অবৈধ অংশ অবিলম্বে ভেঙে দিন-নকশার বাইরে বহুতল ভবন

এনা টাওয়ার-ডি-অলিও এনা প্রপার্টিজ লিমিটেডের একটি প্রকল্প। রাজধানীর ধানমন্ডি মৌজার ৫৭/৩ ও ৫৭/৪ নম্বর পান্থপথে ১০ কাঠা জমির ওপর নির্মিত ১১ তলা ভবনটির সামনের দিক বাণিজ্যিক ও পেছনের দিক আবাসিক হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশা মানা হয়নি। রাজউক এখন কী ব্যবস্থা নেবে?


বস্তুত, একবার পদক্ষেপ নিয়েছিল রাজউক। ২০০৮ সালের এপ্রিলে চিঠি দিয়ে এনা প্রপার্টিজকে জানিয়েছিল, অনুমোদিত নকশার বাইরে নির্মাণকাজ করে প্রতিষ্ঠানটি ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করেছে, সে জন্য সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। পরের মাসে রাজউক অভিযান চালিয়ে ভবনটির নকশাবহির্ভূত কিছু অংশ ভেঙে ফেলে। তখন এনা প্রপার্টিজ রাজউককে চিঠি লিখে এই প্রতিশ্রুতি দেয় যে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে এনা প্রপার্টিজ কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগেই নকশাবহির্ভূত অংশ ভেঙে ফেলবে। তখন পর্যন্ত নির্মিত হয়েছিল মাত্র তিনতলা।
কিন্তু তারপর তিন বছরের বেশি সময় চলে গেছে। অবৈধ অংশ ভাঙা দূরে থাক, ভবনটির তিন পাশে নকশায় নির্দেশিত পরিমাণ জায়গা না ছেড়ে যেভাবে নকশা লঙ্ঘন করে নির্মাণকাজ চলছিল, সেভাবেই আরও আটতলা নির্মাণ করা হয়েছে। কী করে এটা সম্ভব হলো? রাজউক কেন আর কোনো পদক্ষেপ নিল না?
এনা প্রপার্টিজ লিমিটেডের মালিক সরকারদলীয় একজন সাংসদ। রাজউক কি আজ সে কারণেই কোনো আইনানুগ পদক্ষেপ নিতে ভয় পাচ্ছে? আর যে মালিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ভবনটির অবৈধ অংশ নিজের উদ্যোগেই ভেঙে দেবেন, তিনি আজ স্বীকারই করতে চাইছেন না যে ভবনটি নির্মাণে নকশার ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। তাহলে কী করে আমাদের রাজধানীর ইমারত নির্মাণের ক্ষেত্রে ন্যায়নীতি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা পাবে? সরকার, সরকারি দলের সাংসদেরা জনগণের কাছে কী জবাব দেবেন? ভবনটির অবৈধ অংশ অবিলম্বে ভেঙে দিয়ে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন কি? নাকি ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতার দাপটের কাছে রাজউক বড় বড় অনিয়ম প্রতিকারের দিকে হাত না বাড়িয়ে কেবল কিছু বাড়িঘরের বাড়তি সানশেড, দেয়াল—এসব টুকটাক ভেঙে ভেঙে ইমারত নির্মাণ আইন রক্ষার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাবে?

No comments

Powered by Blogger.