বিশেষ সাক্ষাত্কার-সবাই শিক্ষা না পেলে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়না by আহমদ রফিক

প্রাবন্ধিক ও গবেষক আহমদ রফিক বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক। জন্ম ১৯২৯ সালে, কুমিল্লায়। পঞ্চাশের দশকের শেষাবধি দেশের সব প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এরপর সাহিত্য রচনা ও গবেষণাকর্মে নিয়োজিত হন।


তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো, ভাষা আন্দোলন: ইতিহাস ও তাত্পর্য (১৯৯১), রবীন্দ্রনাথের রাষ্ট্রচিন্তা ও বাংলাদেশ (১৯৮৭), ছোটগল্প: পদ্মাপর্বের রবীন্দ্র-গল্প (১৯৮৭)। এ ছাড়া প্রকাশ করেছেন কবিতা ও গল্পগ্রন্থ। রবীন্দ্র-সাহিত্যে তাঁর বিশেষ আগ্রহ। সাহিত্যে গবেষণামূলক রচনার জন্য ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার এবং ১৯৯৫ সালে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন। এখনো তিনি সাহিত্যকর্মে সক্রিয়।
 সাক্ষাত্কার নিয়েছেন ফারুক ওয়াসিফ

প্রথম আলো  ভাষা আন্দোলনের পরের ছয় দশকে এ বিষয়ে অনেক গবেষণা ও কাজ হয়েছে। আপনি নিজেও গবেষণা করেছেন। আপনি কি মনে করেন, এমন কোনো দিক আছে, যেখানে নতুন করে আলো ফেলার প্রয়োজন রয়েছে?
আহমদ রফিক  সবাই স্বীকার করে যে বায়ান্নর পথ ধরে শিক্ষা আন্দোলন হয়েছে, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে এবং ১৯৭১-এর স্বাধীনতাযুদ্ধের পথে সার্বভৌম ভাষিক রাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যুদয় নিঃসন্দেহে গৌরবময় অর্জন। এত কিছুর মাধ্যমে একুশের মূল দাবি রাষ্ট্রভাষা বাংলা অর্জিত হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন এখনো পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। খুবই দুঃখজনক যে বাংলার ব্যবহারিক মূল্য অর্জিত হলেও ভাষার মাধ্যমে সর্বজনীন স্বার্থের বিষয়টি এ ক্ষেত্রে অনর্জিতই রয়ে গেছে। যেমন দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর শিক্ষিত হয়ে ওঠা এখনো হয়নি। অধিকাংশ গরিব মানুষ ভাষার অধিকার চর্চাই করতে পারবে না, যদি না মাতৃভাষা লিখে ও বলে তারা তাদের মানসিক ও অর্থনৈতিক বিকাশ নিশ্চিত করতে পারে। সমগ্র জনগণকে তথা সব শিশুকে শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যেআনতে না পারলে তারা তো মুখের ভাষাকে তাদের জীবনের উন্নতিতে কাজে লাগাতে পারবে না। যে জনগণ আন্দোলন করে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করল, তাদের সন্তানেরা আজও বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না, এর থেকে মর্মান্তিক আর কী হতে পারে! দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষায় মাতৃভাষার ব্যবহার না করা। বাংলা ব্যবহারিক ভাষা হিসেবে লেখা ও কথাবার্তায় ব্যবহূত হলেও যতক্ষণ না বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণায় বাংলার ব্যবহার হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা আধুনিক জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে পারব না। এখানে সমাজবিজ্ঞানী ও নৃবিজ্ঞানীদের অভিমত ধরে বলব, একটি ভাষিক ও জাতিরাষ্ট্রের মননশীল উন্নতিতে মাতৃভাষার ব্যবহার অপরিহার্য। যে স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে একজন বিজ্ঞানী বা গবেষক মাতৃভাষায় তাঁর কাজ সম্পন্ন করতে পারেন, সেটা বিজাতীয় ভাষায় সহজ নয়। এমন অনেক কারণে জাতীয় জীবনে সর্বস্তরে মাতৃভাষার ব্যবহার কোনো জাতির উন্নতির জন্য আবশ্যিক। কিন্তু বিস্ময়ের হলেও সত্য, আমাদের রাজনীতিবিদ বা শিক্ষিত বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়টিকে মোটেও আমলে আনেন না।
প্রথম আলো  আজকাল এনজিওগুলো অজস্র প্রতিবেদন ও গবেষণা প্রকাশ করে। এর বেশির ভাগেরই ভাষা ইংরেজি। একে কী বলবেন?
আহমদ রফিক  তারা তো এটা করেই, অন্যদিকে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে ইংরেজির বিপুল প্রতাপ চলছে। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা এবং পরবর্তী পর্যায়ে ইংরেজিতে শিক্ষাদানের মাধ্যমে যে ভাষিক বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে, তা অর্থনৈতিক বৈষম্যকেও স্থায়ী করছে। যে হারে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা কিন্ডারগার্টেন থেকে স্কুল-কলেজ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিস্তৃত, তাতে শিক্ষার্থীসমাজ দুটো পরস্পরবিরোধী পথে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে বাধ্য। এর পেছনে আমি মনে করি শাসকদের শ্রেণীস্বার্থের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। জনসমর্থন নিয়ে ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতাযুদ্ধ সম্পন্ন হলেও এর চালিকাশক্তি ছিল শিক্ষিত শ্রেণী। স্বভাবতই ক্ষমতায় এসে তারা তাদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা চালাবে। আজ গ্রাম ও শহরের মধ্যে, শিক্ষিত ও অশিক্ষিতের মধ্যে যে বিরাট বিভাজন ও বৈষম্য, এর পেছনে ভাষাবৈষম্যেরও ভূমিকা রয়েছে। এটা ভাষা আন্দোলনের চেতনার বিরোধী। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ইংরেজরা যেভাবে নিজেদের জনগণের থেকে উচ্চে ভাবত এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তাদের এই সুবিধাভোগী অবস্থান নিশ্চিত রাখত, বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষার বিভাজন টিকিয়ে রেখে সেই একই কাজই হচ্ছে। বর্তমান বিশ্ব পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশ পরস্পরের অনেক কাছে আসার কারণে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষা শেখার গুরুত্ব আমরা অস্বীকার করি না। আন্তর্জাতিকতার প্রয়োজনে কেউ ফরাসি বা স্পেনীয় ভাষাও শিখতে পারেন। কিন্তু এই প্রয়োজন কোনোক্রমেই মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকল্প নয়।
প্রথম আলো  ইংরেজির অগ্রাধিকারের পাশাপাশি মাদ্রাসা স্তরে বাংলাকে নামকাওয়াস্তে রাখা হচ্ছে। এতে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই বাংলাকে অবহেলার মানসিকতা তৈরি হয় কি?
আহমদ রফিক  ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার মতো মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায়ও দেখা যায় বাংলা অবহেলিত। আমরা ধর্মশিক্ষার বিরোধী নই, কিন্তু তা আধুনিক মননশীল শিক্ষাকে পাশ কাটিয়ে নয়। ইংরেজি, বাংলা ও আরবি-উর্দু এভাবে শিক্ষা ত্রিধারায় বিভক্ত হয়ে বইছে। এই বিভক্তি সমাজকেও বিভক্ত করে ফেলছে এবং সংস্কৃতির মধ্যে তিন ধারার মধ্যে পরস্পরের প্রতি অসহিষ্ণুতাও বাড়ছে। রাজনীতির মধ্যে আমরা এরই প্রতিফলন ঘটতে দেখছি। বর্তমান শিক্ষানীতি এই আলোকেই বিবেচিত হওয়া উচিত বলে মনে করি।
প্রথম আলো  বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারির আগে ও পরে ভাষা আন্দোলন গ্রামাঞ্চলকেও উত্তপ্ত করেছিল। কিন্তু একে কেবল শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ও ছাত্রদের আন্দোলন হিসেবে দেখানো হয়। ভাষা আন্দোলনের বৃহত্তর প্রেক্ষাপট সম্পর্কেবলবেন?
আহমদ রফিক  ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ছাত্র আন্দোলন গণ-আন্দোলন হয়ে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও। ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারির গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদের ঢেউ গ্রামাঞ্চল ও জেলা শহরগুলোকেও আলোড়িত করেছিল। অথচ অনেক সময় দেখা যায়, ইতিহাস রচনায় শিক্ষিত শ্রেণী যেমন নিজের ভূমিকাকে তুলে ধরেছে, সে তুলনায় নিম্নবর্গীয়দের সংশ্লিষ্টতা বা অবদানকে ততটা তুলে ধরেনি। এমনকি ঢাকার বাইরের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ততটা আলোচিত হয়নি। একইভাবে, রাষ্ট্রভাষা ও মাতৃভাষার অধিকারের মধ্যে যে সর্বজনীন স্বার্থ জড়িত, তা স্বাধীন দেশে স্বদেশি শাসনেও অবহেলিত হয়েছে। অথচ সাতচল্লিশ থেকে বায়ান্ন পর্যন্ত শুধু যে ভাষার দাবিতেই আন্দোলন হয়েছে তা নয়, শাসনতান্ত্রিক নৈরাজ্য ও স্বৈরাচারের কারণে সৃষ্ট খাদ্যাভাব, কেরোসিন তেলসংকট, লবণসংকট ইত্যাদি সাধারণ মানুষকে ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় ভুখা মিছিল হয়েছে, খাদ্য আন্দোলন হয়েছে এবং তা হয়েছে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণেই। প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের তেভাগা আন্দোলন, ময়মনসিংহের হাজং আন্দোলনের কথা বলা যায়। এসব আন্দোলন বীভত্স বর্বরতার সঙ্গে দমন করা হয়, এমনকি নারী নির্যাতনের ঘটনাও ঘটে। এসব থেকে তত্কালীন সরকারের প্রতি এবং সদ্যপ্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতি মানুষের আশাভঙ্গ হতে থাকে। পাকিস্তান রাষ্ট্র যে জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, এসব ঘটনায় তা স্পষ্ট হয়। এ প্রেক্ষাপটেই ঘটে ভাষা আন্দোলন।
প্রথম আলো  ইদানীং ভাষাসৈনিকদের সংবর্ধনা, স্বীকৃতি ও সম্মাননার একটা চল তৈরি হয়েছে। এত কিছু সত্ত্বেও শহুরে চাল-চলনে, টেলিভিশন মিডিয়ায় বাংলা ভাষা ও বাংলার সংস্কৃতির প্রতি অবজ্ঞা ও অশ্রদ্ধার প্রকাশ বাড়ছে বৈ কমছে না। এ বিষয়ে আপনি কী মনে করেন?
আহমদ রফিক  এটা ঠিক যে ফেব্রুয়ারি এলেই স্বীকৃতি ও শ্রদ্ধার ঢল নামতে দেখা যায়। কিন্তু ঘরে ঘরে হিন্দি সিরিয়াল, আড্ডায়, যোগাযোগে ইংরেজি বাতচিত ছড়াচ্ছেই। বাংলা ভাষা নিয়ে অনেকের মধ্যেই হীনম্মন্যতা কাজ করতে দেখি। এগুলো প্রমাণ করে, মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের ঘাটতি রয়েছে। শক্ত কথায় কপটতা না বললেও আমি বলব, বাংলার প্রতি মমত্ববোধের অভাব রয়ে গেছে অনেকের মধ্যে। অন্যদিকে হিন্দি ‘সিরিয়াল’গুলোর মাধ্যমে হিন্দির আগ্রাসন পারিবারিক স্তরেও ঢুকে পড়েছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনেক ভালো উপাদান রয়েছে। অথচ সেসব এড়িয়ে হলিউডি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের মাধ্যমে নিম্নমানের পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সংক্রমণ ঘটছে আমাদের তরুণদের মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গেও দেখেছি, অনেকেই বাংলার ওপর হিন্দির প্রাধান্য নিয়ে বিচলিত। বিশ্বায়নের ফলে সমগ্র বিশ্বেই আঞ্চলিক সংস্কৃতি নানা সংকটের মুখে পড়ছে। এসব অভিঘাত কাটিয়ে উঠতে আজকের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। ভাষা আন্দোলন গড়ে উঠেছিল এবং সফল হয়েছিল তরুণদের সংগ্রাম ও সংকল্পের জোরে। আজকের তরুণদেরও সে রকম সংকল্প নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রথম আলো  একুশে ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেছে। কিন্তু ভাষা আন্দোলনে মাতৃভাষার অধিকারের স্বীকৃতির জন্য আত্মদান করা হলেও বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলো আজও মাতৃভাষার অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাদের শিশুরা মায়ের ভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না। তাদের অনেকেরই কাছে বাংলা চাপিয়ে দেওয়া ভাষা। এটি কীভাবে ঘটল?
আহমদ রফিক  আমার মনে হয়, ভাষা আন্দোলনের সময় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষার অধিকারের কথা জোর দিয়ে না বলা একটা দুর্বলতা। কোনো ভাষার প্রতি বিদ্বেষ থেকে নয়, মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিই ছিল একুশের দাবি। কিন্তু রাজনীতিবিদেরা পরে এ দিকটিকে বিকশিত করে নেননি। স্বাধীনতার পর রাজনীতিবিদেরা যখন সংবিধান প্রণয়ন করছিলেন, তখন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষার অধিকারের স্বীকৃতির বিষয়টি তাঁরা উপেক্ষা করেছিলেন। এটা আমাদের সংবিধানের দুর্বলতার দিক। ১৯৭২ সালেই এটা করা উচিত ছিল। এটা না করাটা ছিল দুঃখজনক।
প্রথম আলো  ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের গবেষক হিসেবে এ বিষয়ে আমাদের গবেষণার অবস্থা সম্পর্কে আপনার কী বক্তব্য?
আহমদ রফিক  ভাষা আন্দোলন এখনো জীবন্ত গবেষণার বিষয়। আমি মনে করি, এত বড় ঘটনা নিয়ে ভবিষ্যতেও নতুন দৃষ্টিভঙ্গিজাত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। মূল ঘটনা একই হলেও ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ভিন্নতা থাকে। সেই ভিন্নতার কারণে একেকজন ঐতিহাসিক বা গবেষক একই বিষয়কে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন এবং নতুন সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তাতেই ভাষা আন্দোলনের সামগ্রিক তাত্পর্য আরও গভীরভাবে উদ্ভাসিত হবে।
আরেকটি কথা এ প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন, অতি সম্প্রতি কোনো কোনো সংগঠন এবং ব্যক্তির তরফ থেকে ইতিহাস বিকৃতির প্রবণতা খেয়াল করা যাচ্ছে। তাঁরা ‘ভাষা আন্দোলনের জনক’ বলে কারও কারও নাম প্রচার করছেন। আমি এর প্রতিবাদ করি এবং মুদ্রণ-মাধ্যম ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানাই। ভাষা আন্দোলনের কোনো জনক ছিল না। এর পেছনে এককভাবে সাধারণ প্রগতিশীল ছাত্র-কর্মীদের ভূমিকাই ছিল মুখ্য। কমিউনিস্টরা তখন প্রকাশ্যে কাজ করতে পারতেন না, তবে এ আন্দোলন সংগঠিত করায় পেছন থেকে তাঁদের সমর্থকদেরও বিরাট ভূমিকা ছিল। সে সময়ে অনেক রাজনৈতিক নেতৃত্ব ২১ ফেব্রুয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভাঙার বিপক্ষে মতামত দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্ররা তা উপেক্ষা করে ইতিহাস সৃষ্টি করে। আমি বলব, বায়ান্নতে যেমন, একাত্তরেও তেমন, ছাত্রসমাজই ছিল অগ্রণী ভূমিকায়।
প্রথম আলো  আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আহমদ রফিক  আপনাকেও ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.