক তথ্যই অপ্রাসঙ্গিক। এর সঙ্গে দিতে হয় প্রস্তুতকৃত সারের নমুনার বিশ্লেষণ। বিশ্লেষণের গ্রহণযোগ্যতার জন্য সরকারি গবেষণা সংস্থাসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
প্রাথমিক আবেদনের পর নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ কারখানা পরিদর্শন করে সব কিছু গ্রহণযোগ্য হলে টেকনিক্যাল কমিটিকে অবহিত করবে। আবেদনকারীর কারখানা থেকে অন্তত তিনটি নির্ধারিত পরীক্ষাগারে সারের নমুনা বিশ্লেষণের বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটি এর সভা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এ লক্ষ্যে কমিটির দুজন সদস্য আবেদনকারীর কারখানা পরিদর্শন করে নির্ধারিত পরীক্ষাগারের জন্য নমুনা সংগ্রহ করবেন এবং নির্দিষ্ট পরীক্ষাগারে প্রেরণ করবেন। তিনটি পরীক্ষাগারের মধ্যে দুটির বিশ্লেষণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মাত্রায় সঠিক হলে, টেকনিক্যাল কমিটি আবার সভা করবে। এ সভার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলে আবেদনকারীকে আবার মাঠপর্যায়ে পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রেরণের জন্য অবহিত করা হবে। এর জন্য সরকারি গবেষণা সংস্থাকে টেকনিক্যাল কমিটি মনোনীত করবে। মনোনীত সংস্থা মাঠপর্যায়ে পরীক্ষার ফলাফল টেকনিক্যাল কমিটিকে প্রেরণ করবে। কমিটি এক সভায় প্রাপ্ত ফলাফল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জাতীয় সার প্রমিতকরণ কমিটিকে সুপারিশ পাঠাবে। জাতীয় কমিটি এক সভায় আলোচনা করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সার প্রস্তুত, আমদানি ও বিপণনের অনুমতি গেজেটে প্রকাশ করবে।
প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ পাওয়ার পর আবেদনকারীকে আবার নির্ধারিত ছকে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে অনুরোধ জানাবে। এই আবেদন পাওয়ার পর আবার কারখানা পরিদর্শন করা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আবেদনকারীকে নিবন্ধিত করা হবে। বলা বাহুল্য যে এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় কোন পর্যায়ে কত সময়ের প্রয়োজন হয়, তা অনেকেই জানে না। ২০০৮ সালে জৈবসারের বিনির্দেশের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। উদ্দেশ্য এ জাতীয় সারও আইনের নিয়ন্ত্রণভুক্ত করা। এর পক্ষে যুক্তি আছে। ভারতসহ থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনে নিবন্ধন প্রথা রয়েছে। তবে বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম সময়ের প্রয়োজন হয়। ২০০৯ ও ২০১০ সালের দুটি সমীক্ষায় এ-সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশের আইনি জটিলতা সহজীকরণের সুপারিশ করা হলেও তা হয়নি। ২০০৯ সালের সর্বশেষ ওয়ার্কশপে কৃষিমন্ত্রীসহ তদানীন্তন কৃষিসচিব আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা দূরীকরণের পক্ষে মতামতও প্রকাশ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালে ক্যাটালিস্ট প্রকল্পের আওতায় আবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইএফডিসি আবার সম্পূর্ণ বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখছে। এ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে আইএফডিসির একটি গবেষণা টিম প্রাথমিকভাবে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাসহ মাঠ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছে। উদ্দেশ্য উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণসহ নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে বিদ্যমান আইন-বিধির সংস্কার করা। কিছু প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় দেখা যায় যে আইনি জটিলতার মূল কারণ হলো, ২০০৬ সালের কিছু পদ্ধতিগত বিধান। এ প্রক্রিয়ায় আইএফডিসির পক্ষ থেকে বিস্তারিত তথ্যও প্রদান করা হয়। এ প্রসঙ্গে অনুমতি প্রদানের পদ্ধতিগত জটিলতার জন্য জৈবসার অনুমোদনপ্রক্রিয়ায় সরকার নির্ধারিত পরীক্ষাগার ও মাঠপর্যায়ের পরীক্ষার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তার সঠিক ব্যাখ্যা ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়ও উল্লেখ করা হয়।
আইনের সংশ্লিষ্ট বিধানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যেসব সার বা সারজাতীয় দ্রব্যের কোনো বিনির্দেশ জারি করা হয়নি, ওই সার বা সারজাতীয় দ্রব্যের নির্ধারিত পরীক্ষাগারসহ সরকারি গবেষণা সংস্থায় মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা করা হবে। অথচ এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অনুমোদনপ্রক্রিয়ায় জড়িত কিছু ব্যক্তি সম্পূর্ণ বিপরীত ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এমনকি ২০০৬ সালের জাতীয় প্রমিতকরণ কমিটিকে আইনের সংশ্লিষ্ট বিধানের অপব্যাখ্যা প্রদানের ফলে কমিটি পরীক্ষাগারসহ মাঠপর্যায়ের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার পক্ষে রায় প্রদান করে। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় কৃষিসচিব আইনি জটিলতা দূরীকরণের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ সময় উল্লেখ করা হয়, নতুন কোনো কমিটির প্রয়োজন নেই। মন্ত্রণালয়ে ইতিপূর্বে সার ও ভূমি উর্বরতাবিষয়ক যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, সে কমিটিই এ দায়িত্ব পালন করতে পারে। অতএব সিদ্ধান্ত হয় যে উলি্লখিত কমিটিই এ দায়িত্ব পালন করবে। কমিটির কার্যপরিধি সংক্রান্ত বিষয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে আশা করা যায়। জানা যায় যে কমিটিকে আইএফডিসির গবেষণা টিম প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে।
বিদ্যমান জৈবসার অনুমোদনপ্রক্রিয়ায় যে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়, সে বিষয়ে কিছু নির্ভরযোগ্য প্রাথমিক তথ্য আইএফডিসির গবেষণা টিম সংগ্রহ করেছে। নির্ধারিত সরকারি পরীক্ষাগারে নমুনা বিশ্লেষণের জন্য আইনে নির্ধারিত সময় হলো পাঁচ কার্যদিবস। এ-সংক্রান্ত তথ্য একটি সরকারি পরীক্ষাগারের রেজিস্ট্রার নিরীক্ষা করে দেখা যায়, কোনো পরীক্ষাগারই এ সময়ের মধ্যে নমুনা বিশ্লেষণ সম্পন্ন করতে পারে না। রেজিস্ট্রারে দেখা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্তত এক থেকে দেড় মাসের আগে বিশ্লেষণসংক্রান্ত কাজ চূড়ান্ত করা যায় না। অথচ এই পরীক্ষাগারই সবার মতে অপেক্ষাকৃত কম সময়ে এ কাজ সমাধা করতে সক্ষম। অন্যান্য নির্ধারিত পরীক্ষাগারে এর অধিক সময়ের প্রয়োজন হয়। এ বিষয়ে আরো দেখা যায়, অনুমোদনের জন্য প্রাপ্ত নমুনা বিশ্লেষণের কোনো পৃথক রেজিস্ট্রার নেই। বিভিন্ন সরকারি সংস্থা থেকে আসা অন্যান্য পণ্যের নমুনা পরীক্ষাও এ পরীক্ষাগারকে করতে হয়। অতএব বাস্তব অবস্থা হলো, আইনে নির্ধারিত সময়সীমা অমান্য করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের মতে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবলসহ পরীক্ষাগারে উপযুক্ত জনবলের অভাবই এর প্রধান কারণ। তাঁদের মতে, নমুনা বিশ্লেষণের জন্য অন্তত ১০ কার্যদিবস সময় প্রয়োজন। এ বিষয়ে অন্যান্য নির্ধারিত পরীক্ষাগারের মতামতও গ্রহণ করা হবে। এ কথা অবশ্য সত্য যে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাগারে উপযুক্ত জনবল ও যন্ত্রপাতির প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংস্থাটি মন্ত্রণালয়ে জনবল বৃদ্ধিসহ যন্ত্রপাতি অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তবে এ প্রক্রিয়াও দীর্ঘ। প্রথমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পরে অর্থ বিভাগ চূড়ান্ত করার পরই এ বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে অন্তত দুই থেকে চার বছরের প্রয়োজন হবে।
আইনের একটি নির্দিষ্ট ধারায় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষকে প্রাথমিকভাবে সার কারখানা পরিদর্শনের সময়সীমা হলো ৪২ দিন। এত দীর্ঘ সময় কেন প্রয়োজন, তা বোধগম্য নয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কর্মচারী রয়েছেন। এ দৃষ্টিকোণে দেখলে বলা যায়, ৪২ দিন সময় অযৌক্তিক। ১৫ দিনের অধিক হওয়া উচিত নয়। অন্যদিকে কারখানা পরিদর্শনের জন্য কোনো নির্ধারিত ছক নেই। বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। এটা সুশাসনের পরিপন্থী। কারণ কর্মকর্তাভেদে দৃষ্টিভঙ্গিও ভিন্নতর হবে। প্রাসঙ্গিক যে আইনের অন্য এক ধারায় বলা আছে, সব সার কারখানায় একটি নিজস্ব পরীক্ষাগার থাকতে হবে। ইতিমধ্যে প্রমাণ পাওয়া গেছে, একটি বৃহৎ জৈবসার কারখানা দীর্ঘ তিন বছর পরও অনুমোদন লাভ করেনি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় এ বিষয়ে গেজেট বিজ্ঞপ্তিও হয়। কিন্তু তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কম্পানি নিবন্ধিত হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির তিনটি কারখানা রয়েছে। পরীক্ষাগারটি কেন্দ্রীয়ভাবে জেলা শহরের মধ্যে করা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পরিদর্শক বললেন, একটায় হবে না। তিনটি কারখানার জন্য তিনটি পৃথক পরীক্ষাগার না হলে নিবন্ধন করা যাবে না। কারখানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যুক্তি দেখান, পরীক্ষাগার দূষণমুক্ত রাখার প্রয়োজনেই এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এ যুক্তি পরিদর্শক মেনে নেননি।
তিন বছরের অধিক সময় পর্যন্ত কারখানা উৎপাদিত জৈবসার বিপণন করতে সক্ষম হয়নি। অথচ কারখানা স্থাপনের জন্য সর্বমোট খরচ হয়েছে আড়াই কোটি টাকারও অধিক। প্রতি মাসে শ্রমিকের মজুরিসহ অন্যান্য ব্যয় হলো দুই লাখ টাকা। নিরুপায় হয়ে এখন কারখানার উৎপাদিত জৈবসার নিজস্ব তিনটি চা-বাগানে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ জৈবসারের কাঁচামাল হলো মুরগির বর্জ্য। পরিবেশ রক্ষার জন্য এ অবদানের কোনো স্বীকৃতিই নেই। অন্য একটি কারখানার চিত্রও করুণ। এ কারখানার মালিক জানান, নিবন্ধনের সনদ পেতে মোট সময় লেগেছে তিন বছর। গোবরসহ অন্যান্য উপাদান ব্যবহার করে এরা জৈবসার উৎপাদন করে। বিপণনের জন্য এদের নিজস্ব ১৬০ জন ডিলার দেশব্যাপী কাজ করছে। এরা অনানুষ্ঠানিকভাবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাঠকর্মীদের সহযোগিতায় কৃষকের জমিতে প্রদর্শনী প্লটও স্থাপন করেছে। ধানসহ শাকসবজি, ফলমূল, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষে উৎপাদিত সার ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃষকরাই এ সার ব্যবহার করছেন। কারখানার কর্মকর্তাদের মতে, কৃষকদের আর্জি সার সরবরাহে যেন কোনো ঘাটটি না হয়। তাহলে তাঁরা বিপদের সম্মুখীন হবেন। কারখানার কর্মকর্তারা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাঠকর্মীদের সক্রিয় সহযোগিতার জন্য খুবই খুশি। তবে তাঁরা চান, এ সহযোগিতা আনুষ্ঠানিক হলে উত্তম হবে। এর জন্য তাঁরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সঙ্গে সম্মত চুক্তি করতে আগ্রহী।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন, সরকারের কৃষিনীতিসহ ষষ্ঠ-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দলিলে জৈবসার ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। অথচ এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আইনি ও বিধিগত জটিলতা রয়েছে, যা অচিরেই দূর করা প্রয়োজন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান উদ্যোগ এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।

লেখক : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক
উপদেষ্টা ও কলামিস্ট

No comments

Powered by Blogger.