অস্ত্রবাজদের হাত থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষা করুন-ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাস থেকে অস্ত্র উদ্ধার

ঢাকা কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একদা দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিদেশেও এ কলেজের সুনাম ছিল। উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পরীক্ষায় এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা বরাবর মেধা তালিকার শীর্ষে থাকতেন। কিন্তু এখন এ কলেজটির অবস্থান কোথায়?


মঙ্গলবারের পত্রিকায় সারা দেশে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিস্ময়কর সাফল্যের খবর ছাপা হয়েছে। তার পাশে ঢাকা কলেজ নিয়ে একটি ছোট্ট খবরও অনেকের দৃষ্টি এড়ায়নি। নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, রোববার রাতে ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাস থেকে ১০০-এর মতো দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ছিল দা, চাপাতি, কিরিচ, লাঠি, রড, পাইপ ইত্যাদি। ছাত্রাবাস থেকে দেশি অস্ত্র উদ্ধারের অর্থ এই নয় যে সেখানে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। হয়তো অস্ত্রবাজেরা আগেভাগে অভিযানের কথা টের পেয়ে বিদেশি অস্ত্রগুলো সরিয়ে ফেলেছে।
দেশের নামকরা কলেজটিতে এ ধরনের ঘটনা কীভাবে ঘটল? এর পেছনে কাদের মদদ রয়েছে? গত ২৮ এপ্রিল গভীর রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়, অস্ত্র উদ্ধারের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে কি? সেদিনের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত ও চারটি ছাত্রাবাসের ১৮টি কক্ষ ভাঙচুর হয়।
বাবা-মা সন্তানকে কলেজে পাঠিয়েছেন পড়াশোনার জন্য, অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার জন্য নয়। কলেজে ছাত্রাবাসও করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পড়াশোনার সুবিধার জন্য। কিন্তু আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে সেখানে অস্ত্রের মহড়া চলবে কিংবা একে অপরের কক্ষ ভাঙচুর করবে, তা হতে পারে না। আর এ কাজটি করে থাকে ক্ষমতার আশ্রয়পুষ্ট ছাত্রসংগঠন।
আমরা ছাত্ররাজনীতির বিরোধী নই। কিন্তু তা হতে হবে ছাত্রদের কল্যণে। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থে তাঁরা ব্যবহূত হতে পারেন না। অস্ত্রবাজের কবল থেকে এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে হবে। অবিলম্বে ঢাকা কলেজে অস্ত্রের মহড়া বন্ধ হোক, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসুক। সে জন্য প্রয়োজন ছাত্র নামধারী অস্ত্রবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। প্রয়োজনে তাঁদের বহিষ্কার করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.