কুষ্টিয়ায় নারী প্রহৃত-পুলিশকেই দায়িত্বশীল হতে হবে

নাগরিক নিপীড়নের মাধ্যমে 'আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা' করার ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে স্বাধীন দেশের পুলিশ বাহিনী যে এখনও সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারেনি, কুষ্টিয়ায় এক নারীর প্রহৃত হওয়ার মধ্য দিয়ে তা আরেকবার প্রমাণ হলো। শনিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যাচ্ছে, সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামে গোষ্ঠীগত উত্তেজনা
চলাকালে ওই গৃহবধূ তার শিশুসন্তানকে আগলাতে গিয়ে সেখানে স্থাপিত ক্যাম্পের এক পুলিশ সদস্যের রোষের মুখে পড়েন। ওই নারীকে যেভাবে লাঠিপেটা করে হাসপাতাল পর্যন্ত ঠেলে দেওয়া হয়েছে, তা আমাদের মধ্যযুগীয় নির্মমতার কথাই মনে করিয়ে দেয়। সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের উচিত ছিল কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে ওই নারীকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা। ওই নারী যদি বিবদমান কোনো পক্ষভুক্তও হয়ে থাকেন, বেদম প্রহারের বিধান কোথায় রয়েছে? নাগরিকের অর্থে প্রতিপালিত বাহিনীর এমন আচরণ অমার্জনীয়। আমরা আশা করি, এই অঘটনের জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যকে অবিলম্বে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। আহত গৃহবধূ যাতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা পান, সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে বলব আমরা। পুলিশি কাণ্ডের শিকার ব্যক্তি বিভিন্ন পর্যায়ে যে প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হন, এ ক্ষেত্রে তার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়। তার সুবিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে মানবাধিকার কর্মীদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই আমরা। তবে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে পুলিশকেই। কারণ আইনের শাসন, নাগরিক অধিকারের পাশাপাশি এর সঙ্গে পুলিশের ভাবমূর্তির বিষয়টিও জড়িত বলে আমরা মনে করি। সাম্প্রতিককালে ঢাকার রাজপথে সাংবাদিক, আদালতপাড়ায় আইনজীবী এবং নরসিংদীর আদালত চত্বরে খোদ বিচারক পুলিশের হাতে নিগৃহীত হওয়ার পর পুলিশের দায়িত্বশীলতা যে প্রশ্নের মুখে পড়েছে, এ ঘটনার সুরাহা না হলে তা আরও গভীরই হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.