ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা-আগাম শেষ হচ্ছে মেলা

প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের কারণে চার দিন আগেই মাসব্যাপী ২০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগেভাগে মেলা শেষ হওয়ার কারণে আর্থিকভাবে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে জানিয়েছেন দেশি-বিদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা।

২০ মার্চ মেলা শেষ হলেও স্টল ও প্যাভিলিয়নের অবকাঠামো সরিয়ে নিতে কমপক্ষে তিন দিন সময় লাগবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। নগরের রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ডে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় বাণিজ্য মেলা। এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে দেশি-বিদেশি তিন শতাধিক স্টল ও প্যাভিলিয়ন। ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ড মাঠেই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার মহাসমাবেশ আয়োজনের কথা রয়েছে। এ জন্য ২১ মার্চ মেলার মাঠ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চেম্বার।
এ বিষয়ে চেম্বারের সচিব ওসমান গণি চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত মেলার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশ রয়েছে। মেলার সময় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের আজই (শুক্রবার) জানিয়ে দেওয়া হবে। ২৪ মার্চ পর্যন্ত মেলা চালু রাখার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মেলায় অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞাপন গত শুক্রবার জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। ওই বিজ্ঞাপনে ব্যবসায়ীরা বলেন, “এক সপ্তাহ আগেই মেলা শেষ হলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হব।”’
এ বিষয়ে মেলার পাকিস্তানি প্যাভিলিয়নের ব্যবস্থাপক শেখ শরিফ উদ্দিন বলেন, ‘মেলার শেষ সপ্তাহে আমরা পণ্যের দাম কমিয়ে দিই। চট্টগ্রামের ক্রেতারাও শেষ সপ্তাহে পণ্য কেনেন বেশি। ২০ মার্চ মেলা শেষ হলে প্যাভিলিয়নের ভাড়াও উঠবে না।’
এন মোহাম্মদ প্লাস্টিকের প্যাভিলিয়ন ব্যবস্থাপক এমজি শাকারিয়া বলেন, ‘আমরা মেলায় আসি পণ্যের প্রচারের লক্ষ্যে। শেষ সপ্তাহে দুটি নতুন পণ্য এনেছি। সব পণ্য ভালোভাবে প্রচারের আগেই হয়তো মেলা শেষ হয়ে যাবে।’ এস এ গ্রুপের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজিমউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মূলত পণ্যের প্রচারের জন্যই ২০ লাখ টাকা খরচ করে মেলায় আসা। কিন্তু আগে মেলা শেষ হলে অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে যাবে। ২১ মার্চের মধ্যে স্থাপনাসহ সব আয়োজন সরিয়ে নেওয়া অসম্ভব।’
নাভানা ফার্নিচারের প্যাভিলিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফ ইসলাম বলেন, ‘মেলার খরচও উঠে আসবে না। ২০ মার্চ মেলা শেষ হয়ে গেলেও সবকিছু সরিয়ে নিতে কমপক্ষে তিন দিন সময় লাগবে।’
মেলায় অংশ নেওয়া তৈরি পোশাকের স্টল লিজা এন্টারপ্রাইজ, হাসান ক্লথ স্টোর, খাজানা টেক্সটাইলসহ বেশ কয়েকটি স্টলের ব্যবসায়ীরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক মাসের বিক্রির লক্ষ্য নিয়েই মেলায় এসেছিলাম। শুরুর দিকে মেলা তেমন জমে না। যখনই বিক্রি শুরু হলো তখন গুটিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। প্রতিবছর মেলার সময় বাড়ানো হয়, এ বছর আরও কমিয়ে দেওয়া হলো।’
মেলার সময় কাটছাঁট হওয়ায় হতাশ নগরের ক্রেতারাও। নগরের ডিসি রোডের বাসিন্দা শফিকুর রহমান বলেন, ‘যাব যাব করেও যাওয়া হয়নি। এখন শুনছি মেলা ২০ তারিখ শেষ হয়ে যাবে। দু-একদিনের মধ্যেই যাব।’

No comments

Powered by Blogger.