একজন এস এ জালাল ও মুক্তিযুদ্ধের তথ্যভাণ্ডার by সঞ্জীব রায়

সারা বিশ্ব এগিয়ে গেলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে তেমন কোনো কাজ হয়নি। এই সুযোগে স্বাধীনতার পরাজিত ঘাতক-দালাল চক্রের নব্য উত্তরসূরিরা ইন্টারনেটের ব্লগ-ফোরাম-সামাজিক সাইটগুলোতে তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে তরুণসমাজকে বিভ্রান্ত করছে। এই বিভ্রান্তি প্রতিরোধে সরকারি কোনো উদ্যোগ নেই বটে, কিন্তু থেমে থাকেনি আজকের তরুণসমাজ। যাঁরা হা-হুতাশ করে বলেন, 'আজকের তরুণদের দিয়ে কিছুই হচ্ছে না',
তাঁদের আশাবাদী হতে বলি আমরা। ব্লগসাইট 'সচলায়তন'-এর উদ্যোগে একদল তরুণ গত এক বছরের স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে ডিজিটাল আর্কাইভে স্থান করে দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সংবাদ কাটিংয়ের বিশাল এক সংগ্রহ। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ইউকিপিডিয়া এবং সচলায়তনের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা এস এ জালাল সংগৃহীত যুদ্ধসময়ের পত্রিকা, দলিল ও সংবাদভাষ্যের বিশাল ভাণ্ডার ডিজিটালাইজড করার কাহিনী শোনাচ্ছেন এই কর্মযজ্ঞের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম।
নতুন প্রজন্ম একটু অন্তর্জাল ঘেঁষা, তাই পরাজিত শক্তি সেখানেই ঘাঁটি গেড়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাস অন্তর্জালে ছড়িয়ে দিয়ে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। ফেইসবুক, টুইটার, ব্লগ_ সবখানে তারা সক্রিয়। কেউ সরাসরি, আবার কেউবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ছদ্মবেশে এই কাজ করে চলছে। তবে সবচেয়ে সুখের খবর এটাই, তাদের প্রতিহত করার লোকের অভাব হয়নি কোনোদিন। উল্টো ব্লগসাইটগুলোকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে নতুন একদল যোদ্ধা। যাঁরা সর্বদাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করে চলছেন। যেখানেই ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলছে সেখানেই প্রতিবাদ করছেন, সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ করছেন, পরস্পরের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করছেন, যুদ্ধাপরাধীদের আসল চেহারা তুলে ধরছেন, ইতিহাসের বিভিন্ন দিক নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে দিন-রাত পরিশ্রম করে চলছেন।
তেমনই একটি উদ্যোগ মুক্তিযোদ্ধা এস এ জালাল সংগৃহীত যুদ্ধসময়ের পত্রিকা, দলিল ও সংবাদভাষ্যের বিশাল ভাণ্ডারকে ডিজিটালাইজ করে সবার জন্য উন্মুক্ত করা।
এস এ জালাল সংগ্রহ
শেখ আহমেদ (এস এ) জালাল। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর; হত্যা, ধর্ষণ আর ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে থাকে, তিনি তখন জাপানে। সেখান থেকেই শুরু করেন অন্য রকম এক যুদ্ধ। পরিচিত জাপানিদের নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠন গড়ে তোলেন। মুক্তিযুদ্ধ ও শরণার্থীদের সাহায্যে অর্থ জোগাড় করেন। আর মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে এর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। জাপান তখনো পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। তাই খুব প্রকাশ্যে বাংলাদেশের পক্ষ হয়ে কাজ করার বিপদ ছিল, কিন্তু শেখ আহমেদ জালাল পিছপা হননি। তিনি তাঁর কাজ চালিয়ে গেছেন। আর এর পাশাপাশি তিনি করেছেন খুব প্রয়োজনীয় একটি কাজ। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদপত্রে যত লেখা ছাপা হয়েছে, তার যতটুকু সম্ভব তিনি সংগ্রহ করেছেন এবং সযত্নে সংরক্ষণ করেছেন। সংগৃহীত পত্রিকাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো_সানডে টাইমস, ডেইলি এঙ্প্রেস, ডেইলি মিরর, ডেইলি টেলিগ্রাফ, ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড, সানডে এঙ্প্রেস, ফাইনান্সিয়াল টাইমস, গার্ডিয়ান, ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন, নিউ স্টেটসম্যান, চায়না নিউজ, ম্যানিলা টাইমস, দ্য ট্রিবিউন, সায়গন পোস্ট, স্কটসম্যান, মর্নিং স্টার, কোরিয়া টাইমস, টেলিগ্রাফ অ্যান্ড আরগাস অব ব্র্যাডফোর্ড, ওয়ার্কার্স প্রেস, ডেইলি ইয়োমিউরি শিম্বুন, আশাহি শিম্বুন, মাইনিচি শিম্বুন, দ্য পাকিস্তান অবজারভার প্রভৃতি। এ ছাড়া বাংলা পত্রিকা আনন্দবাজার, পূর্বদেশ, দৈনিক পাকিস্তান, বাংলার বাণী, সাপ্তাহিক বঙ্গকণ্ঠ, সাপ্তাহিক বাংলার মুখ, ব্যবসা-বাণিজ্য, আবর্ত, সাপ্তাহিক ইত্তেহাদ, নতুন বাংলা, দেশবাংলা, হক-কথা, নিপীড়িত কণ্ঠ, চরমপত্র, ডাক দিয়ে যাই, জাগ্রত জনতা, ফ্রিডম জয়বাংলা। পাকিস্তানি সংবাদপত্র ডন। এ ছাড়া অন্য ভাষার পত্রিকা যেমন ফরাসি লা মোঁদ, লা কুরিয়ার, নেদারল্যান্ডস ও জেনেভার কিছু পত্রিকায় প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের প্রতিবেদন তিনি সংগ্রহ করেছেন।
পত্রপত্রিকা ছাড়াও মুজিবনগর সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্ত যাবতীয় কাগজপত্র ও চিঠি তিনি সংরক্ষণ করেছেন। যেসব ওয়ার বুলেটিন তিনি পেয়েছিলেন সেসবও যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করেছেন। সংগ্রহ করেছেন মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণের দিন পঠিত স্বাধীনতার ঘোষণার মূল প্রতিলিপি। মওলানা ভাসানী, কমরেড মণি সিংহ, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদদের নিয়ে গঠিত জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভার কার্যবিবরণী। শুধু মুক্তিযুদ্ধকালেরই নয়, সত্তরের ঘূর্ণিঝড় ও নির্বাচন-উত্তর পরিস্থিতি থেকে শুরু করে '৭৫ সাল পর্যন্ত অনেক তথ্যই তিনি সংরক্ষণ করেছেন। সাড়ে তিন হাজার পেপার ক্লিপিংসের এ এক অসামান্য সংগ্রহ! যার বেশ কিছুই অতি দুর্লভ।
শুধু সংগ্রহই নয়, অতি যত্নের সঙ্গে বিভিন্ন খণ্ডে বাঁধাই করে এসব তিনি সংরক্ষণ করেছেন। বাঁধাই করা খণ্ডগুলো বিভিন্ন আকারের। দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী আকার নির্ধারিত হয়েছে। বাংলাদেশের পতাকার লাল-সবুজ রং বাঁধাই খণ্ডের প্রচ্ছদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। তার ওপর সোনালি অক্ষরে সংগ্রাহকের নাম, খণ্ডের বিষয় ও ক্রমিক নম্বর দেওয়া। মোট ৩২টি বাঁধাই খণ্ডের মধ্যে চারটি খণ্ড (খণ্ড নং ২৩ এবং ২৯, ৩০ ও ৩১) মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বিভিন্ন বিষয়ে দলিলপত্রের, এগুলো মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সংগ্রহভুক্ত হয়নি। ৩০টিরও বেশি বড় বড় বাঁধাই করা পুস্তকে তিনি এসব পত্রিকাংশ সংরক্ষণ করেন। জানামতে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্য-দলিলপত্রের এটিই সর্ববৃহৎ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। যা মুক্তিযুদ্ধের অনন্য এক দলিল।
যুদ্ধের পর শুরু হয় তাঁর কূটনীতিক জীবন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসে কর্মরত অবস্থায়ও কখনোই এই বিশাল সংগ্রহ তিনি হাতছাড়া করেননি। যেখানেই গেছেন সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন। দীর্ঘ কর্মময় জীবন, চাকরিজীবনের জটিলতা, সবকিছুর মধ্যেও তিনি বয়ে বেড়িয়েছেন এই তথ্যভাণ্ডার। ইচ্ছে ছিল কর্মজীবন শেষে এসব তথ্য সম্বল করে তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই লিখবেন। ঔধঢ়ধহ'ং ঈড়হঃৎরনঁঃরড়হ রহ ঃযব ওহফবঢ়বহফবহপব ড়ভ ইধহমষধফবংয নামের শুধু একটি বই লিখে যেতে পেরেছেন। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল সংগৃহীত এই তথ্যভাণ্ডার তিনি তুলে দিয়ে যাবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের কাছে, যাতে আগামী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধসংক্রান্ত গবেষণায় এগুলো ব্যবহার করতে পারে। এস এ জালালের মৃত্যুর পর তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর পরিবার_স্ত্রী সেলিমা জালাল এবং কন্যা ও পুত্র সিলভিয়া জালাল ও ফয়সল জালাল এই তথ্যভাণ্ডার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে দান করেন। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে এগুলো নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। কিন্তু নিয়মিত এগুলো প্রদর্শনীর জন্য রাখা যাচ্ছিল না। এমনকি গবেষণার জন্য এই তথ্যভাণ্ডারটি উন্মুক্তও করা যাচ্ছিল না। কারণ চলি্লশ বছর আগের সংগৃহীত নিউজপ্রিন্ট, অনেক বেশি স্পর্শকাতর, নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই প্রবল। তাই সবার জন্য উন্মুক্ত করা যাচ্ছিল না।
ডিজিটাল-যজ্ঞের যেভাবে শুরু
অন্তর্জালভিত্তিক লেখকদের বড় এক মিলনমেলা 'সচলায়তন' নামের ব্লগসাইট। সেখানেই আমরা লেখালেখি করি। ২০০৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর সেখানে আমি 'ইতিহাস সংরক্ষণ প্রকল্প প্রস্তাব' করি। সেখান থেকেই শুরু হয়, কীভাবে আমরা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক তথ্যভাণ্ডারকে অন্তর্জাল জগতে সংরক্ষণ করতে পারি। পরবর্তী সময়ে রাগিব হাসান উইকিপিডিয়ায় ইতিহাস সংরক্ষণের প্রস্তাব করেন। প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো যাতে সবাই পড়তে পারে, সে জন্য সেগুলো স্ক্যান করা ও অন্তর্জালে সংরক্ষণ করা। কিন্তু এর জন্য লেখক আর প্রকাশকের অনুমতি প্রয়োজন। সেই সূত্রেই আমরা কয়েকজন মিলে যোগাযোগ করি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সঙ্গে। আর সেখান থেকেই জানতে পারি 'এস এ জালাল কালেকশন'-এর কথা। আমাদের আগ্রহ দেখে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি মফিদুল হক আমাদের দায়িত্ব দেন এই বিশাল তথ্যভাণ্ডারটি ডিজিটাল আর্কাইভ করার। সঙ্গে সঙ্গেই একটি স্বেচ্ছাসেবক দল হয়ে আমরা কাজ করতে শুরু করলাম।
বিস্ময়
সংগ্রহটি দেখে আমরা প্রথমে বিস্মিতই হয়েছিলাম। আজ থেকে চলি্লশ বছর আগে যোগাযোগ সুবিধা যখন পর্যাপ্ত ছিল না, এক দেশ থেকে আরেক দেশে পত্রিকা যেতে যখন অনেক সময় লাগত, অন্তর্জাল ছিল না, তখন জাপানে বসে তিনি এত এত সংবাদপত্র সংগ্রহ করেছেন! প্রয়োজনীয় পত্রিকাংশ কেটে সেগুলো বাঁধাই করে মোটা মোটা খণ্ডে এভাবে যুক্ত করেছেন! এরপর সেগুলো এত বছর ধরে এত যত্নে সংরক্ষণ করেছেন! মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনায় নিঃসন্দেহে এ এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
শুরু হলো ডিজিটাল-যজ্ঞ
চলি্লশ বছরে নিউজপ্রিন্টগুলোর অবস্থা বেশ নাজুক হয়ে গেছে, তার মধ্যে কাগজে আঠা দিয়ে আর স্টেপলার পিন দিয়ে যুক্ত করায় অনেক জায়গায় মরচে পড়ে গেছে। তা ছাড়া পত্রিকার কাটিংয়ের তো নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই, খবরের আকার অনুযায়ীই এর আকার। কোনোটা বড়, কোনোটা ছোট। ফলে এগুলোকে স্ক্যান করা সম্ভব ছিল না। সিদ্ধান্ত হলো ছবি তুলে ফেলা হবে। শুরু হলো কাজ। একদল আলোকচিত্র শিল্পী, যাঁরা মূলত শখে ফটোগ্রাফির চর্চা করেন, তাঁরা কাজ আর সময় ভাগ করে কাজ করতে শুরু করলেন। প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত আর পেশাগত জীবনে খুব ব্যস্ত। তবু বেশির ভাগ ছুটির দিনগুলোতে পরিবার আর সামাজিকতায় না কাটিয়ে সবাই মিলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে চলে যাওয়া, তারপর প্রায় সারা দিন ছবি তোলা। এভাবে চলল এক বছর।
এমনিতে হাজার চারেক ছবি তোলা খুব কঠিন কাজ নয়, কিন্তু এই ঐতিহাসিক ডকুমেন্টগুলো নাড়াচাড়ায় আমাদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হয়েছে, যেন এগুলো কোথাও ছিঁড়ে না যায় বা নষ্ট না হয়। অনেক পত্রিকাংশই বইয়ের ভাঁজে এমনভাবে আটকে আছে, যে ছবি তুললেও কিছু অংশ বাদ থেকে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করেছি এস এ জালাল কালেকশনের কোনো ক্ষতি না করে এগুলো যথাসম্ভব ডিজিটাল আর্কাইভ বানানো। একসময় ছবি তোলা শেষ হলো। তারপর শুরু হলো এই হাজার হাজার ছবি সম্পাদনার কাজ। যেহেতু ছবিগুলো অন্তর্জালে সংরক্ষণ করা হবে, সেহেতু প্রথম সতর্কতা ছিল ছবিগুলোর ফাইল সাইজ যাতে বেশি না হয়, আবার যেন প্রতিটি লেখাই স্পষ্টভাবে পড়া যায়। সেভাবেই ছবিগুলো সম্পাদনা করা হয়েছে।
আরো সতর্কতা
এ রকম একটি কাজ আমরা করছি, সচলায়তনে এই সংবাদ প্রকাশের পর পরই এই কাজে যুক্ত হতে অনেকে যোগাযোগ করেন। এত এত লোক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে চায়, ব্যাপারটা অবশ্যই খুব আনন্দের। কিন্তু দীর্ঘদিন অন্তর্জালে লেখালেখির সুবাদে আমরা খুব ভালো করে জানি যে এখানে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী পক্ষ খুব উদ্যোগী। যাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি সেজে থাকে। এ রকম কাউকে আমরা এই দলে রাখতে আগ্রহী ছিলাম না। তাতে এই কাজটির ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি থাকে। তাই পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে বা দীর্ঘদিনের চেনা না হলে কাউকে এই দলে নেওয়া হয়নি। এতে হয়তো সত্যিকার অর্থেই ভালোবেসে কাজটি করতে চান এ রকম অনেকেই বাদ পড়ে গেছেন, কিন্তু এ ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
শেষ কথা
মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সবচেয়ে অহংকারের বিষয়, গর্বের বিষয়। এর ইতিহাস নিয়ে কোথাও কোনো বিভ্রান্তি না থাকুক। আমাদের পূর্বপুরুষরা এ দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন, কিন্তু তবু এখনো আমাদের লড়াই করতে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির সঙ্গে। আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন শত্রুমুক্ত থাকে, সঠিক ইতিহাস জানে। আমরা চাই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সব তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে, সবার জন্য সুলভ থাকবে। যে কেউ যেকোনো তথ্যের প্রয়োজনে যেন অন্তর্জালে একটু খুঁজলেই পেয়ে যান। সেই লক্ষ্যেই আমাদের এই চেষ্টা। যাঁরাই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করতে চান, দেশকে ভালোবাসেন, সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে একটু একটু করে শ্রম দিলে অনেক বড় কিছুই আমরা করতে পারব। এস এ জালাল যে বিশাল তথ্যভাণ্ডার রেখে গেছেন, তা নানাভাবে ব্যবহার করে গবেষক ও ঐতিহাসিকরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে আরো সমৃদ্ধি জোগাবেন, এস এ জালাল যে কাজ শেষ করে যেতে পারেননি, আমরা সবাই মিলে সেই কাজ শেষ করব। লিপিবদ্ধ করব মুক্তিযুদ্ধের সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস।
=================================
গল্প- স্বপ্নের মধ্যে কারাগারে  গল্পিতিহাস- কাঁথা সিলাই হইসে, নিশ্চিন্ত  ‘এখন প্রাধান্য পাচ্ছে রম্যলেখা'  অকথিত যোদ্ধা  কানকুনের জলবায়ু সম্মেলন, বাংলাদেশের মমতাজ বেগম এবং আমার কিছু কথা  নাপাম বোমা যা পারেনি, চ্যালেঞ্জার ও আব্রাম্‌স্‌ ট্যাংক কি তা পারবে?  ঠাকুর ঘরে কে রে...!  ষড়যন্ত্র নয়, ক্ষুধা ও বঞ্চনাই আন্দোলনের ইন্ধন  বাহাত্তরের সংবিধানের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বাধা কোথায়?  ড.ইউনূসের দুঃখবোধ এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা  গীতাঞ্জলি ও চার্লস এন্ড্রুজ  গল্প- তেঁতুল  একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের পুস্তক প্রকাশনা  গল্প- বট মানে গরুর ভুঁড়ি  গল্প- কিশলয়ের জন্মমৃত্যু  গল্প- মাকড়সা  দুর্নীতি প্রতিরোধে আশার আলো  জাগো যুববন্ধুরা, মুক্তির সংগ্রামে  ঢাকা নগর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন প্রয়োজন  মারিও বার্গাস য়োসার নোবেল ভাষণ- পঠন ও কাহিনীর নান্দীপাঠ  লন্ডন পুলিশ জলকামানও নিল না  রাষ্ট্রের চ্যালেঞ্জ ও যুদ্ধাপরাধী বিচারের দায়বদ্ধতা  পোশাক শিল্পে অস্থিরতার উৎস-সন্ধান সূত্র  বাতাসের শব্দ  গোলাপি গল্প  বজ্র অটুঁনি অথবাঃ  উদ্ভট উটের পিঠে আইভরি কোস্ট  আনল বয়ে কোন বারতা!  ফেলানীর মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গ- নিজ ভূমেই প্রশ্নবিদ্ধ ভারতের মানবিক চেহারা  বাজার চলে কার নিয়ন্ত্রণে  উঠতি বয়সের সংকট : অভিভাবকের দায়িত্ব  বিকল্প ভাবনা বিকল্প সংস্কৃতি  অন্ধত্ব ও আরোগ্য পরম্পরা  খুলে যাক সম্ভাবনার দুয়ার  কক্সবাজার সাফারি পার্কঃ প্রাণীর প্রাচুর্য আছে, নেই অর্থ, দক্ষতা  জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের গুপ্ত জীবন  ছাব্বিশটি মৃতদেহ ও একটি গ্রেপ্তার  ৩৯ বছর পরও আমরা স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি  সাইবারযুদ্ধের দামামা  সরলতার খোঁজে  সেই আমি এই আমি  আমেরিকান অর্থনীতি ডলারের চ্যালেঞ্জ


দৈনিক কালের কন্ঠ এর সৌজন্যে
লেখকঃ সঞ্জীব রায়


এই ইতিহাস'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.