সাকিবকে বাদ দেয়া প্রসঙ্গে শান্তর ‘মুচকি হাসি’

ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ২৮০ রানে হার। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১৪৯ রানে। আর ৫১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে সবক’টি উইকেট হারায় ২৩৪ রানে। দুই ইনিংসে দলের কেউ সেঞ্চুরিও করতে পারেনি। ম্যাচের ফল পরিষ্কার কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে টাইগার ব্যাটারদের। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আরও একবার আলোচনায় সাকিব আল হাসান। পাকিস্তান সিরিজে দল তার কাছে বল হাতে সার্ভিস পেয়েছে। কিন্তু এবার বোলিংয়ের সঙ্গে ব্যাটটাও নড়বড়ে। পুরনো ইনজুরির কারণে হাতে আঙ্গুল ফুলে উঠেছে। যার প্রভাব তার বোলিং ও ব্যাটিং দুটিতেই ছিল। এক কথায় অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি ব্যর্থ। তাই দ্বিতীয় ম্যাচে তাকে একাদশে রাখা হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘খুব সাহসী প্রশ্ন, মাশাআল্লাহ। অধিনায়ক হিসেবে যেটা দেখি, শুধু সাকিব ভাই বলে বলছি না। আমি দেখি যে একজন খেলোয়াড় কতোটুকু কষ্ট করছে এবং কামব্যাক করার জন্য যা যা দরকার, সে কাজগুলো করছে কিনা, দলের প্রতি ইন্টেনশনটা কী রকম। এই জিনিসগুলো আমি মূলত খেয়াল রাখি। চেষ্টা করি, ওই ক্রিকেটার দলকে দেয়ার জন্য কতোটুকু প্রস্তুত, শতভাগ কিনা। আমি সবার ক্ষেত্রেই বিষয়টা এভাবেই দেখি। সেটা হোক নাহিদ রানা কিংবা মুশফিক ভাই।’  দলে যে শুধু সাকিবের পারফরম্যান্স খারাপ সেটিও নয়। বাকি ব্যাটারাও যে দারুণ কিছু করেছে এমন নয়। যেহেতু ক্রিকেট দলীয় খেলা তাই অধিনায়ক শান্ত সাকিবকে একক ভাবে দায়ী করতেও রাজি নয়। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো নির্দিষ্ট কারও পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। কারণ খেলাটা দলীয় খেলা। পুরা দলের অবদানেই কিন্তু একটা ম্যাচ জেতা সম্ভব। সবমিলিয়ে আমরা সবাই মিলে যদি অবদান রাখতাম, ভালো কিছু হতো। তো আলাদা করতে ব্যক্তিগত কাউকে নিয়ে আমি চিন্তিত নই।’ এ ছাড়াও এই ম্যাচের সাকিবের কম বল করা নিয়েও বিতর্ক কম নয়। তবে অধিনায়ক ম্যাচ শেষে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম ইনিংসে সাকিব ভাইকে প্রয়োজনই পড়েনি। বিশেষ করে তিন পেস বোলার যেভাবে বল করছিল। মিরাজও ভালো বল করছিল। ফাস্ট বোলারদের দীর্ঘ সময় রাখার সিদ্ধান্তটা ছিল আমার। তাতে কিন্তু দ্রুত ৬ উইকেট নিতে পেরেছি।’

অন্যদিকে গতকাল ম্যাচের চতুর্থ দিন সকালে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় জসপ্রীত বুমরার একটি ডেলিভারি লাগে সাকিবের হাতে। তাতে আঙ্গুলের ইনজুরি নিয়ে নতুন শঙ্কাও জাগে। পরে এর ব্যাখ্যায় শান্ত বলেছেন, ‘আঙ্গুলের যে ব্যাপারটা, বল লেগেছিল, ওখানে ব্লিডিংও হয়েছিল। যে কারণে টেপ প্যাঁচানো।’

হার থেকে কঠিন শিক্ষা
চেন্নাই টেস্টে বাংলাদেশের সামনে ছিল ৫১৫ রানের প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য। প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের ব্যাটিং ব্যর্থতাই নির্ধারণ করে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। দ্বিতীয় ইনিংসে দেখার ছিল প্রতিরোধ স্থায়ী হয় কতোক্ষণ। তৃতীয় দিন ব্যাট হাতে দুই ওপেনারে শুরুটা খারাপও ছিল না। কিন্তু সাদমান, জাকির ফিরতেই ধীরে ধীরে প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে পড়ে। আগের দিনই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ চতুর্থ দিন সকালে ঘণ্টাখানেকের মতো প্রতিরোধ গড়েছিল সাকিব-শান্তর দৃঢ়তায়। এই জুটি ভাঙতেই বাকি এক ঘণ্টায় লাঞ্চের আগে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। ৬২.১ ওভারে জাদেজার বলে হাসান মাহমুদ বোল্ড হতেই ২৩৪ রানে অলআউট হয়েছে তারা। তাতে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ২৮০ রানের ব্যবধানে। ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে শান্ত শুধু লড়াই করার চেষ্টা করেছেন। সর্বোচ্চ ৮২ রান করেছেন তিনি। এমন হারকে শিক্ষা হিসেবে দেখছেন অধিনায়ক শান্ত। তবে এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান কানপুর টেস্টে। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা পেয়েছি আমরা। বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে টপ অর্ডারের ব্যাটিংয়ের দিকে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের টপ অর্ডার থেকে কিছু রান করতে হবে। এখানে একটি শিক্ষার কথা আপনাকে বলতে পারি। সব ব্যাটারের মাঝে বিশ্বাস রয়েছে তারা সামনে কামব্যাক করতে পারবে।’

mzamin

No comments

Powered by Blogger.