টুকুপুত্রের দখল থেকে মৎস্য খামার উদ্ধার

আশিফ সামস রঞ্জন। জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামছুল হক টুকুর ছেলে। পাবনা-১ আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য টুকু। পিতার একচ্ছত্র আধিপত্য বদৌলতে ছেলের ক্ষমতার সদম্ভ দোর্দাণ্ড প্রতাপ ছিল সর্বত্র। গড়ে তুলেছিলেন পৌষ্য ও পেশিশক্তি বাহিনী। কর্তৃত্ববাদী শাসনে সাঁথিয়া সরকারি মৎস্য উৎপাদন খামারটি রাতারাতি দখল করে গরুর খামারে পরিণত করেন তিনি। প্রশাসনের নাকের ডগায় দখল হয়ে যায় সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি। যেন ক্ষমতাসীনদের পায়ের কাছে বসে থাকার মতো প্রশাসন। ৫ই আগস্ট বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালানোর পর সাধারণ জনতা খামারে হামলা করে। উদ্ধার হয় সরকারি সম্পত্তি। লুট করে নিয়ে যায় গরু, হাঁস-মুরগি।

জানা যায় ৯০ দশকের দিকে তৎকালীন সরকার মৎস্য অভয়রণ্য হিসেবে খ্যাত পাবনার সাঁথিয়া ইছামতি নদীর পাড়ঘেঁষে মাধপুর-সাঁথিয়া সড়ক সংলগ্ন চক নন্দনপুর এলাকায় প্রায় সাত একর জমির ওপর নয়টি পুকুর খনন করে। এ পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন হতো। মৎস্যচাষিরা স্বল্পমূল্যে মাছের পোনা নিয়ে মাছচাষে সাবলম্বী হয়েছেন। বেড়া পৌরসভার মেয়র ও বেড়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আসিফ সামস রঞ্জন রাতারাতি সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি দখল করে গরুর খামার গড়ে  তোলেন। রঞ্জনের মদদে তার পৌষ্য ও পেশিশক্তি বাহিনী খামারের অন্তরালে এখান থেকে এলাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ হতো। মাদকের আঁতুরঘর হিসেবে ছিল পরিচিত। চালাতেন শালিসের নামে প্রহসন। স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী মতের লোকদের নামে নাশকতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলার পরিকল্পনা হতো এ খামার থেকে। পুলিশ ছিল অসহায়। প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বিশাল এলাকাটি সাধারণের জন্য ছিল নিষেধাজ্ঞা এলাকা। তার নিজস্ব লোক ছাড়া কেউ ঢুকতে পারতেন না সেখানে। রঞ্জনের কথাই ছিল শেষ কথা। চালকের আসনে বসে তিনি এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন সাঁথিয়া-বেড়া। মানুষকে গোলামের মতো শাসন করেছেন। সাঁথিয়ার দশটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ন্ত্রণ হতো এখান থেকে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.